‘বিমানের ত্রুটির পেছনে গাফিলতির প্রমাণ মিলেছে’

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বহনকারী বিমানের ত্রুটির পেছনে গাফিলতির প্রমাণ মিলেছে। এটি মনুষ্যসৃষ্ট। তবে তা ইচ্ছাকৃত কি না তা এখনো স্পষ্ট না। পুরো প্রতিবেদন পড়ে জানা যাবে।

রোববার বিকাল সোয়া ৩টায় বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটনমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন নিজ কার্যালয়ে মন্ত্রণালয়ের তদন্ত প্রতিবেদন উপস্থাপনকালে এ কথা বলেন।

মন্ত্রী বলেন,‘কমিটি ৪৮ পাতার প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। আমরা সকালে এটি হাতে পেয়েছি।

তিনি বলেন, ‘এই ঘটনায় এরই মধ্যে ৯ জনকে সাময়িক বহিস্কার করা হয়েছে। তদন্তে আরো নাম আসতে পারে। দোষীদের বিরুদ্ধে অবশ্যই আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

‘এক্ষেত্রে দোষীদের বিরুদ্ধে নাশকতার বা রাষ্ট্রদ্রোহী মামলা হয় কি না তা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে আলাপ করে ঠিক করা হবে। তার আগে তিনটি প্রতিবেদন সমন্বয় করে প্রধানমন্ত্রীর হাতে তুলে দেওয়া হবে।’

রাশেদ খান মেনন বলেন, ওই তিনটি তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে প্রমাণিত হয়েছে বিমানটির অয়েল প্রেশারে সমস্যা ছিল এবং এর নাট-বল্টু ঢিলে অবস্থায় ছিল। এ সমস্যাকে মনুষ্যসৃষ্ট উল্লেখ করে বিষয়টি নাশকতা ছিল কি না তা তদন্তে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহায়তা নেওয়া হবে।

তিনি বলেন, ‘এ ঘটনায় কর্মকর্তাদের গাফিলতি ছিল। তবে নাশকতার উদ্দেশ্যে গাফিলতি ছিল কিনা তা তদন্তের জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহায়তা নেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে প্রতিবেদনে।’

মেনন বলেন, ‘তিনটি কমিটি একই ধরনের প্রতিবেদন দিয়েছে। প্রতিবেদনগুলোতে বলা হয়েছে, এ দুর্ঘটনা মনুষ্যসৃষ্ট ছিল।’

মন্ত্রী বলেন, মন্ত্রণালয়ের তদন্ত প্রতিবেদনে মোট ২৪টি সুপারিশ করা হয়েছে। এর মধ্যে নিরাপত্তা সুপারিশ ৭টি, ভিভিআইপি ফ্লাইটের নিরাপত্তা বাড়ানোর সুপারিশ ৪টি, বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক) সংক্রান্ত সুপারিশ ৩টি এবং বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের জন্য ১০টি সুপারিশ করা হয়েছে।

সব কমিটির সুপারিশে বিমানের সব কার্যক্রম নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ জরুরি, স্ট্যান্ডার্ড অপারেশন প্রসিডিওর (এসওপি) আরো ‍যুগোপযোগী করা, ভিআইপি বিমানের নিরাপত্তা জোরদার করতে বলা হয়েছে বলেও উল্লেখ করেন রাশেদ খান মেনন।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে বিমানমন্ত্রী বলেন, ‘প্রয়োজনে মামলা করা হবে। যেহেতু শেখ হাসিনা কেবলই বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী নন, তিনি একইসঙ্গে বঙ্গবন্ধু পরিবারেরও সদস্য। তাই বিষয়টিকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে। তবে মামলা কবে করা হবে তা আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’

মেনন বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীকে বহনকারী বিমানের যান্ত্রিক ত্রুটির বিষয়টি সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করা হচ্ছে। এখানে অন্য কোনো ইস্যু কাজ করবে না।’

তবে কার কার নামে মামলা করা হবে সে বিষয়ে তিনি তাৎক্ষণিকভাবে মন্তব্য না করে বিষয়টি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে পরামর্শ করে করা হবে বলে জানিয়েছেন।

এ ঘটনায় মন্ত্রী হিসেবে আপনার দায় আছে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘এ ঘটনায় আমার নৈতিক দায় আছে। তবে অন্য কোনো দায় আছে কি না তা আপনারা বিবেচনা করবেন।’

আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘বিমানের পরিচালনা বোর্ড পরিবর্তনের এখতিয়ার বিমান মন্ত্রণালয়ের নেই।’

এর আগে সকাল সাড়ে ১০টায় এই তদন্ত প্রতিবেদন রাশেদ খান মেননের কাছে জমা দেন কমিটির সদস্যরা।



মন্তব্য চালু নেই