বিএনপিকে নোমানের ‘আল্টিমেটাম’

বিএনপির সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম স্থায়ী কমিটির সদস্যপদ না পাওয়ায় মন ভালো নেই দলটির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমানের। বঞ্চনার কারনে নাখোশ চট্টগ্রাম বিএনপির জ্যেষ্ঠ এই নেতার অনুসারীরাও। নোমানকে পদ্ত্যাগের চাপ দিচ্ছেন তারা। দল ছাড়ার চিন্তা করছেন তিনি নিজেও। তবে তার আগে দলকে এক সপ্তাহ সময় দিতে চান তিনি।

রোববার রাতে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে নোমান বলেন, ‘দলের সর্বোচ্চ ফোরামে ঠাঁই না পাওয়ায় আমার অনুসারীরা অনেক কষ্ট পেয়েছেন। আমিও অপমানিতবোধ করছি। এ অবস্থায় দলের সঙ্গে থাকা কঠিন হয়ে গেছে।’

চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির আরেক প্রভাবশালী নেতা আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী স্থায়ী কমিটির সদস্য পদ পাওয়ায় নোমান অনুসারীরা আরও বেশি হতাশ। কারণ উজ্জীবিত খসরু সমর্থকদের কাছে এখন তারা পাত্তাই পাচ্ছেন না। বিএনপির জন্য খসরুর চেয়ে নোমানের অবদান বেশি বলে মনে করেন তারা।

এ প্রসঙ্গে চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির প্রবীণ নেতা এম এ সবুর বলেন, ‘যে লোকটি সারা জীবন বিএনপির জন্য নিজেকে বিলিয়ে দিয়েছেন, দল আজ তাকে মূল্যায়ন করছে না। এর চেয়ে দুর্ভাগ্য আর কী হতে পারে? আমি নোমান ভাইকে বলেছি, আপনি দল ছাড়েন।’ তিনি আরো বলেন, ‘নোমান ভাইকে দল যদি মর্যাদা না দেয়, তাহলে আমরা গণহারে বিএনপি ছাড়বো। এটাই আমাদের চূড়ান্ত কথা।’

সামনে মহানগর বিএনপির পূর্ণাঙ্গ কমিটির কোনো দায়িত্বে থাকবেন না জানিয়ে খুলশী থানা বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট আবদুস সাত্তার বলেন, ‘যে দলে নোমান ভাইয়ের মতো একজন বিজ্ঞ নেতার মূল্যায়ন হয় না, সেখানে থেকে আমাদের লাভ কী?’

একই ইঙ্গিত দিয়ে মহানগর ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আহমেদুল আলম চৌধুরী রাসেল বলেন, ‘নোমান ভাই এ বয়সেও দলের সাংগঠনিক কর্মকান্ডে যেভাবে সক্রিয় আছেন, আর কোনো বর্ষীয়ান নেতা এভাবে সক্রিয় নেই। তবুও তিনি স্বীকৃতি পাচ্ছেন না। এর হতে থাকলে নোমান ভাইয়ের সঙ্গে আমরাও নিরবে দল থেকে সরে যাবো।’

সরে যেতে পারেন সুফিয়ানও

চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সভাপতি আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী স্থায়ী কমিটির সদস্য হয়ে যাওয়ায় ডা. শাহাদাত হোসেনের নেতৃত্বে গঠন করা হয়েছে তিন সদস্যের চট্টগ্রাম মহানগরের নতুন কমিটি। গত শনিবার কেন্দ্রীয় কমিটি ঘোষণার পাশাপাশি এ কমিটি ঘোষণা করা হয়। এতেও প্রাধান্য বিস্তার করে আছেন খসরু সমর্থকরা। আর নিজেদের বঞ্চিত মনে করছেন নোমান অনুসারীরা।

আগের কমিটির সাধারণ সম্পাদক ডা. শাহাদাত হোসেনকে সভাপতি ও আবুল হাশেম বক্করকে সাধারণ সম্পাদক করা হয়েছে। কমিটির সহসভাপতি পদে বহাল রাখা হয়েছে আবু সুফিয়ানকে।

কিন্তু রাজনৈতিকভাবে কনিষ্ঠ শাহাদাতকে সভাপতি করার পর সুফিয়ান বেশ হতাশ হয়ে পড়েছেন। তার অনুসারী নেতাকর্মীরা তাকেও দল থেকে পদত্যাগ করার জন্য চাপ দিচ্ছেন। এ অবস্থায় তিনিও এ ধরনের সিদ্ধান্ত নিতে পারেন বলে ঘনিষ্ঠ সূত্র নিশ্চিত করেছে।

ক্ষুদ্ধ সুফিয়ান নিজের মুঠোফোন বন্ধ করে রেখেছেন। তার ঘনিষ্ঠ অনুসারী চাঁন্দগাও থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন লিপু জানান, ‘সুফিয়ান ভাইকে মূল্যায়ন করা না হলে, তিনি পদতো বটেই, দলও ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।’খবর ঢাকাটাইমসের।



মন্তব্য চালু নেই