বিএনপিই সত্যিকার রাজাকারের দল : জয়

বিএনপিকে সত্যিকারের রাজাকারের দল বলে অভিহিত করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলে ও তার তথ্য-প্রযুক্তি উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়। বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান রাজাকারদের দেশে ফিরিয়ে এনেছেন এ কারণে তাকে মুক্তিযোদ্ধা বলা যায় না বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

শুক্রবার সন্ধ্যায় রাজধানীর রেডিসন হোটেলে ‘মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, গণতন্ত্র, উন্নয়ন ও সুশাসন’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় তিনি বলেন, ‘বিএনপিই হচ্ছে সত্যিকারের রাজাকারের দল। বিএনপি যদি প্রমাণ করতে চায় তারা রাজাকারের দল নয়, তাহলে জামায়াতের সঙ্গে জোট ভেঙে আসুক।’

তিনি বলেন, ‘বিএনপি একটি বিষয় অস্বীকার করতে পারবে না- সেটা হলো এ দেশে কারা রাজাকারদের ফিরিয়ে এনেছে। জিয়াউর রহমান রাজাকারদের বাংলাদেশে ফিরিয়ে এনেছে। এটা তারা অস্বীকার করতে পারবে না।’

‘পাকিস্তানপন্থিদের জন্য যুদ্ধপরাধীদের বিচার করতে দেরি হয়েছে’ উল্লেখ করে জয় বলেন, ‘পাকিস্তানপন্থিদের জন্য ৪৩ বছর লেগেছে যুদ্ধপরাধীদের বিচার করতে। পঁচাত্তরের পর থেকে তাদের ষড়যন্ত্রের কারণে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারকাজে দেরি হয়েছে। পঁচাত্তরের পর দেশবিরোধী অপশক্তি ক্ষমতায় এসে দেশের প্রকৃত ইতিহাস বিকৃত করেছে। তারা পাগল না। তারা একটি বিশেষ উদ্দেশ্য নিয়ে ইতিহাস বিকৃত করছে। তাদের সর্ম্পকে আমাদের সচেতন হতে হবে। দেশবিরোধী অপশক্তিরা পাঠ্য বইয়েও মিথ্যা ইতিহাস দিয়েছে। যাতে মানুষ সত্য ইতিহাস ভুলে যায়।’

জয় বলেন, ‘২০ বছর আগে এ দেশের মানুষ স্বাধীনতার কথা বলতে ভয় পেত। কিন্তু আজকে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় এসে দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছে। তাই এখন সবাই স্বাধীনতার কথা বলি।’

প্রধানমন্ত্রীর তথ্য-প্রযুক্তি উপদেষ্টা জয় বলেন, ‘এখন আমাদের কোনো দেশকে ভয় পাওয়ার প্রয়োজন নেই। অন্যান্য দেশ কী বলে, না বলে তাতে আমাদের কিচ্ছু যায় আসে না। আমরা স্বাধীন দেশ। আমরা আমাদের মতো চলবো। ইতিহাসে অনেক কালো দিন গিয়েছে, অনেক ষড়যন্ত্র হয়েছে। অনেক ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করে আমরা এতদূর এসেছি। একাত্তর সালে বিশ্বের মহান একটি দেশ পাকিস্তানকে অস্ত্র দিয়ে বোমা দিয়ে আমাদের স্বাধীনতা ঠেকাতে চেয়েছিল।’

জয় বলেন, ‘সাঈদীকে যখন আদালত আমৃত্যু কারাদণ্ড দেয় তখন অনেকেই বলেন জামায়াতকে বাচাঁতে এই ধরনের রায়। তাদের উদ্দেশে বলতে চাই, জামায়াতকে যদি বাচাঁতেই হয় তবে জন কেরি, বান কি মুনের ফোন অমান্য করে কী আমরা কাদের মোল্লাকে ফাঁসি দিতাম? সুশাসন প্রতিষ্ঠায় প্রয়োজন একটি আদালত। আদালতের রায়ের বিষয়ে সরকার কী করতে পারে? আমরা বলতে পারি, আদালতের ভুল হয়েছে?

তিনি বলেন, ‘পঁচাত্তরের পর কারা ক্ষমতায় এসেছে, ক্ষমতা দখল করেছে আর কারা সত্তুর সালে পাকিস্তানের দলকে ভোট দিয়েছে। একশ্রেণীর লোক ছিল, যারা পাকিস্তানের সঙ্গে ব্যবসা করতো, তাই তারা বাংলাদেশের স্বাধীনতা চায়নি। বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পরও তারা পাকিস্তানের সঙ্গে ব্যবসা-বাণিজ্য করতে চেয়েছিল। আরেক শ্রেণী আছে যারা ক্ষমতার লোভে কাজ করেছে। পঁচাত্তরের পর সুবিধাবাদীরা ক্ষমতা দখল করেছিল। স্বৈরাচারের সৃষ্টি করা বিএনপিতে এই সুবিধাবাদীরা যোগ দেয় ব্যবসা-বাণিজ্য করার জন্য।’

তিনি আরো বলেন, ‘যারা সৎ, ভালো কাজ করতে চায়, তারা জোর গলায় সত্যকে তুলে ধরতে লজ্জা পায়। ছোটবেলা থেকেই আমাদের শেখানো হয় মুরুব্বীদের সঙ্গে তর্ক করবা না, তাই আমরা মিথ্যার প্রতিবাদ করতে লজ্জা পাই। যারা স্বাধীনতায় বিশ্বাস করি, তাদের এই মিথ্যাচারের প্রতিবাদ করতে হবে, লাজুক হলে চলবে না।’

সভায় সূচনা বক্তব্য দেন সুচিন্তা ফাউন্ডেশনের আহ্বায়ক মোহাম্মদ এ আরাফাত। সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন- বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ কাজী খলীকুজ্জামান আহমেদ, চিত্রশিল্পী হাসেম খান, ব্যারিষ্টার তুরিন আফরোজ প্রমুখ।



মন্তব্য চালু নেই