বিআরটিএ দালালমুক্ত হবে কবে, প্রশ্ন মন্ত্রীর

পরিবহন সেক্টরের নৈরাজ্য বন্ধে কোনো পদক্ষেপ কাজে আসছে না বলে জানালেন খোদ সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। রাস্তায় মোবাইল কোর্ট বসছে, আমি নিজেও সেখানে যাচ্ছি, কিন্তু কাজের কাজ হচ্ছে না। ফিটনেস ছাড়া গাড়ি রাস্তায় চলছে। ফলে গণপরিবহন সেক্টরে শৃঙ্খলা ফিরছে না।

শুক্রবার রাজধানীর বিয়াম মিলনায়তনে বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটির কার্যক্রমের অগ্রগতি পর্যালোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সংস্থার চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম।

ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘লেগুনা কেটে পণ্য পরিবহনে পিক-আপ গাড়ি তৈরি করা হচ্ছে। এসব গাড়ি চলাচলের ওপর বিধি-নিষেধ আরোপ করা হলো, পরে বন্ধ হলো ওই গাড়ি চলাচল। ক’দিন পর ফের এসব গাড়ি তৈরি করে রাস্তায় নামানো হলো।’

বিআরটিএ কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্য করে সড়ক পরিবহনমন্ত্রী বলেন, ‘ফলোআপ হচ্ছে না কেন? সমস্যাটা কোথায়?’

বক্তব্যে ক্ষোভ প্রকাশ করে মন্ত্রী প্রশ্ন রাখেন, ‘বিআরটিএ দালালমুক্ত হবে কবে? বলেন, এ নৈরাজ্যের অবসান হবে না? বিআরটিএ’র কর্মকর্তাদের সহযোগিতা না থাকলে দালালরা সুযোগ নিচ্ছে কি করে?’

তিনি বলেন, ‘সম্প্রতি মিরপুর বিআরটিএ’র কার্যালয় পরিদর্শনের সময় সেবা গ্রহীতারা সরাসরি আমার কাছে ১৫টি অভিযোগ করেছেন। বলেছেন, সেবা পেতে তাদের ১ থেকে দেড় বছর হয়রানির শিকার হতে হয়েছে।

তবে দালালদের দৌরাত্ম আগের চেয়ে অনেকটা কমেছে জানিয়ে ওবায়দুল কাদের জানান, ‘ভালো কর্মকর্তাদের সহায়তায় ওই প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম ৬০ শতাংশ নিয়ন্ত্রণে এসেছে। এখনও ৪০ শতাংশ নিয়ন্ত্রণের বাইরে রয়েছে। অনৈতিক কাজ থেকে বিরত থাকতে সংস্থার কর্মকর্তা-কর্মচারীদের প্রতি আহবান জানান সড়ক পরিবহনমন্ত্রী।

ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আইন মানছেন না পরিবহন মালিকরা। ঈদে রং করে লক্কড়ঝক্কড় গাড়ি নামানো হচ্ছে রাস্তায়। ঘরমুখো যাত্রীদের জিম্মি করে বেশি ভাড়া আদায় হয়। এ অবস্থা চলতে পারে না, চলতে দেয়া যায় না।’

রাজধানীতে মিটারে চালিত সিএনজি’র ভাড়ায় আগের মতো অরাজকতা শুরু হয়েছে জানিয়ে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘মোবাইল কোর্টকে এ ব্যাপারে কঠোর হতে হবে।’

পরিবহন খাতে শৃঙ্খলা নিশ্চিতে সড়ক পরিবহন আইন হচ্ছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘অনিয়মে আর কোনো ছাড় নয়।’

ইতোমধ্যে প্রস্তাবিত আইনের খসড়া মন্ত্রিসভায় অনুমোদনের কথা জানান তিনি। বলেন, ‘সংসদে পাস হওয়ার পর প্রয়োগ শুরু হলে সড়কে শৃঙ্খলা ফিরবে। পরিবহন সেক্টরে মুর্তিমান আতঙ্কের নাম ব্যাটারি চালিত গাড়ি। মহাসড়কে ব্যাটারি চালিত গাড়ি, নছিমন, করিমনসহ বিভিন্ন অযান্ত্রিক পরিবহনের রাজত্ব চলছে। এসব যানবাহন চলাচল বন্ধে সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসনকে বলা হয়েছে। কিন্তু বন্ধ হচ্ছে না।’

দেশের সব সহাসড়ক দুই লেন থেকে চার লেনে উন্নীত করা হচ্ছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘তাতেও মহাসড়কে যানজট কমছে না।

সাম্প্রতিক তথ্য উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘নবীনগর-চন্দ্রা পর্যন্ত ফোর লেন সড়কের দু’পাশ দখল করে নিয়েছে স্থানীয়রা। তাহলে ফোর লেন রাস্তা করে কি লাভ হলো? জনগণ এর সুফল পেল না, আমিইবা পরিদর্শন করে কি করবো? একদিকে আমি অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান চালাচ্ছি, কিছুক্ষণ পর তা আবারও বেদখল হয়ে যাচ্ছে। এতে যানজট দূর হবে না।’



মন্তব্য চালু নেই