বায়োমেট্রিক রেজিস্ট্রেশনেও বন্ধ হয়নি ‘জীনের বাদশার’ কল

১৩ জুন রাত ১০ টা ৩৯ মিনিট। সোহাগ হাসান নামে এক শিক্ষার্থীর কাছে ফোন আসে। ফোনের অপরপ্রান্ত থেকে বলা হয়, ‘আমি জীনের বাদশা।’ এরপর লম্বা একটি সালাম। তবে সোহাগ একটু মোটা গলায় কথা বলে বোঝানোর চেষ্টা করেন যে তিনি এধরনের প্রতারণার বিষয়ে অবগত। তাই কিছুক্ষণ পরই ফোন কেটে দেন জীনের বাদশা।

সোহাগ একটু যুগোপযোগী হওয়ায় তাকে ফাঁদে ফেলতে পারেনি প্রতারক ‘জীনের বাদশাহ’। কিন্তু ঈদকে সামনে রেখে চাঁদাবাজির পুরনো কৌশলকেই বেছে নিয়েছে প্রতারক চক্রটি। জাতীয় পরিচয় পত্রের ফটোকপি (এনআইডি) সংযুক্ত বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে সিম রেজিস্ট্রেশনের পরও কীভাবে এমন কল করার সাহস পায় অপরাধীরা? এই প্রশ্ন রেখে সোহাগ ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) ফেসবুক পেইজে একটি পোস্ট দেন। খবর : জাগো নিউজ

বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে সরকারের সিম রেজিস্ট্রেশনের অন্যতম উদ্দেশ্য ছিল অপরাধ নিয়ন্ত্রণ। তবে এরপরও বন্ধ হয়নি জীনের বাদশাহর মতো ‘চাঁদাবাজ’দের তাণ্ডব।

আব্দুর রহমান নামে এক অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তা জানান, সম্প্রতি ভোর ৫ টা ৫৪ মিনিটে আমার মোবাইলে জীনের বাদশাহর একটি ফোন আসে। সুস্থ ও সুন্দর জীবন জাপনের জন্য বাবার দরবারের ( ওই নম্বরে) ৪ হাজার ৩১ টাকা বিকাশ করতে বলা হয়। টাকা না দিলে অমঙ্গল হতে পারে বলে জানান তিনি। টাকা না পেলে পরবর্তীতে আবারো ফোন দেয়া হবে বলে জানায় ‘জীনের বাদশাহ’। শুধু ‘জীনের বাদশাহ’ পরিচয়ে নয়। আরো নানাভাবে মানুষের সরলতার সুযোগ নিয়ে প্রতারণার ফাঁদে ফেলে মোটা অংকের টাকা আদায় করছে দুর্বৃত্তরা।

এ বিষয়ে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের দক্ষিণ বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) মাশরুকুর রহমান খালেদ বলেন, এটা ঠিক যে বায়োমেট্রিক রেজিস্ট্রেশনের কারণে অপরাধী খুব সহজে ধরা পড়বে। তবে সার্ভারে নতুন রেজিস্ট্রেশনের কাগজ এখনো সংযুক্ত হয়নি।তাই আশা করছি বায়োমেট্রিক রেজিস্ট্রেশন পেপার পেলে অপরাধীরদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া সম্ভব হবে।

তবে পুলিশের নবগঠিত ইউনিট কাউন্টার টেররিজমের একজন পরিদর্শক (ইন্সপেক্টর) বলেন, আমরা এখনো সব অপরাধীর বায়োমেট্রিক রি-রেজিস্ট্রেশন পেপার পাচ্ছি না।

এবিষয়ে গ্রামীণফোনের হেড অব এক্সটারনাল কমিউনিকেশনস সৈয়দ তালাত কামাল বলেন, আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অনুরোধে প্রয়োজন অনুযায়ী বায়োমেট্রিক রেজিস্ট্রেশন ফরম দেয়া হচ্ছে।

তবে তিনি স্বীকার করেন যে, কিছু ফরম এখনো সিস্টেমে প্রবেশ সম্পন্ন না হওয়ায় পাওয়া যাচ্ছে না। আমরা এনটিএমসিকে জানিয়েছি যে অচিরেই সকল ফরম সিস্টেমে প্রবেশ করাতে হবে। তার আগ পর্যন্ত কোন কোন ক্ষেত্রে পুরানো রেজিস্ট্রেশনের কাগজ পত্র দেয়া হচ্ছে।

ফরমের বিষয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে জানতে বাংলালিংকের পি আর অ্যান্ড কমিউনিকেশন বিভাগের সহকারী ব্যবস্থাপক অঙ্কিত সুরেকাকে একটি ই-মেইল দেয়ার ২ দিন পরও তিনি জবাব দেননি।

এদিকে, রমজান ও ঈদকে কেন্দ্র করে যেকোন ধরনের চাঁদাবাজি বন্ধে হটলাইন খুলেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)। ফোনে, প্রকাশ্যে কিংবা ইমেইলে চাঁদা চাইলেই যোগাযোগ করতে হবে ডিএমপির হটলাইনে। নম্বরগুলো হচ্ছে ০২-৯৫৫৯৯৩৩, ০১৭১৩৩৯৮৩১১, ০১১৯১০০১১০০, ০১১৯১০০১১১১।



মন্তব্য চালু নেই