বায়ু দূষণে বিশ্বে সবচেয়ে বেশি মৃত্যু ভারতে

পরিবেশ দূষণে এবার চীনকে ছাড়িয়ে গেল ভারত। দেশটিতে দূষণের জন্য সবচেয়ে বেশি মৃত্যু হচ্ছে। রাজধানী দিল্লি বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত নগরির স্বীকৃতি পেয়েছে। এজন্য দিল্লিতে বেশ কয়েকবার সতর্কতাও জারি করা হয়েছে রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে।

বোস্টনের স্টেট অব গ্লোবাল এয়ারের সর্বশেষ রিপোর্টে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

২০১৫ সালের ওই রিপোর্টে দেখা গেছে, দিল্লিতে প্রতিদিন ১৪শ’ নতুন যানবাহন রাস্তায় নামে। দূষণের কারণে ভারতে আড়াই লাখের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। মৃত্যুর হার বাংলাদেশ থেকে প্রায় ১৩ গুন এবং পাকিস্তানের চেয়ে ২১ গুন বেশি। পরিসংখ্যানে উল্লেখ করা হয়েছে, পৃথিবীর প্রায় ৯২ শতাংশ মানুষ দূষিত বাতাসের মধ্যে বসবাস করছে। সারা পৃথিবী জুড়েই বাষুদূষণ উদ্বেগ বাড়াচ্ছে। গবেষকদের দীর্ঘদিনের প্রচেষ্টায় দেখা গেছে, ১৯৯০ সালের পর থেকে ১৯৫টি দেশে প্রায় ৩শ রোগের প্রকোপ বেড়েছে। যার পেছনে সবচেয়ে বেশি দায়ী বাষুদূষণ।

শীর্ষে রয়েছে দিল্লি

বায়ু দূষণের শহর হিসেবে শীর্ষ অবস্থানে রয়েছে ভারতের রাজধানী দিল্লি। বিষয়টি নিয়ে দেশটির সরকার ও পরিবেশবাদী সংগঠনগুলো তাদের উদ্বেগ প্রকাশ করে আসছে। তবে, ভারতের সরকারি সংস্থাগুলো দিল্লির বাড়তে থাকা এই দূষণ সম্পর্কে এখনো উদাসীন বলে ওই গবেষণাপত্রে বলা হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, দিল্লির বায়ু দূষণ বেইজিংয়ের দ্বিগুণ। প্রায়ই সেখানে দিনের পর দিন ঘন কুয়াশা চারিদিক অবছা অন্ধকার করে রাখে।

২০১৩ সাল থেকে দিল্লিতে বায়ু দূষণের মাত্রা ৪৪ শতাংশ বেড়েছে। এজন্য যানবাহন ও কলকারখানা থেকে নির্গত ধোঁয়াই মূলত দিল্লির দূষণের জন্য দায়ী বলে গবেষণা পত্রে উল্লেখ করা হয়েছে। দেশটির আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, দূষণের কারণে গত কয়েক বছর ধরে শীতকালে দিল্লিতে ঘন কুয়াশা ও ঠাণ্ডা বেড়ে গেছে। এই অতিরিক্ত দূষণ মানবস্বাস্থ্যের জন্যও বড় হুমকি। দিল্লির পাঁচজন অধিবাসীর মধ্যে দুইজন শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যায় ভুগছেন।

গ্রিন ইনডেক্সে বিআরআইসিএসভুক্ত দেশগুলোর (চীন, ব্রাজিল, রাশিয়া ও দক্ষিণ আফ্রিকা) মধ্যে ভারতের অবস্থানই সবচেয়ে নাজুক। গ্রিন ইনডেক্সের ১৭৮টি দেশের মধ্যে ভারতের অবস্থান ১৫৫। চীন আছে ১১৮তম অবস্থানে। দক্ষিণ আফ্রিকার অবস্থা সবচেয়ে ভালো, ৭২তম।

বিশ্বজুড়ে জীববৈচিত্র্য ও তাদের বাসস্থান সুরক্ষার ক্ষেত্রেও ভারত অনেক পিছিয়ে আছে। নিম্নমুখী জিডিপি ও উচ্চহারে জনসংখ্যা বৃদ্ধিও ভারতের পরিবেশকে বড় চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলে দিয়েছে বলে ওই গবেষণায় বলা হয়।



মন্তব্য চালু নেই