বাস্তবায়িত হয়নি দেড় শতাধিক উন্নয়ন প্রকল্প

জাতীয় উন্নয়নে গৃহীত ১৫৪টি প্রকল্প বাস্তবায়নের অভাবে প্রতিনিয়তই বাড়ছে ব্যয় ও সময়। এসব প্রকল্পগুলোর জন্য বরাদ্দ ১৬৮ কোটি টাকা। কিন্তু বাস্তবায়নের হার ১ শতাংশও নয়, এমনকি অনেক প্রকল্পে ব্যয় হয়নি এক টাকাও।

জানা যায়, রাজনৈতিক বিবেচনায় প্রতিবছর প্রকল্প হাতে নেয়া হলেও আর্থিক সামর্থ্য ও দক্ষতার সমন্বয় করা হয় না। এর ফলে অনেক প্রকল্পে শুধু অর্থের অপচয় হয়।

পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের (আইএমইডি) এক প্রতিবেদন সূত্রে জানা যায়, গত ২০১২-১৩ অর্থবছরের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) আওতায় ৭৫টি প্রকল্পের অনুকূলে বরাদ্দের এক পয়সাও ব্যয় হয়নি। এ প্রকল্পগুলোর অনুকূলে মোট বরাদ্দ ছিল ৮৮ কোটি ১৮ লাখ টাকা। একই সময়ে ৭৯টি প্রকল্পের অধীনে কিছু টাকা ব্যয় হলেও কাজের কাজ কিছুই হয়নি। এ ধরনের প্রকল্পের অনুকূলে ৮০ কোটি ৪০ লাখ টাকা বরাদ্দ ছিল।

জানা যায়, ২০১২-১৩ অর্থবছরে এডিপির আওতায় মোট ১ হাজার ৩২৮টি প্রকল্প ছিল। এর মধ্যে অগ্রগতি শূন্য এমন তালিকায় রয়েছে ১৫৪টি প্রকল্প। একেবারেই অর্থ ব্যয় হয়নি এমন ৭৫ প্রকল্পের অনুকূলে বরাদ্দের মধ্যে বৈদেশিক সহায়তার আকার ধরা হয়েছিল ৩৯ কোটি টাকা। আর ৭৯টি প্রকল্পে অনুকূলে ৮০ কোটি ৪০ লাখ টাকা বরাদ্দের মধ্যে সরকারের নিজস্ব বরাদ্দ ছিল ৪২ কোটি। বাকি টাকা বৈদেশিক অংশ।

উল্লেখযোগ্য প্রকল্পসমূহগুলো হলো-

বাংলাদেশ ও মিয়ানমারে সরাসরি সড়কের ডিজাইন প্রকল্প নেয়া হয় ২০০৮ সালে। ৪ কোটি ৯৮ লাখ টাকা বরাদ্দ থাকলেও এর অনুকূলে ৫ বছরে এক পয়সাও ব্যয় হয়নি। প্রকল্পটি গত অর্থবছরে বাতিল ঘোষণা করা হয়েছে। দক্ষতা ও কর্মসংস্থান প্রকল্পে কারিগরি সহায়তায় ৫ কোটি ৬৯ লাখ টাকা অর্থ ব্যয় করতে না পারায় পুরো অর্থই ফিরে গেছে। উচ্চ শিক্ষায় সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্বের বিষয়ে সীমিত আকারে কারিগরি সহায়তা প্রকল্পে ১ কোটি ৮৫ লাখ টাকাও ব্যয় হয়নি।

গোপালগঞ্জ জেলার ১৬টি সড়কের উন্নয়নে ২০১১ সালে একটি প্রকল্প নেয়া হয়। ৩৮৭ কোটি ৭১ লাখ টাকা বরাদ্দ থাকলেও দুই অর্থবছরে ব্যয় হয় মাত্র ১ কোটি ৬৬ লাখ টাকা। গত অর্থবছরে এ প্রকল্পেও কোনো অর্থ ব্যয় হয়নি। ফলে বাধ্য হয়েই এ প্রকল্পটি বাতিল করা হয় গত অর্থবছরে।

সাভারের বিরুলিয়া থেকে আশুলিয়া পর্যন্ত সাড়ে ১০ কিলোমিটার সড়ক নির্মাণে প্রকল্প নেয়া হয় ২০০১ সালে। ২০০৩ সালের মধ্যে কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও প্রকল্প ঝুলে আছে এক যুগের বেশি সময় ধরে। স্থবির এ প্রকল্পটির মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে কয়েক দফা। সর্বশেষ ৩৬ কোটি ৮৩ লাখ টাকা বরাদ্দ দিয়ে মেয়াদকাল আবারও বাড়ানো হয়েছে। শুরুতে এর ব্যয় ধরা হয়েছিল ২০ কোটি ৭২ লাখ টাকা। ব্যয় বাড়লেও প্রকল্পের কাজে তেমন গতি আসেনি। ২০১২-১৩ অর্থবছরে এক টাকাও ব্যয় হয়নি প্রকল্পটির আওতায়।



মন্তব্য চালু নেই