বাশারের বিরুদ্ধে অভিযোগ উত্থাপন অ্যামনেস্টির

সিরিয়ার রাষ্ট্রপ্রধান বাশার আল আসাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধ ইস্যু আবারও চাঙা হচ্ছে। ব্রিটেনভিত্তিক মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের মধ্যপ্রাচ্য ও উত্তর আফ্রিকা বিষয়ক অংশের পরিচালক ফিলিপ লুথার মঙ্গলবারের এ ভাষণে আবারও বিগত বছরের অমীমাংসিত ইস্যুগুলো উত্থাপন করেছেন।

আসন্ন শান্তি আলোচনায় সম্ভাব্য বিঘ্ন: সিরীয় প্রশাসনের সঙ্গে সরাসরি শান্তিআলোচনার বিষয়ে যখন যুক্তরাষ্ট্র কিছুটা ইতিবাচকতা পোষণ করতে শুরু করেছে, তখনই এ মন্তব্য ‘বাশার-কেরি আশু বৈঠককে’ বিলম্বিত করতে পারে বলে বিশেষজ্ঞদের মত। তবে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের এক মুখপাত্র যখন বলেছেন, আলোচনা যে বাশারের সঙ্গেই হবে এমন কোনো কথা পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি বলেননি, সুতরাং আসাদকে এড়িয়ে অপর কোনো ঘুরপথও খুঁজতে পারে যুক্তরাষ্ট্র।

ইদলিবে রাসায়নিক হামলা: লুথার ফিলিপ জানান, বাশার যে সন্ত্রাসীদের ওপর বোমাবর্ষণের নামে আদপে সাধারণ মানুষের ওপরই রাসায়নিক বোমা বর্ষণ করেছেন তা প্রমাণিত। বিশেষ করে ইদলিব প্র্রদেশে অঞ্চলে পরিচালিত ব্যারেল বোমা বিস্ফোরণে যে বিষাক্ত ক্লোরিন গ্যাস নিঃসরণ হয়েছে, সেটিও মৃতদেহ দেখে চিকিৎসকেরা নিশ্চিত করেছিলেন। অমীমাংসিত এ বিষয়গুলো পুনারয় আলোচনায় আসার দাবি রাখে। কেননা বিসয়গুলো ‍গুরুতর যুদ্ধাপরাধের আওতাভুক্ত। এমনকি রসায়নিক অস্ত্র প্রয়োগের বিষয়টি যুদ্ধাপরাধে নতুন মাত্রা যোগ করেছে।

উল্লেখ্য ইদলিবে ব্যারেল বোমা বিস্ফোরিত হওয়ার পর একটি পরিবারের রাসায়নিক বিষক্রিয়ায় মৃত্যু চিকিৎসক নিশ্চিত করেছেন। ঐ পরিবারের নিহতদের তালিকায় দুই শিশু, তাদের বাবা, মা ও দাদির বিষক্রিয়ায় মৃত্যু নিশ্চিত করা হয়েছে বলে দাবি করে অ্যামনেস্টি। এছাড়া সন্দেহজনক রাসায়নিক হামলার শিকার হয়েছেন আরও অসংখ্য মানুষ, যাদের একটি বড় অংশ শিশু।

ইতাপূর্বে রাসায়নিক বোমার আলামত সংগ্রহে জাতিসংঘের বিশেষজ্ঞ দল গত বছর সিরিয়ায গেলেও পরে নিরাপত্তাহীনতার অজুহাত দেখিয়ে ফিরে আসে। যে কারণেই অনেকেই রাসায়নিক হামলায় বিষয়টি কাল্পনিক ও আরোপিত বলে মনে করছেন। এতে কেরে হালে পানি পাচ্ছেন বাশার আল আসাদ।

রাক্কায় ব্যারেলবোমা হামলা: ফিলিপ আরও বলেন, গত বছরের ১১ নভেম্বর থেকে ২৯ নভেম্বরের মধ্যে আসাদের নির্দেশে রাক্কায় ব্যারেলবোমা নিক্ষেপিত হওয়ার পর মারা যান ১১৫ জন। এদের মধ্যে ১৪ শিশু, বাকিরা সাধারণ বেসামরিক নাগরিক। সিরিয়ার অধীকৃত অঞ্চল থেকে রাক্কাকে রাজধানী বানিয়েছে আইএস। সেখানে আইএস-যোদ্ধারা অবকাঠামো, ঘাঁটি গড়ে ‍তুলেছে সত্য। কিন্তু বোমাগুলো বিস্ফোরিত হয়েছিল বাসে, জনবুহল বাজারে, মসজিদে প্রভৃতি স্থানে, যেখানে সাধারণ মানুষের জনসমাবেশ ঘটে। সুতরাং এখানে বাশারের আত্মপক্ষ সমর্থনের কোনো উপায় থাকছে না। এ হামলাকে আইএস-এর ওপর হামলা বলে বৈধকরণ চলতে পারে না। বাশারের বিরুদ্ধে এ অমীমাংসিত অপরাধগুলোও দ্রুত মীমাংসার দাবি রাখে। এসব পরিষ্কার যুদ্ধাপরাধ।



মন্তব্য চালু নেই