বাবা মারা গেছেন, ছেলেকে কারাদণ্ড দিলো ভ্রাম্যমান আদালত

সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সি.সি.ইউ (করোনারি কেয়ার ইউনিট)তে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শনিবার ভোরে মারা যান আতিকুর রহমান (৫৫)। এসময় চিকিৎসা অবহেলার অভিযোগ এনে কর্তব্যরত চিকিৎসককে লাঞ্ছিত করেন আতিকুর রহমানের ছেলে মকবুল মিয়া। পরে দুই পক্ষের হাতাহাতি হয়।

চিকিৎসক লাঞ্ছনার ঘটনায় শনিবার সকাল থেকেই কর্মবিরতি শুরু করেন হাসপাতালের সিসিইউ ইউনিটের চিকিৎসকরা। এরপর দুপুর ১২ টার দিকে ভ্রাম্যমান আদালত মৃতের ছেলে মকবুল মিয়াকে তিন মাসের কারদন্ড প্রদান করেন। দন্ডের পর চিকিৎসকরা কাজে যোগ দেন।

প্রত্যক্ষদর্শীদের সূত্রমতে জানা যায়, শনিবার ভোর ৪টায় হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে আতিকুর রহমান মারা যান। গত ১৬ জুন থেকে হার্ট ফেইলিউর হয়ে তিনি ওসমানী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। শনিবার ভোরে শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাঁকে করোনারি কেয়ার ইউনিট স্থানান্তর করা হয়। সেখানেই তাঁর মৃত্যু ঘটে। তাদের বাড়ি সিলেটের ওসমানীনগর উপজেলার শেরপুর।

আতিকুর রহমানের মৃত্যুর সংবাদ পাওয়ার পর তার ছেলে ও স্বজনরা চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে অবহেলার অভিযোগ এনে চড়াও হন বলে অভিযোগ উঠে। পরে অন্যান্য চিকিৎসকরা এসে মকবুলকে মারধর করে পুলিশের হাতে তুলে দেন।

ঘটনার সময় সিসিইউ’র দায়িত্বে থাকা সহকারী রেজিস্টার ডা. পলাশ চন্দ্র দে ও কর্তব্যরত ডাঃ আবতাহির রহিম তাহা বলেন, ” মৃত্যু সংবাদ পেয়ে ছেলে মকবুল মিয়া ও তার স্বজনরা চিকিৎসায় অবহেলার অভিযোগ এনে চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে চড়াও হয়ে হামলা চালান।”

খবর পেয়ে অন্য চিকিৎসক ও নার্সরা জড়ো হয়ে মকবুল মিয়াকে(২২) মারধর করে কর্তব্যরত পুলিশের কাছে তোলে দেন। এসময় চিকিৎসক লাঞ্ছনার প্রতিবাদে কর্তব্যরত সকল চিকিৎসক কর্মবিরতির ঘোষণা দিয়ে ‘অভিযুক্ত’ মকবুল মিয়ার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবী করেন।

পরিস্থিতি সামাল দিতে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের তত্ত্বাবধানে এবং ইন্টার্ন চিকিৎসকদের দাবীর পরিপ্রেক্ষিতে মোবাইল কোর্ট (ভ্রাম্যমাণ আদালত) এসে বিচার প্রক্রিয়া শেষে অভিযুক্তকে মকবুল মিয়াকে তিনমাসের কারাদণ্ডে দণ্ডিত করেন।

এই আদেশের পর কর্তব্যরত চিকিৎসকরা তাঁদের কর্মসূচী স্থগিত করেছেন।



মন্তব্য চালু নেই