বাজে মন্তব্যকারীদের প্রতি খালেদার হুঁশিয়ারি

শাসক দলের মন্ত্রী-এমপিদের প্রতি ইঙ্গিত করে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া বলেছেন, ‘যারা বড় বড় কথা বলছেন, বাজে মন্তব্য করছেন, ভবিষ্যতে তাদের পরিণতি কী হবে সেটা তারা বুঝতে পারছেন না।’

তিনি বলেন, ‘তখন বুঝবেন তারা কী অন্যায় করেছিলেন, কি ভুল করেছিলেন। কিন্তু ওই সময় না দেশের মানুষ তাদের রক্ষা করবে, না আল্লাহর কাছে মাফ পাবে। কোথাও তাদের জায়গা হবে না।’

সোমবার রাজধানীর লেডিস ক্লাবে জোটের অন্যতম শরিক জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি (জাগপা) আয়োজিত ইফতার মাহফিলে তিনি এসব কথা বলেন।

খালেদা জিয়া বলেন, ‘দেশ গণতন্ত্রহীন হয়ে পড়েছে। মানুষ পদে পদে বিপদে আছে। তারা কোথাও নিরাপদ নয়। মনে শান্তি নেই। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে মানুষ দিশেহারা। অবৈধ সরকার নিজেদের টিকিয়ে রাখতে সরকারি কর্মকর্তাদের বেতন বাড়ায়। কিন্তু সাধারণ মানুষের দিকে কোনো নজর নেই। দ্রব্যমূল্য বেড়েই চলেছে, মধ্যবিত্ত-নি¤œবিত্ত মানুষ রোজা রাখছে, দুবেলা ভালো করে খেতেও পারছেন না। কিন্তু তাদের (সরকার) কোনো চিন্তাভাবনা নেই। তারা লুটপাট নিয়ে আছে। তাদের ক্ষমতাকে কীভাবে পাকাপোক্ত করবে আর কী করে বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের ওপর অত্যাচার নির্যাতন করবে সেই পরিকল্পনা নিয়েই আছে।’

হাইকোর্ট থেকে জামিন পাওয়া সত্ত্বেও দলের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে মুক্তি না দেওয়ার সমালোচনা করে বিএনপি নেত্রী বলেন, ‘তাকে হয়রানি করা হচ্ছে। আদালত আমাদের মহাসচিবকে জামিন দিয়েছিল। কিন্তু আবারো তাকে কারাগারে রেখে দেওয়া হয়েছে। অথচ আওয়ামী লীগের লোকজন খুন-গুম করেও মুক্তি পেয়ে যাচ্ছে। তাদের ধরাই যাচ্ছে না।’

দেশকে ধ্বংস করতে আওয়ামী লীগের লোকজনকে নামানো হচ্ছে মন্তব্য করে বিএনপি নেত্রী বলেন, ‘তারা বিভিন্ন জায়গায় লুটপাট, দখল আর ড্রাগের আমদানি করছে। ব্যাপক মাদক আমদানি করে দেশের যুবসমাজকে ধ্বংস করে দিচ্ছে। তারা নিজেরো নষ্ট হয়ে গেছে, এখন সমাজকে নষ্ট করতে চাচ্ছে।’

‘আজকে মহিলারা নিরাপদ নয়। ঘরে-বাইরে, প্রতিষ্ঠানে কোথাও নিরাপদ নয়। আগে যা দেখেনি এখন তা হচ্ছে। বাসে-ট্রেনে মহিলাদের ওপর নির্যাতন হচ্ছে। আওয়ামী লীগ এত টাকা বানিয়েছে যে, কীভাবে টাকা খরচ করবে তারা বুঝতে পারছে না। এজন্য নারীদের গণধর্ষণ করছে।’

দেশের মানুষকে এসবের বিরুদ্ধে সচেতন হওয়ার আহ্বান জানিয়ে বিএনপি চেয়ারপারসন বলেন, ‘২০ দলীয় জোট ক্ষমতায় যাওয়া বা মন্ত্রী-এমপি হওয়ার জন্য নয়, দেশকে রক্ষা করে দেশে সুশাসন, আইনের শাসন, মানবাধিকার, গণতন্ত্র ও মৌলিক অধিকার ফিরিয়ে দিতে কাজ করছে।’

তিনি বলেন, ‘আল্লাহ আমাদের সহায় আছেন। রমজান মাসে সবাই দোয়া করবেন। তিনি কারো না কারো দোয়া কবুল করবেন। মক্কা শরিফে পর্যন্ত আমাদের জন্য, দেশের জন্য দোয়া করা হয়। এই জালেমরা অবশ্যই বিদায় নেবে। তারা (সরকার) যত বড় বড় কথাই বলুক না কেন, তারা সফল হবে না, কামিয়াব হবে না।’

ইফতার মাহফিলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য এম কে আনোয়ার, ড. আব্দুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, ভাইস চেয়ারম্যান সেলিমা রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন, বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ড. আসাদুজ্জামান রিপন, যুব বিষয়ক সম্পাদক সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক খায়রুল কবির খোকন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

২০ দলের মধ্যে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান কাজী জাফর আহমেদ, এলডিপির চেয়ারম্যান কর্নেল (অব.) অলি আহমেদ, জামায়াতের কর্মপরিষদের সদস্য ডা. রিদওয়ান উল্লাহ শাহিদী, আমিনুল ইসলাম, ইসলামী ঐক্যজোটের চেয়ারম্যান আব্দুল লতিফ নেজামী, ন্যাপের চেয়ারম্যান জেবেল রহমান গানি, মহাসচিব এম গোলাম মোস্তফা ভুঁইয়া, এনপিপির চেয়ারম্যান ড. ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, লেবার পার্টির চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, কল্যাণ পার্টির মহাসচিব আমিনুর রহমান, ডেমোক্রেটিক লীগের সাধারণ সম্পাদক সাইফুদ্দিন আহমেদ মনি, এনডিপির চেয়ারম্যান খন্দকার গোলাম মোতুর্জা, ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মঞ্জুর হোসেন ঈসা, ন্যাপ ভাসানীর চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট আজহারুল ইসলাম, সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক কমরেড সাঈদ আহমেদ উপস্থিত ছিলেন।



মন্তব্য চালু নেই