বাংলাদেশ ব্যাংকের বিরুদ্ধে উল্টো মামলার কথা ভাবছে আরসিবিসি

নিউইয়র্কের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংকে সঞ্চিত বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভের ৮১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার চুরির ঘটনায় ফিলিপাইনের রিজল কমার্শিয়াল ব্যাংকিং কর্পোরেশনের (আরসিবিসি) কোনো দায় নেই বলে দাবি করছে ব্যাংকটি। এই ব্যাংকিং চ্যানেল ব্যবহার করেই চুরি যায় রিজার্ভ।

রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে এ কথা জানানো হয়েছে। আরসিবিসি বলছে, তাদের ঘাড়ে দায় চাপানো ঠিক হবে না।

এরআগে রয়টার্সের আরেক প্রতিবেদনে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ও ওই চুরির ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটির প্রধান মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিনের বরাত দিয়ে জানানো হয়, চুরির জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পাঁচ কর্মকর্তার অবহেলা ছিল।

চুরির জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক আরসিবিসির কাছে ক্ষতিপূরণ চেয়ে আসছে। তবে আরসিবির দাবি, তাদের তরফ থেকে কিছুই ভুল হয়নি।

বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পাঁচ কর্মকর্তার জড়িত থাকার বিষয়ে আরসিবিসির ভাষ্য, তারা আগে থেকে এমনই বলে আসছে এবং বাংলাদেশ ব্যাংক তাদের কৃতকর্মের জন্যেই এ ক্ষতির মুখেভ পড়েছে।

আরসিবিসি বলছে, এ ঘটনার দায় তারা (বাংলাদেশ ব্যাংক) আমাদের উপর চাপাতে পারে না।

আরসিবিসির আইনজীবী থে দায়েপ বলছেন, তাদের অভিযুক্ত করার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের বিরুদ্ধে মামলা করা যায় কি না সে বিষয়টিও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

তবে এসব বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র শুভঙ্কর সাহার কোনো বক্তব্য নিতে পারেনি রয়টার্স।

এদিকে ইতিহাসের সবচেয়ে বড় এই সাইবার হামলার ঘটনার সঙ্গে জড়িত বাংলাদেশ ব্যাংকের অভ্যন্তরীণ চক্রকে শনাক্ত করা হয়েছে বলে শুক্রবার জানিয়েছেন সিআইডির অতিরিক্ত উপ-মহাপরিদর্শক শাহ আলম।

ঘটনার পর ১০ মাস পেরিয়ে গেলেও এখনো বাংলাদেশে কেউ গ্রেফতার হয়নি। কে বা কারা এই ঘটনা ঘটিয়েছে স্পষ্ট হয়নি সে বিষয়টিও।

বাংলাদেশ ব্যাংক বলছে, হ্যাকাররা বাংলাদেশ ব্যাংকের সিস্টেম এবং সুইফট কোড কন্ট্রোলে নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংকে থাকা বাংলাদেশ ব্যাংকের অ্যাকাউন্টে ৩০টি পেমেন্ট অ্যাডভাইজ পাঠায় ফিলিপাইনের স্থানীয় ব্যাংকে টাকা স্থানান্তরের জন্য। এর মধ্যে চারটি অ্যাডভাইজ অনার করে ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক, যার মাধ্যমে ৮১ মিলিয়ন ডলার সফলভাবে পাচার করতে সক্ষম হয় হ্যাকাররা। রিজার্ভ চুরির ঘটনা প্রকাশ হওয়ার পর আরসিবিসির বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে।

এরআগে রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, বাংলাদেশ ব্যাংকের দুর্বল হার্ডওয়্যার এবং সফটওয়্যার সিস্টেমের কারণেই হ্যাকাররা রিজার্ভ থেকে ৮০ মিলিয়ন ডলার চুরি করতে সক্ষম হয়েছিল। বিশ্বের সঙ্গে আর্থিক নেটওয়ার্কিংয়ের ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় ব্যাংকটি দীর্ঘদিন ধরে একটি পুরাতন (সেকেন্ড হ্যান্ড) রাউটার ব্যবহার করে আসছিল। এর বাজার মূল্য মাত্র ১০ ডলার।



মন্তব্য চালু নেই