বাংলাদেশ নিয়ে ব্রিটেনে আলোচনা কেন : সুরঞ্জিত

আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য ও প্রবীণ সংসদ সদস্য সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত বলেছেন, ‘বাংলাদেশে কী হয়েছে, যে ব্রিটিশ পার্লামেন্টে সেটা নিয়ে আলোচনা করতে হবে?’

দশম সংসদের দ্বিতীয় বাজেট অধিবেশনে সোমবার ২০১৫-১৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি এ কথা বলেন।

সুরঞ্জিত সেন বলেন, ‘আমরা রক্ত দিয়ে এ সংসদ তৈরি করেছি। বাংলাদেশে কী হয়েছে যে, ব্রিটিশ পার্লামেন্টে আলোচনা করতে হবে? হাউস অব কমন্সকে আমরা শ্রদ্ধার সঙ্গে দেখি। এক পার্লামেন্টের সঙ্গে আরেক পার্লামেন্টের সম্পর্ক হবে শ্রদ্ধাশীল ও বন্ধুত্বপূর্ণ।’

তিনি বলেন, ‘আমরা হাউস অব কমন্সকে মাদার অব পার্লামেন্ট বলে থাকি। কিন্তু ১৭ জুন হাউস অব কমন্সের চেম্বারে আইন প্রণয়ন ছাড়া ওয়েস্ট মিনিস্টারের ৩০ নম্বর বৈঠকে একটা রং ব্রিফিং হোল্ড করে কতগুলো ভুল ইস্যু নিয়ে আলোচনা হলো। এক রাষ্ট্রের সঙ্গে আরেক রাষ্ট্রের একটা সম্পর্ক আছে। সেখানে কিছু পরামর্শ দিতে পারে। কিন্তু এভাবে এক পার্লামেন্ট আরেক পার্লামেন্টের বিষয় নিয়ে বিদ্বেষপূর্ণ কথা বলতে পারে না।’

স্পিকারের উদ্দেশে সুরঞ্জিত বলেন, ‘আপনি কমনওয়েলথ পার্লামেন্টারি এ্যাসোসিয়েশনের (সিপিএ) সভাপতি। তাই আপনার দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। আপনি বিষয়টি তুলবেন।’

সুরঞ্জিত বলেন, ‘১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার পর ওরা টু শব্দও করেনি। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর জিয়াউর রহমান ইনডেমনিটি জারি করে হত্যার বিচার বন্ধ করে দেন তাতেও কোনো কথা বলেনি। জিয়াউর রহমান ১৯৮৬ সালে হ্যাঁ, না ভোট দিয়ে ৯৮ শতাংশ ভোট কাস্ট দেখিয়ে ক্ষমতা দখল করল। তখনও তো কিছু বললেন।’

প্রবীণ এ সংসদ সদস্য বলেন, ‘আমাদের মানবাধিকার কমিশন শ্রেষ্ঠ কমিশন। আমাদের দুদক নিজস্ব মতাদর্শে চলে। এখন মন্ত্রী-এমপিদের বিরুদ্ধে মামলা করতে সরকারের অনুমতি লাগে না। আগে অনুমতি নিয়ে মামলা করতে হতো। সরকারের স্বচ্ছতার জন্য অনেক মন্ত্রী-এমপি পদত্যাগের নজির রয়েছে।’

সুরঞ্জিত বলেন, ‘পত্রিকায় দেখলাম ৫৬ হাজার কোটি টাকা ঋণ খেলাপি হয়েছে। যদি খেলাপি ঋণ ৫৫-৫৬ হাজার কোটি টাকা হয়, তাহলে আলাপি ঋণ কত? আলাপি ঋণ মানে যেগুলোর কোনো হদিস নেই।’

তিনি বলেন, ‘হলমার্ক, টলমার্ক গেল। সোনালী, রূপালী ব্যাংকের ২২ হাজার ৭০০ কোটি টাকা গেছে। বেসিক ব্যাংক তো বেসিক হয়ে গেছে। এ সব খেলাপি ঋণ আদায় করতে না পারলে বাজেট দিয়ে কী হবে?’

এ সময় অর্থমন্ত্রীকে খেলাপি ঋণ আদায়ের জন্য আদালতে মামলা করার ও ব্যাংকিং কমিশন করে আর্থিক খাতে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনার দাবি জানান সুরঞ্জিত সেন।

সাবেক এ মন্ত্রী বলেন, ‘সংসদে মন্ত্রীরা অনেকে অনেক কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী সংবিধান ও আইনের শাসনের প্রতি অনুগত। আমি নির্বাচন করতে পারব কি পারব না এ সিদ্ধান্ত সংসদ দিতে পারে না। এ জন্য নির্বাচন কমিশন, উচ্চ আদালত ও সংবিধান রয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘মন্ত্রীরা যে যে দলেরই থাকেন আপনাদের আলাদা আলাদা এজেন্ডা থাকতে পারে। কিন্তু এমন কিছু বলবেন না যেন আমাদের বিব্রত হতে হয়। আপনারা মন্ত্রী, আপনাদের বক্তব্যের দায় প্রধানমন্ত্রীর ওপর বর্তায়। ২১ আগস্ট, জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় খালেদা জিয়ার বিচারে কী হবে? কী শাস্তি হবে সেটা আদালত বুঝবে।’



মন্তব্য চালু নেই