বাংলাদেশ উগ্রপন্থিদের চারণভূমি হবে না : প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বাংলাদেশের মাটি কোনো ভাবেই বিদেশি উগ্রবাদীর চারণভূমি হতে পারে না। এ জন্য সরকার সব পদেক্ষেপ নিয়েছে। তিনি সন্ত্রাসেবাদ মোকাবেলায় একযোগে কাজ করতে এশিয়া প্রশান্ত মহাসগরীয় অঞ্চলের প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা প্রধানদের আহ্ববান জানান।
মঙ্গলবার সকালে রাজধানীর হোটেল রেডিসনে এশিয়া প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা প্রধানদের সম্মেলন (এপিআইসিসি) উদ্বোধনকালে প্রধানমন্ত্রী এ আহ্বান জানান।
বাংলাদেশের প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা মহাপরিদপ্তর ও যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা মহাপরিদপ্তরের প্যাসিফিক কমান্ডের যৌথ উদ্যোগে সপ্তম এপিআইসিসি অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
এশিয়া প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের ২৭টি দেশ যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, বাংলাদেশ, অস্ট্রেলিয়া, ব্রুনেই, কম্বোডিয়া, কানাডা, চিলি, ফ্রান্স, ইন্দোনেশিয়া, ভারত, জাপান, কোরিয়া প্রজাতন্ত্র, মঙ্গোলিয়া, মালয়েশিয়া, নেপাল, নিউজিল্যান্ড, পাকিস্তান, পাপুয়া নিউগিনি, ফিলিপাইন, সিঙ্গাপুর, থ্যাইল্যান্ড, টোঙ্গা, ভিয়েতনাম, চীন, লাওস এবং মালদ্বীপের প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা প্রধানরা এতে যোগ দিয়েছেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘বিশ্ব আজ বহুমাত্রিক হুমকির সম্মুখীন।এসব হুমকি কোনো দেশের পক্ষে এককভাবে মোকাবেলা সম্ভব নয়। এদের মোকাবেলার জন্য সবাইকে সম্মিলিতভাবে একে অন্যের সঙ্গে সহযোগিতা ও সমন্বয় করে কাজ করতে হবে।’
সম্মেলনে গোয়েন্দা প্রধানদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ‘আমি আশা করি এ সম্মেলনের মাধ্যমে আপনাদের পরস্পরের মধ্যে বিদ্যমান দেয়ালগুলোর দেয়াল ভেঙ্গে যাবে। আপনাদের মধ্যে দুরুত্ব কমবে বোঝাপড়া বাড়বে।‘
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে নতুন কর্মকৌশল উদ্ভাবনের পাশাপাশি পারস্পরিক যোগাযোগ ও সহযোগিতা বৃদ্ধি পাবে। আর এর মাধ্যমে বিশ্ব শান্তির শত্রু সন্ত্রাসীদের পরাজয় হবে।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলো আগে বিচ্ছিন্নভাবে এবং সমন্বয়হীনভাবে কাজ করলেও প্রযুক্তি বদৌলতে তারা এখন অনেক বেশি সুসংহত। তারা সমন্বিতভাবে ধ্বংসাত্মক কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। সন্ত্রাসীদের চলাচলের গতি বেড়েছে, যোগাযোগ সহজ হয়েছে এবং আত্মগোপনের জন্য তারা বিস্তীর্ণ এলাকা ব্যবহার করছে।’
সন্ত্রাসীদের কোনো নির্দিষ্ট সীমানা নেই জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এরা বিশ্বমানবতার শত্রু, শান্তির পথে অন্তরায়। টিকে থাকার জন্য সন্ত্রাসীরা সব সময় উদ্ভাবনী শক্তিতে তৎপর। একটা কর্মকৌশল উদঘাটনের পর তারা নতুন কৌশলের উদ্ভাবন ঘটায়।’
বাংলাদেশ সরকার সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করেছে জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘বাংলাদেশের মাটি কোনো ভাবেই কোনো বিদেশি উগ্রবাদীর চারণভূমি হতে পারে না। সরকার সে পদক্ষেপ নিয়েছে। এ জন্য আইন শৃঙ্খলাবাহিনীকে প্রশিক্ষণ ও সরঞ্জামাদি যোগান দিয়ে চলেছি। সন্ত্রাসবাদ বিস্তারে অর্থের যোগান বন্ধে আইন পাশের সঙ্গে দৃঢ় পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।’
সন্ত্রাস বিরোধী অভিযানে যাতে মানবাধিকার অক্ষুন্ন থাকে তার জন্য কঠোর নিয়ন্ত্রণ আরোপ করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।
সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপ নেয়ার পাশাপাশি নিজের দৃঢ় অবস্থান তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘কোনো হুমকিই আমাকে সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া থেকে টলাতে পারবে না।’



মন্তব্য চালু নেই