বাংলাদেশে বিরামহীন মৃত্যুদণ্ডাদেশ গভীর উদ্বেগজনক: অ্যামনেস্টি

বাংলাদেশে অব্যাহত মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেয়া হচ্ছে বলে আশঙ্কা করে একে গভীর উদ্বেগজনক বিষয় হিসেবে অভিহিত করেছে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল। মৃত্যৃদণ্ড বাতিল করার প্রথম পদক্ষেপ হিসেবে অবিলম্বে ফাঁসির ওপর স্থগিতাদেশ আরোপের আহ্বানও জানিয়েছে সংগঠনটি।

সোমবার সুপ্রিম কোর্ট জামায়াত নেতা মুহাম্মদ কামারুজ্জামানের মৃত্যুদণ্ডাদেশ বহাল রাখার প্রেক্ষাপটে অ্যামনেস্টি তাদের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এই আহ্বান জানিয়েছে।

অ্যামনেস্টির বাংলাদেশ গবেষক আব্বাস ফয়েজ বলেন, “বাংলাদেশে মৃত্যুদণ্ডাদেশ অব্যাহতভাবে আরোপ করা গভীর উদ্বেগজনক। গত মৃত্যুদণ্ডাদেশ ঘোষণার নয় মাস বিরতির পর এক সপ্তাহেরও কম সময়ের মধ্যে তিনটি ফাঁসির আদেশ ঘোষিত হলো।”

অ্যামনেস্টি বলে, “বাংলাদেশকে অবশ্যই মৃত্যুদণ্ডাদেশ বাতিল করার প্রথম পদক্ষেপ হিসেবে অবিলম্বে ফাঁসির ওপর স্থগিতাদেশ আরোপ করতে হবে এবং এটা নিশ্চিত করতে হবে যে বিচার বিভাগের ওপর রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ হবে না।”

আব্বাস ফয়েজ বলেন, “ফাঁসি স্বাধীনতা যুদ্ধের শিকার লাখ লাখ লোকের জন্য ন্যায়বিচার বয়ে আনার বদলে কেবল সহিংসতার স্থায়ী চক্রই সৃষ্টি করবে।”

অ্যামনেস্টির প্রতিবেদনে বলা হয়, “আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল (আইসিটি) ২ নভেম্বর আরেক জামায়াত নেতা মীর কাসেম আলীকে মৃত্যুদণ্ড দেয়। এর আগে ২৯ অক্টোবর জামায়াতের আমির মতিউর রহমান নিজামীকেও মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেয়া হয়।”

২০০৯ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকে আইসিটি যে ১২টি আদেশ দিয়েছে, তার সবই বিরোধী দলের সদস্যদের (প্রধানত জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে সম্পৃক্তদের) বিরুদ্ধে। এগুলোর মধ্যে ৯টি মৃত্যুদণ্ডাদেশ।

অ্যামনেস্টি জানায়, “সংবিধান অনুযায়ী সুপ্রিম কোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আসামিপক্ষ রিভিউ আবেদন করতে পারে। কিন্তু অ্যাটর্নি জেনারেলের বক্তব্য এর বিরুদ্ধে বক্তব্য দেয়ায় রিভিউ আবেদন করার অধিকার দৃশ্যত থাকছে না।”

অ্যামনেস্টি জানায়, “এখন পর্যন্ত ১৪০টি দেশ মৃত্যুদণ্ড আইনগতভাবে বা প্রথা হিসেবে বাতিল করেছে। যে মাত্র নয়টি দেশ ২০০৯ থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত প্রতি বছর ফাঁসি কার্যকর করেছে, তার মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম। অ্যামনেস্টি সবক্ষেত্রে মৃত্যুদণ্ডের বিরুদ্ধে।”



মন্তব্য চালু নেই