বহিষ্কৃত অস্ত্রধারী দুই ছাত্রলীগ নেতার জামিন

রাজধানীর গুলিস্তানে ফুটপাতের দোকান উচ্ছেদের সময় অবৈধ অস্ত্র দিয়ে গুলি ছোড়া ছাত্রলীগের বহিষ্কৃত সেই দুই নেতার জামিন মঞ্জুর করেছেন আদালত। জামিন পাওয়া দুই আসামি হলেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ছাত্রলীগের বহিষ্কৃত সাধারণ সম্পাদক সাব্বির হোসেন ও ওয়ারী থানা ছাত্রলীগের বহিষ্কৃত সাধারণ সম্পাদক আশিকুর রহমান।

গত বৃহস্পতিবার ঢাকার মহানগর হাকিম খুরশীদ আলম এই জামিন মঞ্জুর করেন বলে নিশ্চিত করেন আদালত পুলিশের সাধারণ নিবন্ধন কর্মকর্তা মাহমুদুর রহমান। তিনি বলেন, জামিন শুনানির সময় রাষ্ট্রপক্ষে তিনি জামিনের বিরোধিতা করে আদালতে বক্তব্য উপস্থাপন করেন। আসামিপক্ষ থেকে বলা হয়, দুই আসামির বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ নেই। কাকে গুলি করেছেন, তা-ও উল্লেখ নেই। গুলির কোনো খোসা উদ্ধার হয়নি। ধারাটি জামিনযোগ্য। তাই তাঁদের জামিন দেওয়া হোক। শুনানি শেষে আদালত দুই আসামির তিন হাজার টাকা মুচলেকায় জামিন মঞ্জুর করেন।

গত ২৭ অক্টোবর গুলিস্তানের ফুটপাত থেকে অবৈধ দোকানপাট উচ্ছেদ করতে যায় ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি)। এ সময় ডিএসসিসির কর্মচারী ও একদল যুবকের সঙ্গে ওই এলাকার হকারদের পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও সংঘর্ষ হয়। একপর্যায়ে ওই যুবকদের মধ্যে সাব্বির হোসেন ও আশিকুর রহমানকে আগ্নেয়াস্ত্র থেকে ফাঁকা গুলিবর্ষণ করতে দেখা যায়। এই ছবি প্রকাশিত হওয়ার পর ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটি দুজনকে সংগঠন থেকে বহিষ্কার করে। এ ঘটনায় পুলিশ এবং একজন হকার ছাত্রলীগের দুই নেতার বিরুদ্ধে শাহবাগ ও পল্টন থানায় পৃথক মামলা করেন।

স্টামফোর্ড ইউনিভার্সিটির ধানমন্ডি ক্যাম্পাসের আইন বিভাগের ছাত্র সাব্বির হোসেন সপরিবারে পুরান ঢাকার সিদ্দিকবাজারে থাকেন। একই প্রতিষ্ঠানের ছাত্র আশিকুরের বাসা ওয়ারীর র‍্যাঙ্কিন স্ট্রিটে।

সাব্বিরের ব্যক্তিগত কার্যালয় ১৩১ নম্বর সিদ্দিকবাজারের রোজ মেরিনাস মার্কেটের দ্বিতীয় তলায়। সেটি এখন তালাবদ্ধ। মহানগর দক্ষিণ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হওয়ার পর সাব্বির এই কক্ষ দখল করে ব্যক্তিগত কার্যালয় হিসেবে ব্যবহার করে আসছিলেন। এখানে তিনি সহযোগীদের নিয়ে আড্ডা দিতেন। এলাকায় নিয়মিত মোটরসাইকেলের মহড়া দিতেন। তাঁর বিরুদ্ধে সিদ্দিকবাজার এলাকায় চাঁদাবাজির অভিযোগও রয়েছে।

ছাত্রলীগের স্থানীয় একাধিক নেতা বলেন, সাব্বির ও আশিকুরের রিভলবার ও পিস্তলের লাইসেন্স নেই। ছাত্রলীগের পদ পাওয়ার পর তাঁদের হাতে এসব অবৈধ অস্ত্র এসেছে। গুলিস্তানে হামলার আগেও তাঁরা প্রকাশ্যে এসব আগ্নেয়াস্ত্র বহন করেছেন।

পল্টন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রফিকুল ইসলাম বলেন, তাঁরা খোঁজ নিয়ে জানতে পেরেছেন, ছাত্রলীগের দুই নেতা সাব্বির ও আশিকুর ঢাকা জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে কোনো আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স নেননি। তাই তাঁদের ব্যবহার করা অস্ত্র ও গুলি অবৈধ।



মন্তব্য চালু নেই