বর্ষবরণের রাতে ভারতের বেঙ্গালুরুর রাস্তায় গণ-শ্লীলতাহানি!

ভারতের দক্ষিণের শহর বেঙ্গালুরুকে বেশ সভ্য ও উন্নত জীবনযাত্রা সম্পন্ন শহর বলেই জানতেন ভারতের মানুষ। বেঙ্গালুরুর রাস্তা মসৃণ, কলকাতার মতো লঝ্‌ঝড়ে চায়ের দোকান নয়, বেঙ্গালুরুতে প্রায় প্রতি মোড়ে মোড়ে রয়েছে অভিজাত কফি শপ, কলকাতার থেকে হাজার গুণ বেশি রঙিন। কিন্তু এই রঙিন শহরের আসল রংটা কী, তা দেখা গেল বর্ষবরণের রাতে।

বেঙ্গালুরুর সবচেয়ে অভিজাত এলাকা, শহরের প্রাণকেন্দ্র বলে পরিচিত যে এমজি রোড অঞ্চল, বর্ষবরণের রাতে সেখানেই চলল গণ-শ্লীলতাহানি। মদ্যপ গুন্ডাদের হাতে নিগৃহীত হতে হল বহু মহিলাকে। অথচ প্রশাসনের দাবি, বর্ষবরণের রাতে বিশেষ ডিউটিতে মোতায়েন করা হয়েছিল ১৫০০ পুলিশকর্মীকে। এত সংখ্যক আইনের রক্ষক থাকা সত্ত্বেও মদ্যপ বাইকআরোহীরা তাণ্ডব চালায় রাস্তায়, অশ্রাব্য গালাগালি ও কুকথা করা ছাড়াও অশালীনভাবে মহিলাদের গায়ে হাত দেওয়ার চেষ্টা হয়। একেকটি জায়গায় একসঙ্গে অনেকে মিলে মহিলাদের ঘিরে ধরে অসভ্য আচরণ করে।

বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এই মদ্যপেরা দল বেঁধে থাকায় মহিলাদের অসম্মানের হাত থেকে বাঁচাতে পারেননি তাদের পুরুষসঙ্গীরাও। বেঙ্গালুরুর এমজি রোড এবং ব্রিগেড রোডে প্রতি বছরই শহরের মানুষ জড়ো হন বর্ষবরণ করতে। অনেকে পরিবারের শিশু ও কিশোর সদস্যদেরও নিয়ে আসেন। শনিবার রাতে তেমন বহু পরিবারই উপস্থিত ছিল ওই এলাকায়।

আনন্দ উল্লাসের সঙ্গে নতুন বছর বরণ করতে গিয়ে উন্মত্ত জনতার তাণ্ডব দেখে আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পরে শিশুরাও। কিন্তু একটি সর্বভারতীয় দৈনিকের রিপোর্ট অনুযায়ী, গোটা ঘটনাটির প্রচুর ছবি ও ভিডিও ফুটেজ থাকা সত্ত্বেও শ্লীলতাহানির কোনও অভিযোগ দায়ের করা হয়নি বলেই দাবি বেঙ্গালুরু পুলিশের।

বেঙ্গালুরু পুলিশের বক্তব্য, ওইদিন রাতে সাহায্যের জন্য বহু মহিলাদের ডিসট্রেস কল পেয়েছে পুলিশ এবং তাদের যথাসাধ্য সাহায্যও করা হয়েছে। মদ্যপদের তাণ্ডবের কথাও প্রকারান্তরে স্বীকার করতে হয়েছে পুলিশকে কারণ সরকারি তথ্য বলছে ওই রাতে মদ্যপ অবস্থায় র‌্যাশ ড্রাইভিংয়ের জন্য চারশোরও বেশি ব্যক্তিকে কেস দেওয়া হয়। এখন প্রশ্ন হল, যদি শ্লীলতাহানি নাও হয়ে থাকে তাহলেও মদ্যপ বাইকবাহিনীর তাণ্ডবও কি বেঙ্গালুরুর নাগরিক সংস্কৃতি ও নিরাপত্তার দিকে আঙুল তোলে না? এবেলা



মন্তব্য চালু নেই