বরিশালে সব ধরণের লঞ্চ চলাচল বন্ধ

ঘুর্নিঝড় কোমেন আঘাত হানার আশংকায় বরিশালের জেলা প্রশাসন জেলার সকল উপজেলায় আগাম প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে। উপকূলীয় অঞ্চলের ২০ হাজার লোক সাইক্লোন শেল্টারে আশ্রয় নিয়েছেন। বরিশাল নদীবন্দরের জন্য ৩ নম্বর সতর্ক সংকত থাকায় বৃহস্পতিবার সকাল থেকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত অভ্যন্তরীন রুটের সব ধরণের লঞ্চ চলাচল বন্ধ করেছে বিআইডব্লিউটিএ কর্তৃপক্ষ। ঢাকাগামী লঞ্চের বেলায়ও এই নিষেধাজ্ঞা রয়েছে বলে জানিয়েছেন নৌ-নিরাপত্তা ও ট্রাফিক বিভাগের উপ-পরিচালক মো. আবুল বাশার মজুমদার।

আবহাওয়া অফিসের সিনিয়র পর্যবেক্ষক মো. ইউসুফ জানান, বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘুর্নিঝড় কোমেনের কারণে বরিশাল নদীবন্দরের জন্য ৩ নম্বর এবং পায়রা সমুদ্র বন্দরের জন্য ৫ নম্বর সতর্ক সংকেত রয়েছে। তবে কোমেন বরিশাল অঞ্চলের পাশ কাটিয়ে সন্ধ্যা নাগাদ স্বন্দীপ বা লক্ষ্মীপুরে আঘাত হানার আশংকা রয়েছে। তিনি আরও জানান, ২৪ ঘন্টায় তারা ৩১ দশমিক ৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করেছেন। বাতাসের গতিবেগ ঘন্টায় ৫৪ কিলোমিটার বেগে বইছে। যা ৬২ কিলেমিটার বেগে উন্নীত হতে পারে এবং বরিশাল অঞ্চলের কোথায়ওবা আঘাত হানতে পারে কোমেন। নদীতে স্বাভাবিকের চেয়ে ২ থেকে ৩ ফুট পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। কলাপাড়া রাডার স্টেশনের প্রকৌশলী প্রদীপ কুমার চক্রবর্তী জানান, সমুদ্র উত্তাল রয়েছে। মাছ ধরা ট্রলার সাগরে যেতে পুরোটাই নিষেধাজ্ঞা থাকায় তারা নিরাপদে আশ্রয় নিয়েছে।

ঘুর্নিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচী বরিশালের উপ-পরিচালক আব্দুর রশীদ জানান, বরিশাল অঞ্চলে ৯৮৭টি সাইক্লোন শেল্টারে ইতোমধ্যে ২০ হাজার মানুষ আশ্রয় নিয়েছেন। এরমধ্যে ভোলায় ১৩ হাজার এবং বাদবাকী পটুয়াখালীর কলাপাড়া, গলাচিপা, বরগুনা জেলার পাথরঘাটা এবং পিরোজপুর জেলার মঠবাড়িয়া উপজেলার। এক্ষেত্রে তাদের ৫ হাজার ৩’শ স্বেচ্ছাসেবক কাজ করছেন। জেলা প্রশাসকের দায়িত্বে থাকা অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা) মো. আবুল কালাম আজাদ জানান, ঘুর্নিঝড়ে প্রাণহানী রোধে তারা সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছেন। প্রতিটি উপজেলা প্রশাসনকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে সর্তকাবস্থা গ্রহণে। যেসব বিদ্যালয় নদীর তীরবর্তী সেগুলো অবস্থা অনুযায়ী ব্যাবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। খোলা হয়েছে কন্ট্রোল রুম। তিনি আরও জানান, দুর্যোগ মোকাবেলায় ১০০ টন জিআর চাল এবং ২ লাখ টাকা ত্রাণ ভান্ডারে মজুদ রয়েছে। বরিশাল নৌ-নিরাপত্তা ও ট্রাফিক বিভাগের উপ-পরিচালক আবুল বাশার মজুমদার বলেন, বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই অভ্যন্তরীণ রুটে সকল প্রকার লঞ্চ চলাচল বন্ধ করা হয়েছে। ঢাকাগামী লঞ্চও এখন পর্যন্ত এই নিষেধাজ্ঞার আওতায় রয়েছে। সতর্ক সংকেত পরির্তন না হলে ঢাকাগামী লঞ্চ চলাচলও বন্ধ থাকবে।

উল্লেখ্য, আবহাওয়ার বিরুপ প্রভাবের কারণে এরআগে গত রবিবার বেলা ১২টা থেকে বুধবার পর্যন্ত টানা চারদিন বরিশালের অভ্যন্তরীণ নৌ-রুটে ৬৫ ফুটের নিচে সকল লঞ্চ চলাচল বন্ধ রাখা হয়।



মন্তব্য চালু নেই