বরিশালে তাপদাহের সাথে অব্যাহত লোডশেডিং : চরম ভোগান্তিতে জনজীবন

কল্যাণ কুমার চন্দ, বরিশাল : তাপমাত্রা যতো বৃদ্ধি পাচ্ছে বিদ্যুতের লোডশেডিংও ততো বৃদ্ধি পাচ্ছে বরিশাল নগরীসহ জেলার প্রতিটি উপজেলাগুলোতে। ফলে চরম ভোগান্তিতে পড়েছে বরিশালবাসীসহ গোটা দক্ষিণাঞ্চলের মানুষ। কোথাও স্বস্তি মিলছেনা। একইসাথে বেড়েছে নানাবিধ রোগব্যধি।
বিদ্যুৎ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, বরিশাল ও ভোলার তিনটি বিদ্যুৎ কেন্দ্রে গ্যাস এবং জ্বালানী সংকটের কারণে উৎপাদন প্রায় তিনভাগের একভাগে নেমে এসেছে। যার কারণে লোডশেডিং বৃদ্ধি পেয়েছে।

নগরীর নবগ্রাম রোড এলাকার বাসিন্দা তানভির আহম্মেদ অভি জানান, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা থেকে শুক্রবার দুপুর পর্যন্ত তাদের এলাকায় ১৫ বার লোডশেডিং হয়েছে। একই অবস্থা বিরাজ করছে নগরীসহ প্রতিটি উপজেলার সর্বত্র,এরমধ্যে আবার সবথেকে বেশি বিদ্যুতের লোড শেডিং হচ্ছে উজিরপুর উপজেলায়। লোডশেডিং কবলিত ক্ষতিগ্রস্থ্য বিদ্যুৎ গ্রাহকদের মধ্যে সরকারি কর্মকর্তা,পুলিশ,সাংবাদিক,শিক্ষক-শিক্ষার্থী সহ নানা শ্রেনী পেশার মানুষ ক্ষোভের সাথে বলেছেন উজিরপুর উপজেলার আওয়ামীলীগ নেতারা ভাগবাটোয়ারা নিয়ে ব্যস্ত থাকার কারনে জনগনের ভোগান্তি নিয়ে তাদের ভাবার মত কোন সময় থাকে না,এছারা নেতাদের বাড়িতে একাধিক বিকল্প বিদ্যুতের ব্যাবস্থা থাকার কারনে- (টিআর প্রজেক্টের সরকারী আইপিএস,সৌর বিদ্যুৎ)-সাধারন জনগনের মত তাদের চরম কোন ভোগান্তি নেই ফলে এ ব্যাপারে নেতাদের কোন মাথাব্যাথাও নেই।

ফলে প্রচন্ড তাপদাহে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে গোটা বরিশাল বাসিকে। রূপাতলী এলাকার বাসিন্দা ময়না বেগম জানান, প্রচন্ড গরমের সাথে অব্যাহত লোডশেডিংয়ের কারণে তাদের পরিবারের শিশু ও বৃদ্ধরা অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। কাশিপুর, নতুন বাজার, বৌদ্ধপাড়া, সাগরদী এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ, প্রচন্ড তাপদাহের সাথে ঘণ ঘণ লোডশেডিংয়ের কারণে এখন জীবনযাপন অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। লোডশেডিংয়ের কারণে পানি তুলতে না পেড়ে তারা এখন দুঃসহ দিনাতিপাত করছেন। জেলার প্রতিটি উপজেলার গ্রামাঞ্চলের অবস্থা আরও নাজুক। একবার বিদ্যুত গেলে আর কখন আসবে তা সঠিক করে বলতে পারছেন না খোঁদ বিদ্যুত বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীরাই।

বরিশাল রুপাতলী বিদ্যুৎ ষ্টেশন কেন্দ্রের নিয়ন্ত্রণ কক্ষ সূত্রে জানা গেছে, উৎপাদন সংকটের কারণে নগরীর ২৩টি ফিডারে প্রতিদিন কমপক্ষে এক ঘন্টা করে লোডশেডিং দিতে হচ্ছে। সন্ধ্যায় নগরীতে ১১০ মেগাবাইট বিদ্যুতের চাহিদা থাকলেও সরবরাহ থাকে মাত্র ৭০ মেগাবাইট। একইভাবে সারাদিন বিদ্যুতের চাহিদা ৯০ মেগাবাইট থাকলে এর বিপরীতে সরবরাহ করা হয় ৫০ মেগাবাইট। ঘাটতি বিদ্যুতের চাহিদা মেটাতে নগরীর ২৩টি ফিডারেই লোডশেডিং দিতে হচ্ছে। শুক্রবার সারাদিনও একই অবস্থা থাকবে বলে ষ্টেশন কেন্দ্রের নিয়ন্ত্রণ কক্ষ নিশ্চিত করেছে।

তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাওয়ার ব্যাপারে বরিশাল আবহাওয়া অফিসের উচ্চ পর্যবেক্ষক মোঃ হুমায়ুন কবির জানান, বৃহস্পতিবার বরিশালের সবোর্চ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৫ দশমিক ৩ ডিগ্রী সেলসিয়াস। তিনি আরও বলেন, গত ২৪ এপ্রিল এ বছরের সবোর্চ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল। ওইদিন তাপমাত্রা ছিল ৩৭ দশমিক ৫ ডিগ্রী সেলসিয়াস। আবহাওয়াবিদ হুমায়ুন কবির আরও বলেন, বৃষ্টি না হওয়ার কারণে তাপমাত্রা আরও বৃদ্ধি পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এছাড়া মে মাসে ঝড়-বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।



মন্তব্য চালু নেই