বজ্রপাত থেকে বাঁচতে কী কী করবেন? জেনে কিছু সহজ উপায়

আমরা সবাই জানি বজ্রপাতকে বাংলাদেশের জাতীয় দুর্যোগ হিসাবে ঘোষণা করা হয়েছে। বাংলাদেশে শুরু হয়ে গেলো কালবৈশাখীর মৌসুম। আর এ সময়টাতে বজ্রঝড় ও বজ্রপাতের সম্ভাবনা বেড়ে যায়। আমাদের দেশে প্রতি বছরই বজ্রপাতে বহু লোক মারা যায়।

গেলো বছর ১৪২ জনের মৃত্যু হয়েছে এই বজ্রপাতের কারণে। বজ্রপাতে দুর্ঘটনার সবচে’ বড় কারণ সচেতনতার অভাব। বজ্রপাতের সময় কী করণীয় তা আমাদের অনেকের কাছেই অজানা। জেনে নিন বজ্রঝড় বা বজ্রপাতের সময় যেসব সতর্কতা অবলম্বন করবেন।

১. বজ্রপাতের সময় কোনো অবস্থাতেই খোলা আকাশের নিচে থাকা যাবে না। আর এমন কোনো পরিস্থিতিতে যদি পড়েই যান তাহলে সঙ্গে সঙ্গে মাটিতে বসে পড়তে হবে। অনেক সময় বজ্রাহত না হলেও উচ্চ শব্দে কানের পর্দা ফেটে যেতে পারে। তাই সম্ভব হলে কানে হাত দিয়ে মাটিতে বসে পড়তে হবে।

২. বজ্রপাতের সময় গাড়িতে বা অটোরিকশায় থাকলে সেখান থেকে বের না হওয়াই ভালো। তবে গাড়ির ধাতব বস্তু স্পর্শ করা যাবে না। আর যদি সম্ভব হয় তাহলে গাড়ি দ্রুত কোনো বারান্দা বা পাকা ছাউনির নীচে নিয়ে যেতে হবে।

৩.এ সময় উঁচু গাছপালা ও বিদ্যুতের লাইন থেকে যতোটা সম্ভব দূরে থাকতে হবে। কারণ উঁচু গাছপালা বা বিদ্যুতের খুঁটির উপরই বজ্রপাত হবার সম্ভাবনা বেশি থাকে।

৪. অনেকে মনে করেন ঘরের ভেতরে থাকলে বজ্রপাত থেকে সে সম্পূর্ণ নিরাপদ। কিন্তু বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এমন ধারণা ভুল। প্রত্যেকটি বাড়ির ছাদে পানির ট্যাংক থাকে। এ ট্যাংকের ওপর বজ্রপাত হলে ওই সময় কেউ যদি কলের পানি ব্যবহার করতে থাকে তখন তারও আক্রান্ত হবার সম্ভাবনা থাকে। কারণ, বজ্রপাতের বিদ্যুৎ পানির মাধ্যমে পরিবাহিত হয়। এছাড়া বজ্রপাতের সময় জানালার স্পর্শ থেকে বিরত থাকতে হবে। কারণ এর মাধ্যমে আক্রান্ত হবার সম্ভাবনা বেশি থাকে।

৫. বজ্রপাত হওয়ার আগ মুহূর্তে কয়েকটি লক্ষণ দেখেই আপনি বুঝতে পরেন। বিদ্যুতের প্রভাবে আপনার চুল খাড়া হয়ে যাবে, ত্বক শিরশির করবে বা বিদ্যুৎ অনুভূত হবে। এসব লক্ষন দেখলেই সতর্ক হয়ে যেতে হবে।

৬. বজ্রপাতের সময় চামড়ার ভেজা জুতা পরে বা খালি পায়ে চলাফেরা করা খুবই বিপজ্জনক। এ সময় রবারের গাম্বুট ব্যবহার করা সবচে’ ভালো।
এ সময় ধাতব বস্তু আংটি, চাবি, কাস্তে, মোবাইল স্পর্শ থেকে বিরত থাকতে হবে। সম্ভব হলে তা নিজের কাছ থেকে অন্তত ৬০ ফুট দূরে রাখতে হবে। তাহলে ঝুঁকি অনেকাংশে কমে যাবে।

৭. বজ্রপাতের ক্ষয়ক্ষতি কমাতে আবহাওয়ার পূর্বাভাস প্রচার ও জনসচেতনতা বাড়াতে হবে। এর পাশাপাশি দেশজুড়ে গাছপালার সংখ্যাও বাড়াতে হবে। এ লক্ষ্যে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর ১০ লাখ তালগাছ লাগানোর পরিকল্পনাও হাতে নিয়েছে।

৮.বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে আবহাওয়া অফিসগুলোর মধ্যে উচ্চপ্রযুক্তির রাডার ও ডফলার রাডার ব্যবহার করতে হবে।

৯. দেশের হাওর এলাকায় বজ্রপাত ও বজ্রঝড়ের প্রবণতা বেশি থাকে। এসব এলাকা চিহ্নিত করে জনসচেতনতা বাড়াতে হবে। বজ্রমেঘ দেখা দেয়ার আধঘন্টার মধ্যে দিক ও সম্ভাব্য স্থান শনাক্ত করে পূর্বাভাস দিতে হবে। এসময় নদীবন্দরগুলোকে দৈনিক ৪ বার পূর্বাভাস দিতে হবে।



মন্তব্য চালু নেই