বইমেলার প্রস্তুতি চলছে পুরোদমে

অমর একুশে বইমেলার বাকি আর কয়েকদিন। চলছে পুরোদমে প্রস্তুতি। ঠক ঠক খট খট শব্দ এখন বাংলা একাডেমি ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যানজুড়ে। ইতোমধ্যে মেলার স্টল ও প্যাভিলিয়ন বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। যারা স্টল পেয়েছেন তারা এখন ব্যস্ত স্টল সাজানোর কাজে।

বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক শামসুজ্জামান খান টেলিফোনে বলেন, এবারও বইমেলা বাংলা একাডেমি ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সম্প্রসারিত হবে। গত বছরে আমাদের স্টল ছিল ৬/৮ ইঞ্চি, এবার সেটা আরও বেড়ে যাচ্ছে। গতবছর রাজনৈতিক কারণে মেলায় দর্শনার্থী কম থাকলেও এবার এমন কোনো আশঙ্কা নেই বলে জানান তিনি।

বাংলা একাডেমি মহাপরিচালক বলেন, আমরা আশা করছি আমাদের দেশের শতাধিক লেখক এবং ১০ থেকে ১২টি দেশের ১৪ থেকে ১৬ জন অতিথি এই সম্মেলনে অংশগ্রহণ নেবেন। প্রথম চারদিন সাহিত্য সম্মেলন হবে। কথাসাহিত্য, কবিতা এবং নাটক এই তিনটি বিষয় নিয়ে আলোচনা হবে।

বাংলা একাডেমির উপপরিচালক ড. মো শাহাদাৎ হোসেন জানান, এখন পর্যন্ত ২২৫টি প্রকাশনীকে ৪১৪টি ইউনিট বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। এর মধ্যে ১২১টি প্রতিষ্ঠানকে এক ইউনিটের স্টল, ৮০টিকে দুই ইউনিটের স্টল এবং ৩৮টি প্রকাশনীকে তিন ইউনিটের স্টল বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। তবে এখনও তালিকা প্রকাশ করা হয়নি। মেলার কাজ চলছে পুরোদমে। আমরা আশা করছি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে সব কাজ শেষ করতে পারবো।

তবে এবার সরকারি প্রকাশনার পাশাপাশি বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন মূল প্রাঙ্গণে জায়গা পাওয়ার ক্ষেত্রে বেশি প্রাধান্য পাবে বলেও জানান তিনি।

শাহাদাৎ হোসেন বলেন, বইমেলায় সব মানুষ যাতে নিরাপদে আসতে পারে এর জন্য নিরাপত্তাব্যবস্থা বরাবরের মতো জোরদার করা হবে। এর পাশাপাশি নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তার জন্য এবালও থাকছে একাধিক ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরা।

তিনি বলেন, এবার ফায়ার ব্রিগেড, রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি, ঢাকা সিভিল সার্জন, মেট্রোপলিটন পুলিশ, র‌্যাব, আনসার, ও বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থাসহ সেবামূলক প্রতিষ্ঠানগুলো সহযোগিতা করবে। এবার বাড়তি মেলায় অগ্নি নিরাপত্তার জন্য সর্বোচ্চ সতর্কতা নেয়া হয়েছে।

মেলার আয়োজক প্রতিষ্ঠান বাংলা একাডেমি জানিয়েছে, ২৫ জানুয়ারির মধ্যেই প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান ও অন্যান্য প্রতিষ্ঠানকে স্টল নির্মাণের যাবতীয় কাজ সম্পন্ন করতে হবে। নির্মাণ করতে কেউ ব্যর্থ হলে স্টল বাতিল করা হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছে একাডেমি।

সোহারাওয়ার্দী উদ্যানে ১৫টি গুচ্ছ আকারে সাজানো হচ্ছে মেলা প্রাঙ্গণ। প্রতিটি গুচ্ছে থাকবে একটি প্যাভিলিয়ন, চার ইউনিটের একটি স্টল, তিন ইউনিটের দুটি স্টল, দুই ইউনিটের সাতটি স্টল এবং এক ইউনিটের আটটি স্টল। প্রতিটি গুচ্ছের প্রবেশমুখে থাকবে প্রকাশনা সংস্থাগুলোর নাম।

মেলার মোট প্রবেশদ্বার যেমন থাকছে চারটি, তেমনিভাবে বের হওয়ার পথও থাকছে চারটি। ভিড় হলেও মেলায় ঢুকতে বা বের হতে যেন ভোগান্তিতে না পড়তে হয় সে জন্যই এ ব্যবস্থা। মেলায় পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা করা হবে স্ট্যান্ড পুলের মাধ্যমে। থাকবে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা।

এবারের বইমেলায় সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের পরিসর বাড়ানো হয়েছে। গতবার যেটি ছিল দেড় লাখ বর্গফুট, সেটি এবার পরিণত হচ্ছে চার লাখ বর্গফুটে। প্রকাশকদের অনুরোধে শিশু কর্নারটিও থাকবে মেলার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের অংশেই।

এবারের মেলায় সর্বমোট ৩৭৮টি প্রকাশনা সংস্থা ও প্রতিষ্ঠান ৬১৮টি ইউনিট এবং ১৫টি প্যাভিলিয়ন নিয়ে বইয়ের পসরা সাজাবে। তবে প্রকাশনা সংস্থা ৩৭৮ থেকে আরও কিছু বেড়ে ৩৯০ হতে পারে বলে জানিয়েছে আয়োজক কর্তৃপক্ষ।

এবার প্যাভিলিয়ন থাকবে ১৫টি, চার ইউনিটের স্টল ১৮টি, তিন ইউনিটের স্টল ৩৮টি, দুই ইউনিটের স্টল ১২৭টি এবং এক ইউনিটের স্টল ১৮০টি। বইয়ের সব স্টল থাকবে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে।

বাংলা একাডেমি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, এশিয়াটিক সোসাইটি, জাতীয় জাদুঘর, বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি, শিশু একাডেমি, জাতীয় গণগ্রন্থাগার, নজরুল ইনস্টিটিউট প্রভৃতি প্রতিষ্ঠানের স্টল থাকবে বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে। তবে বাংলা একাডেমির একটি প্যাভিলিয়ন সোহরাওয়ার্দী উদ্যানেও থাকবে। এ ছাড়াও তাদের অভিধান, পত্রিকা ও শিশুদের বই নিয়ে থাকবে আলাদা স্টল।



মন্তব্য চালু নেই