ফোনে যৌনতা বন্ধ করুন, নয়ত বারবে জটিলতা !

রাত ১টা বাজলেই অমিতের শরীর জুড়ে উত্তেজনা৷ অন্যদিকে রুমা তো ফোন ধরেই না৷ প্রায় ১২ বার কল করে আপাতত, ক্লান্ত হয়ে বুকের হাত বোলাতে বোলাতে রেগে ব্যোম হচ্ছে অমিত৷ রুমা কবে বুজবে? একে তো দেখা হয় না, তার উপর যদি রাতে একটু কথা না হয়, দূর এভাবে প্রেম টিকবে কতদিন?

প্রথমে অমিত এরকম ছিল না৷ কলকাতা ছেড়ে চাকরীর কাজে বেঙালুরুতে যেতেই বদলাতে শুরু করল সে৷ রুমাও ভেবে পায় না, কীভাবে আটকাবে এই সব৷ কারণ রুমা শুনেছে, ‘ফোন সেক্স’ বাজে অভ্যাস৷ তবুও, অমিত কাতর অনুরোধে না করতে পারে না সে৷ অবশ্য প্রথম প্রথম রুমাও পেত মজা৷ গভীর রাতে ফোনের মধ্যে দিয়ে মগজে কল্পনার সঙ্গে হাত মিলিয়ে সে পৌঁছে যেত অমিতের বেডরুমে৷ ফোনের মধ্যে দিয়েই অন্তরঙ্গতা বেড়ে চলা৷

পোশাকের বিবরণ থেকে তারপর ফোনের মধ্যেই শরীরের থেকে সব পোশাক খুলে নেওয়া৷ কথার মধ্যে দিয়ে আপদমস্তক আদর৷ আর সে আদর বাড়তে বাড়তে একেবারে যৌনমিলন৷ প্রতিটি ভঙ্গির নিঃখুত বিবরণ৷ কখনও কোথায় হাত যাচ্ছে, কখন কোথায় যাচ্ছে ঠোঁট, মুখ, যৌনাঙ্গ৷ সবই কথায় কথায় ফোন থেকে সোজা শরীরে৷ ফোনের কথায় কাছে আসা, শেষমেশ স্বমৈথুনের মধ্যে দিয়েই এ যেন দূরে থেকে কাছে আসার ফন্দি৷ ‘ফোন সেক্স’ এমনই এক আদবকায়দা যেখানে এক মুহূর্তের জন্যে ভুলে যাওয়া, প্রিয়মানুষটি দূরে আছে৷ কিন্তু জানেন কি? রুমা-অমিত একা নয়, একরকম অভ্যাসে আসক্ত বহু প্রেমিক-প্রেমিকাই৷ কাজের খাতিরে দূর দেশে পাড়ি দিয়ে প্রিয় মানুষকে কাছে পাওয়ার একটা অভিপ্রায় এই ‘ফোন সেক্স’৷ তবে এই অভ্যাস একেবারেই যে সু-অভ্যাস নয়, তা বলছেন যৌনরোগ বিশেষজ্ঞরা৷ চিকিৎসকদের মতে, ‘ফোন সেক্স’ একটা নেশা৷ এই নেশা যতদিন যায় ততই বাড়তে থাকে৷

ডাক্তারদের কথায়, যৌন দুর্বলতা আনতে পারে এই ধরণের অভ্যাসে৷ এমনকি, লিঙ্গশীতলতা, শীঘ্র পতনের মতো রোগেও আক্রান্ত হতে পারে ফোন সেক্সে৷ তবে উপায় আছে, এর থেকে রেহাই পাওয়ারও৷

১. অভ্যাস ত্যাগ করার জন্য প্রথমেই শক্ত হতে হবে দু’পক্ষকে৷ প্রেমিক চাইলে, প্রেমিকাকে সামলাতে হবে পুরো ব্যাপারটা৷ উলটোটিও ঘটতে পারে৷
২. বেশি রাতে প্রেমিক বা প্রেমিকার সঙ্গে কথা বলা ববন্ধ করুন৷ তাহলে দেখবেন আসতে আসতে ফোন সেক্স বন্ধ হয়ে যাবে৷ প্রিয়জনের সঙ্গে কথা বলুন খোলামেলা জায়গায় দাঁড়িয়ে৷ বাড়ির বারান্দা বা ছাদকে বেছে নিন৷
৩. পরিবার, বন্ধুবান্ধব, সমসাময়িক বিষয় নিয়ে কথা বলুন৷ প্রেমের কথা থাকলেও তাতে যেন যৌনতার উসকানি না থাকে৷
৪. বিয়ের কথা উঠতেই পারে৷ তবে ফুলশয্যার কথা আলোচনা না করে৷ বরং সংসার গোছানোর কথা বলুন৷
৫. সিনেমা, সাহিত্য, গান-বাজনা নিয়ে কথা বলুন৷ দরকার পড়লে গান শুনুন বা শোনান৷
৬. এক টানা কথা না বলে কথার সময়কে ভাগ করে নিন৷ তাহলে দেখবেন খুব সহজেই যৌনতার কথা উঠবে না৷
৭. প্রিয়জনের সঙ্গে কথা বলার সময় ফোনে অল্প পয়সা রিচার্জ করুন৷ যাতে দরকারি কথা শেষ হওয়ার পর নিজেক থেকেই ফোনটা কেটে যায়৷
৮. ফোন সেক্সের নেশা বাড়াবাড়ি পর্যায় গেলে অবশ্যই মনোরোগ বিশষজ্ঞের সঙ্গে দেখা করুন৷
৯. সুস্থ জীবন গড়ে তুলুন৷ প্রোডাক্টটিভ কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়ুন৷
১০. সব শেষে ইচ্ছাশক্তিই বড় শক্তি৷ দু’জনেই দু’জনের সাহায্যে হাত বাড়ান৷ ভালবাসার গল্প হয়ে উঠুক সুখের গল্পের৷ তাতে প্রযুক্তি নির্ভর যৌনতার কালো রং না ধরাই ভাল৷ #সূত্র: অনলাইন



মন্তব্য চালু নেই