ফের গুঞ্জন খালেদার ‘ফেরা না ফেরা’ নিয়ে

লন্ডন সফররত বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার দেশে ‘ফেরা না ফেরা’ নিয়ে দলের ভেতরে-বাইরে নানা কৌতূহলের সৃষ্টি হয়েছে। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীর দেশে ফেরা নিয়ে তির্যক মন্তব্য করছে। খালেদা জিয়া আর দেশে ফিরবেন না এমনও বলেছেন একাধিক মন্ত্রী। তবে বিএনপি প্রধান কবে দেশে ফিরছেন তা এখনো নিশ্চিত নয়।

সর্বশেষ আগামী ২ নভেম্বর তার দেশে ফেরার টিকিট বুকিং দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু ওই দিন লন্ডন বিএনপি আয়োজিত এক সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে বেগম জিয়ার উপস্থিত থাকার কথা। তাই ৩ নভেম্বরও তার দেশে ফেরা হচ্ছে না। এর আগে একাধিকবার টিকিট বুকিং দিয়েও দেশে ফেরেননি খালেদা জিয়া।

এ প্রসঙ্গে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাংবাদিকদের জানান, ‘ম্যাডামের (খালেদা জিয়া) চিকিৎসা শেষ পর্যায়ে। আমরা আশা করছি, নভেম্বরের প্রথমদিকেই তিনি দেশে ফিরবেন। দেশে এসেই তিনি ঐতিহাসিক ৭ নভেম্বর পালন করবেন বলে আশা করছি। অবশ্য সবকিছুই নির্ভর করছে তার চিকিৎসার ওপর।’
বিএনপির আরেকটি সূত্র জানায়, ৭ নভেম্বর লন্ডনে পালন করতে পারেন বেগম জিয়া। ৮ নভেম্বর তার দেশে ফেরার সম্ভাবনা রয়েছে। কিন্তু এটাও নিশ্চিত নয় বলে সূত্রটি দাবি করে।
এর আগে ৮, ১৫ ও ১৯ অক্টোবর দেশে ফেরার টিকিট বুকিং দেওয়া হলেও শেষ মুহূর্তে তা বাতিল করা হয়।
ইতিমধ্যে খালেদা জিয়ার বাম চোখের ছানি অপারেশন করা হয়েছে। ডান চোখে আপাতত অপারেশন করা হবে না। পরবর্তীতে কোনো এক সময় ওই চোখের অপারেশন করার কথা জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। বেগম জিয়ার পায়ের চিকিৎসাও শেষ পর্যায়ে। দু’একদিনের মধ্যেই তার পায়ের চিকিৎসা সম্পন্ন হবে বলে জানা যায়। চোখের চিকিৎসার জন্য খালেদা জিয়া ১৬ সেপ্টেম্বর যুক্তরাজ্য সফরে যান।

এদিকে, মঙ্গলবার লন্ডনে খালেদা জিয়ার একটি সমাবেশ হওয়ার কথা থাকলেও লন্ডন বিএনপির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের মধ্যে অন্তর্দ্বদ্ন্ব থাকায় শেষ পর্যন্ত তা হয়নি। তবে আগামী ২ নভেম্বর বিকালে সমাবেশ করতে তারা একমত হয়েছেন বলে জানা গেছে। সেখানে খালেদা জিয়া ছাড়াও বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের যোগ দেওয়ার কথা। সমাবেশ না হওয়া প্রসঙ্গে লন্ডন বিএনপির এক পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, ওই সমাবেশের চূড়ান্ত কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। তাছাড়া বিএনপি চেয়ারপারসন চিকিৎসা করাচ্ছেন। সবমিলিয়ে মঙ্গলবারের সমাবেশ করা থেকে তারা বিরত থাকেন।

লন্ডন বিএনপির আরেক নেতা একটি সংবাদপত্রকে বলেন, ব্রিটিশ পার্লামেন্ট হাউস অব কমন্সে মঙ্গলবার বাংলাদেশ চ্যাপ্টার নিয়ে শুনানি ছিল। সেখানে আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টির নেতারা অংশ নিলেও বিএনপি সেখানেও যায়নি। এ কারণে সম্ভবত সমাবেশও বাতিল করা হয়েছে।

খালেদা জিয়ার বাংলাদেশে ফেরা নিয়ে চারদফা টিকিট বুকিং দেওয়ার পর তা বাতিল করায় নেতা-কর্মীদের মধ্যে নানা গুঞ্জনের সৃষ্টি হয়েছে। তিনি দেশে না ফেরায় দলের পুনর্গঠন প্রক্রিয়াও থমকে আছে। লন্ডনের দিকে তাকিয়ে বিএনপির উৎসুক নেতা-কর্মীরা। পুনর্গঠনের সঙ্গে জড়িত বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব মো. শাহজাহানও চিকিৎসার জন্য বর্তমানে ব্যাংককে। এক সপ্তাহের মধ্যে তার দেশে ফেরার কথা। বিএনপির স্থায়ী কমিটির এক সদস্য জানান, ম্যাডাম কবে দেশে ফিরবেন- তা এখনো স্পষ্ট নয়। লন্ডন থেকেই দেশের চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি তিনি পর্যবেক্ষণ করছেন। সেখান থেকে বসেই নেতাদের দিক-নির্দেশনা দিচ্ছেন তিনি। তাকে জড়িয়ে সরকার প্রধানের বক্তব্য নিয়েও বিশ্লেষণ করছেন। এ নিয়ে দলের পক্ষে সংবাদ সম্মেলনও করা হচ্ছে তারই নির্দেশনায়। তার বিশ্বাস, সব জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে আগামী মাসের প্রথম সপ্তাহেই বেগম জিয়া দেশে ফিরবেন।



মন্তব্য চালু নেই