ফুলবাড়ী (দিনাজপুর) এর কিছু খবর :

ফুলবাড়ীতে বিদ্যুতের মুল্য বৃদ্ধিতে বেড়েছে সেচ মূল্য বোরো চাষে গুনতে হচ্ছে অতিরিক্ত টাকা

দিনাজপুরের ফুলবাড়ীতে শুরু হয়েছে বোরো রোপনের ভরা মৌসুম। বোরো রোপনের মৌসুম শুরুতেই সরকারের বিদ্যুতের মুল্য বৃদ্ধি করার ঘোষনায় সেচ পাম্প মালিকেরা সেচের মুল্য বৃদ্ধি করেছে। এতে বোরো চাষিদের বিঘা প্রতি ১ হাজার থেকে ১২০০ টাকা বেশি খরচ হচ্ছে।
উপজেলার বারকোনা গ্রামের বোরো চাষি, সৈয়দ সাইফুল ইসলাম জুয়েল বলেন, বোরো রোপনের ভরা মৌসুমে এসে সরকারের বিদুৎ এর মুল্য বৃদ্ধি করার ঘোষনা দেয়ার সঙ্গে সঙ্গে সেচ পম্প মালিকেরা সেচের মূল্য বিঘা প্রতি ১ হাজার থেকে ১২০০ টাকা বৃদ্ধি করেছে। তিনি বলেন গত বছর বিঘা প্রতি সেচের মুল্য ছিল ১৫০০ থেকে ১৮০০ টাকা ।এই বছর বেড়ে প্রতি বিঘা সেচের মুল্য নির্ধারন করেছে ২৫০০ থেকে ২৮০০ টাকা।একই সাথে বাজারে প্রতিটি পণ্যর মুল্য কৃদ্ধি পাওয়ায়, কৃষি মজুরের মুল্যও বৃদ্ধি পেয়েছে গত বছর প্রতিটি কৃষি মজুরের দাম ছিল ২০০ টাকা এই বছর তা বেড়ে দাড়িয়েছে ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা।

এই কথা বলেন ওই গ্রামের কৃষক মোজাম্মেল হক মুকুল, মহসিন আলী সরকার । তারা বলেন এতে করেই গত বছরের তুলুনা এই বোরো চাষ করতে কৃষকদের বিঘাপ্রতি ২ থেকে ২৫০০ টাকা বেশি খরচ হচ্ছে।

জাতীয় ক্ষেত মজুর সমিতির নেতা আমিনুল ইসলাম জানান, বাজারে পণ্যর মুল্য বৃদ্ধি হওয়ায় সরকার চাকুরী জীবিদের বেতন বৃদ্ধি করছে,এতে কৃষক, শ্রমিক শ্রেণীর সাথে বৃত্তবানদের বৈসম্য বৃদ্ধি পাচ্ছে, কিন্তু কৃষক ও শ্রমিক শ্রেণীর উন্নতির দিকে কোন নজর দিচ্ছে না , যার ফলে সমাজের নিম্ন মধ্যবৃত্ত পরিবার গুলে ধবংশ হয়ে যাচ্ছে। এছাড়া বাজার বৈসম্য ও কৃষি উৎপাদন খরছ বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে বার বার কৃষক শ্রেণী লোকশান খাচ্ছে যার কারণে প্রান্তিক চাষিদের জমি চলে যাচ্ছে অকৃষি খাতে।এতে শুধু কৃষকেরই ক্ষতি হচ্ছেনা, কৃষি জমি হারিয়ে যাচ্ছে।

 

পাবর্তীপুরের পাটিকাঘাটে গভীর নলকূপ দখলের চেষ্টা শতাধিক আবাদি জমি সেচ থেকে বঞ্চিত
দিনাজপুরের ফুলবাড়ী উপজেলার পাশ্ববর্তী হামিদপুর ইউনিয়নের পাটিকাঘাট গ্রামে ভুয়া অঙ্গিকারনামা সৃষ্টি করে গভীর নলকূপটি দখলের চেষ্টা। দিনাজপুর আদালতে মামলা দায়ের। শতাধিক আবাদী জমি সেচ থেকে বঞ্চিত। পার্বতীপুর উপজেলার পাটিকাঘাট গ্রামের মৃতঃ মোজাম্মেল হক এর পুত্র মোঃ আমিনুল ইসলাম এর দায়ের কৃত মামলার সূত্রে জানা যায় পাটিকাঘাট মৌজার জে,এল, নং-১৬৫,খতিয়ান নং-৯২, এর মধ্যে ৪০৮ এস.এ রকম দাগের সম্পত্তির মালিক মোঃ আমিনুল ইসলামের শশুর আব্দুল ওহাব মারা গেলে স্ত্রী মোছাঃ উলফা বেগম পিতার ত্যক্ত সম্পত্তি হিসাবে প্রাপ্ত হয়ে দীর্ঘদিন যাবৎ চাষাবাদ করে আসছে উক্ত ৪০৮ দাগের ১৯ শতক সম্পত্তির মধ্যে .০২ শতক জমির উপর গভীর নলকূপ বসিয়েছে। উক্ত গভীর নলকূপের পানি দিয়ে পাটিকাঘাট এলাকার শতাধিক একর জমি চাষাবাদ করে কৃষকেরা এবং জমির মালিক।

এই অবস্থায় ঐ এলাকার শাহিনুর ইসলাম, পিতা মৃতঃ মোঃ আফজাল হোসেন স্থানীয় দলীয় প্রভাব খাটিয়ে ও অর্থের বিনিময়ে নির্বাহী প্রকৌশলী ক্ষুদ্র সেচ বিএডিসিকে প্রভাবিত করে একটি জাল ভূয়া অঙ্গিকারনামা সৃষ্টি করে গভীর নলকূপটি প্রায় দখলের চেষ্টা করেন। গত ১৮ জানুয়ারী রবিবার সকাল ৭টায় উক্ত ব্যক্তিরা বে-আইনী ভাবে দলবদ্ধ হয়ে কুড়াল, ছোড়া, লাঠি নিয়ে শি¶ক মোঃ মামিনুর রশীদ,গংরা ৪০৮ দাগে বসানো গভীর নলকূপের ঘরে প্রবেশ করে গভীর নলকূপটির চালক মোঃ আল আমিন (২৫) কে মোঃ তোফাহার আলী, পিতাঃ মৃতঃ আজাহার আলী, ও শাহিনুর ইসলাম, পিতা মৃতঃ আফজাল হোসেন গভীর নলকূপটির বিভিন্ন যন্ত্রাংশ খুলে চুরি নিয়ে যান যার মূল্য প্রায় ৯০ হাজার টাকা।

এদিকে এলাকার লোকজন মোঃ মাহাবুব আলম পিতা মৃতঃ আব্দুল ওহাব, মোঃ মিনহাজুল হক পিতা মোঃ মোজাম্মেল হক, সাং- পাটিকাঘাট, মোঃ শহিদুল ইসলাম, পিতা মৃতঃ কপিল উদ্দিন, মোঃ আব্দুল হালিম, পিতা- মৃতঃ কপিল উদ্দিন, সাং সুলতানপুর, ও অন্যান্যরা ঘটনাস্থলে এসে দেখেন উলে¬খ্য ব্যক্তিরা গভীর নলকূপটির মালামাল চুরি করে নিয়ে যান।

ঐ দিনেই হামিদপুর ইউপি চেয়ারম্যান ও কয়লা খনির পুলিশ ফাঁড়িতে দায়িত্বরত পুলিশ অফিসারকে জানালে তারা আদালতে মামলা করার পরামর্শ দেন। বর্তমান মোঃ আমিনুল ইসলাম, গভীর নলকুপটি চালু করানোর জন্য কোনো ভাবে তাকে সেখানে ঢুকতে দিচ্ছে না। বর্তমান গভীর নলকূপটি বন্ধ থাকায় এবং মালামাল চুরি করে নিয়ে যাওয়ায় প্রায় ঐ এলাকার শতাধিক কৃষকের আবাদী জমি চাষাবাদ থেকে বঞ্চিত হবে। এদিকে মোঃ আমিনুল ইসলাম গত ১৯-০১-১৫ ইং তারিখে বাদী হয়ে ১ম শ্রেণী জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আমলী আদালত-৮ দিনাজপুরে ১৩ জনকে আসামী করে একটি মামলা দায়ের করেন।

পার্বতীপুর মডেল থানায় দায়েরকৃত মামলা নং ২৩, তারিখ ২৫-০১-২০১৫ ধারা ১৪৩/১৪৭/৩২৩/৩৭৯/৫০৬/৩৪ দন্ডবিধি। এদিকে মামলার আসামী মোঃ মামিনুর রশীদ একজন স্কুল শি¶ক হয়ে রাজনীতিতে জড়িয়ে বিভিন্নভাবে হয়রানী করছেন মামলার বাদী মোঃ আমিনুল ইসলামকে। তারা দূদ্ধাš— প্রকৃতির লোক ০৫ ই জানুয়ারী ২০১৪ ইং তারিখে সংসদ নির্বাচন চলাকালীন ব্যালট বাক্স ছিনতাই ও পোড়ানো দায়ে তাদের বির“দ্ধে মামলা রয়েছে। আরও উলে¬খ্য থাকে যে উক্ত গভীর উপর দিনাজপুর জেলার দায়রা জজ আদালত ও মহামান্য হাইকোর্ট থেকে অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা ও স্থীর অবস্থা বহাল রয়েছে।

 

পার্বতীপুর সাওতাল পল্লীতে বাড়িঘর হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় তিন সদস্যের কমিটি গঠন
পার্বতীপুরে হাবিবপুর-চিড়াকুটা আদিবাসী পল্লীর সাঁওতালদের বাড়িঘরে হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।

মঙ্গলবার (২৭ জানুয়ারি) অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট তৌহিদুল ইসলামকে আহ্বায়ক করে দিনাজপুর জেলা প্রশাসন এ তদন্ত কমিটি গঠন করেন। তদন্ত কমিটিকে ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।

পার্বতীপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাহেনুল ইসলাম জানান, উপজেলার হাবিবপুর চিড়াকুটা আদিবাসী পল্লীর সাঁওতালদের বাড়ি-ঘরে হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় দিনাজপুরের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) তৌহিদুল ইসলামকে আহবায়ক করে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।

কমিটির অপর দুই সদস্য হলেন, সহকারী পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) সুশান্ত সরকার ও পার্বতীপুর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) জাহাঙ্গির আলম। ২৭ জানুয়ারি দিনাজপুর জেলা প্রশাসক আহমদ শামীম আল রাজী এ তদন্ত কমিটি গঠন করেন। কমিটিকে ১৫ দিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে ।

পার্বতীপুর উপজেলার মোস্তফাপুর ইউনিয়নের হাবিবপুর চিড়াকুটা সাঁওতাল পল্লীর মোসেফ টুডু, বার্নাবাস টুডু, হাবিল টুডু, যোশেফ টুডুসহ ২০/২৫টি সাঁওতাল পরিবারের সঙ্গে প্রায় ২০ একর জমি নিয়ে পার্শ্ববর্তী অসুলকোট শালাইপুর গ্রামের জহুরুল ইসলাম গংদের দীর্ঘদিন থেকে বিরোধ চলে আসছিল।

গত শনিবার (২৪ জানুয়ারি) সকালে জহুরুল ইসলাম ও তার ছেলে সোহাগ বিরোধপূর্ণ জমিতে ইরি-বোরো রোপনের জন্য শ্যালো মেশিন দিয়ে সেচ দেওয়ার সময় মোসেফ টুডু ও যোশেফ টুডুর নেতৃত্বে একদল সাঁওতাল এসে বাধা দিলে উভয় পক্ষে হাতাহাতি শুরু হয়। এক পর্যায়ে কয়েকজন সাঁওতাল তীর ধনুক নিয়ে প্রতিপক্ষের ওপর হামলা করে। সাঁওতালদের ছোঁড়া তিনটি তীর সোহাগের বুকে, পিঠে ও হাতে বিদ্ধ হলে ঘটনাস্থলেই তিনি নিহত হয়। এসময় ছেলেকে বাঁচাতে গিয়ে বাবা জহুরুল হক গুরুত্বর আহত হয়। তাকে উদ্ধার দিনাজপুর মেডিকেল কলেজ (দিমেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

হত্যাকান্ডের ঘটনায় ওই দিন রাতেই নিহতের চাচা মাহমুদুল হক বাদী ২৮ জন আদিবাসি সাঁওতালের নাম দিয়ে এবং অজ্ঞাতনামা আরও ১৪/১৫ জনকে আসামি করে থানায় একটি হত্যা মামলা করেছে। এরমধ্যে ১৯ জনকে গ্রেফতার করা হয়। তবে সাঁওতালদের পক্ষ থেকে গত চার দিনেও থানায় কেউ মামলা দিতে আসেনি। এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করায় অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে সেখানে অস্থায়ী ক্যাম্প করে ২০ সদস্যের পুলিশের একটি দল সার্বক্ষণিক মোতায়েন রাখা হয়েছে।



মন্তব্য চালু নেই