দিনাজপুরের ফুলবাড়ির কিছু খবর

ফুলবাড়ীতে বিক্ষোভ ও স্মারকলিপি প্রদান

দিনাজপুরের ফুলবাড়ীতে আজ রোববার তেল-গ্যাস খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ বন্দর রক্ষা কমিটির ফুলবাড়ী শাখার উদ্যগে বেলা ১২টায় প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মরকলিপি প্রদান ও বিক্ষোভ মিছিল করেছে।
এশিয়া এনার্জির প্রধান গ্যারি এন লাইকে গ্রেফতার করে বিচারের মুখোমুখি করার , এশিয়া এনার্জির ফুলবাড়ী অফিস উচ্ছেদ , অন্দোলনকারী নেতাদের নামে হয়রানী মূলক মামলা প্রত্যাহার এবং ফুলবাড়ীবাসীর সঙ্গে ২০০৬ সালে সম্পাদিত ৬ দফা চুক্তি বাস্তবায়নের দাবীতে তেল-গ্যাস খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটি ফুলবাড়ী শাখার এই স্মারকলিপি প্রদান ও বিক্ষোভ মিছিল করে।
সকাল ১১টায় স্থানীয় নিমতলা মোড় দলীয় কার্যালয় থেকে মিছিলটি বের হয়। বিক্ষোভ মিছিলটি পৌর শহর প্রদক্ষিণ করে উপজেলা চত্বরে এসে সমাবেত হয়। এ সময় উপজেলা নির্বাহী অফিসারের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করেন। স্মারকলিপিটি তেল গ্যাস খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির ফুলবাড়ী শাখার আহবায়ক সৈয়দ সাইফুল ইসলাম জুয়েল উপজেলা নির্বাহী অফিসার মনিরুজ্জামানের নিকট জমা দেন। এ সময় তেল গ্যাস খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ বন্দর রক্ষা কমিটির ফুলবাড়ী শাখার সদস্য সচিব জয়প্রকাশ গুপ্ত, সাবেক সদস্য সচিব এসএম নুরুজ্জামান, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম বাবলুসহ সকল নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
তেল গ্যাস খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ বন্দর রক্ষা কমিটির আহবায়ক সৈয়দ সাইফুল ইসলাম জুয়েল ও সদস্য সচিব জয়প্রকাশ গুপ্ত স্বাক্ষরিত স্মারকলিপি সূত্রে জানা গেছে, আগামী ২৬ ডিসেম্বর মধ্যে উল্লেখিত দাবী পূরণ না হলে ২৭ ডিসেম্বর ২০১৪ তারিখে ফুলবাড়ীতে মহা-সমাবেশ ডেকে গণ আন্দোলনের কর্মসূচী ঘোষণা করার আল্টিমেটাম দিয়েছেন। স্মারকলিপি প্রদান শেষে বিক্ষোভ মিছিলটি পুনরায় নিমতলা মোড়ে এসে শেষ হয়। মিছিল শেষে দলীয় কার্যালয়ের সামনে এক পথসভা অনুষ্ঠিত হয়। পথসভায় বক্তারা বলেন, ২০০৬ সালের ২৬ আগস্ট এশিয়া এনার্জির প্রস্তাবিত উন্মুক্ত পদ্ধতিতে কয়লা খনি প্রকল্প বাস্তবায়নের প্রতিবাদে ২০০৬ সালের ২৬ আগস্ট লক্ষাধিক জনতার বিক্ষোভ সংঘঠিত হয়েছিল। সেই দিন রাজপথ রক্তে রঞ্জিত হয়েছিল, ২০ জন গুলিবিদ্ধ, ২ শতাধিক আহত এবং ৩ জন শহীদের রক্তের কাছে হার মেনে তৎকালীন সরকার আন্দোলনকৃত জনতার সাথে ৬দফা চুক্তি স্বাক্ষর করতে বাধ্য হয়েছিল। আবারও যদি জনগণের সেই দাবী পূরণ না হয় আবারও গণ আন্দোলনের মাধ্যমে ফুলবাড়ীবাসীর সঙ্গে সম্পাদিত ৬ দফা চুক্তি বাস্তবায়ন করতে সরকারকে বাধ্য করা হবে বলে হুশিয়ারী করেন।
ফুলবাড়ীতে অপহৃত সানজিদা এখনও উদ্ধার হয়নি
দিনাজপুরের ফুলবাড়ী থেকে মাদ্রাসায় পড়ুয়া ছাত্রী উপজেলার বাজিদপুর গ্রামের মোঃ আব্দুল জব্বারের কন্যা সানজিদা আক্তার আশা (১২) অপহরনের ৪দিন পরেও পুলিশ উদ্ধার করতে পারেননি।Phulbari Sanjida Apohoron-14.12.2014মামলা সূত্রে জানা যায়, গত ০১ লা ডিসেম্বর মাদ্রাসায় যাওয়ার পথে আশা নিরুদ্দেশ হন। বিকেলে মাদ্রাসা থেকে বাড়ীতে ফিরে না আসায় পরিবারের লোকজন আত্মীয়য়-স্বজন ও বিভিন্ন স্থানে খোঁজ করেও আশাকে না পেয়ে বাবা আব্দুল জব্বার গত ০৮ ডিসেম্বর ফুলবাড়ী থানায় একটি সাধারণ ডাইরি দায়ের করেন। পরবর্তীতে গত ১১ ডিসেম্বর ফুলবাড়ী থানায় ২০০০ সালের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন (সংশোধনী/০৩) এর ০৭/৩০ ধারায় ৪ জনকে আসামী করে মামলা দায়ের করেন।
আসামীরা হলেন- (১) মোঃ আমিনুল ইসলাম (২৭), পিতা-আব্দুল কাদের চৌকিয়াপাড়া, ফুলবাড়ী, দিনাজপুর, (২) আব্দুল কাদের (৫৫) পিতা-মৃতু: তফিজ উদ্দীন, (৩) মোছাঃ রোকেয়া বেগম (৪৫), স্বামী- মোঃ আব্দুল কাদের, (৪) মোছাঃ লুৎফা বেগম(২৫), স্বামী- মোঃ নবিউল ইসলাম, সর্ব সাং-চৌকিয়াপাড়া (আদমপুর), থানা-ফুলবাড়ী, জেলা: দিনাজপুর।
উল্লেখ্য যে, মেয়ে অপহরনের পর তার পিতাকে এলাকাবাসী জানান গত ০১ লা ডিসেম্বর একই গ্রামের মোঃ মকলেছুর রহমান পিতা-মোঃ তছির উদ্দীন গ্রাম-বাজিদপুর, উপজেলা-ফুলবাড়ী, দিনাজপুর। তার সহযোগিতায় এবং আসামীদের নিকট থেকে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে আব্দুল জব্বারের কন্যা মোছা: সানজিদা আক্তার আশা কে উপজেলার বেতদিঘী ইউপির চৌকিয়াপাড়া (আদমপুর) গ্রামের আব্দুল কাদের পুত্র আমিনুল (২৭) এর হাতে তুলে দেন বলে জানান। ফুলবাড়ী থানার পুলিশ মামলা দায়ের এর ৪ দিন অতিবাহিত হলেও আব্দুল জব্বারের কন্যাকে উদ্ধার করতে পারেনি। আশার পিতা মোঃ আব্দুল জব্বার মেয়ে উদ্ধারের জন্য পুলিশ প্রশাসনের উর্ধতন কর্তপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

ফুলবাড়ীতে ১৪ বছরেও শেষ হয়নি ভূমি জরিপের কাজ
দিনাজপুরের ফুলবাড়ীতে সেটেলমেন্ট অফিসে দেখা দিয়েছে জনবল সংকট। জনবল সংকটের কারনে মন্ত্রগতিতে এগোচ্ছে জরিপ কাজ গত ১৪ বছরেও শেষ হয়নি জরিপ কাজ।
সেটেলমেন্ট অফিস সুত্রে জানা গেছে ,উপজেলার ৭টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভা এলাকায় মোট ১৬৯টি মৌজার ১৪০টি মৌজা পড়ে রয়েছে ৩০ ধারার আপত্তি শুন্য স্তরে, ২৪টির এখনো ২৯ ধারা ড্রাপ পাপলিকেশন(ডিপি) এর কাজ হয়নি, ৫টিতে কেবল চলছে ২৮ ধারার তশদিক স্তরের কাজ।
সহকারী সেটেলম্যান্ট কর্মকর্তা আফসার আলী জানান, বর্তমানে ফুলবাড়ী অফিসে তিনিসহ ২জন কর্মকর্তা ১জন পেশকার ও ১জন সার্ভেয়ার কর্মরত আছেন, তারা দু’জনে পৌর এলাকার সবচেয়ে গুরুত্ব পূর্ণ এলাকা হিসাবে চিহ্নিত কাটাবাড়ী ও গৌরীপাড়া মৌজার তশদিক স্তরের কাজ করছেন। এই দুই মৌজার উপরে ফুলবাড়ী পৌরশহর অবস্থিত হওয়ায়, ১৬ ইঞ্চির ম্যাপের পরিবর্তে ৬৪ ইঞ্চি ফ্রিসেটে ম্যাপ তৈরী করা হয়েছে, যার কারনে ভুমি মালিকেরা হাফ শতক, পোয়া শতকের পর্চা পাচ্ছেন। একারণে এই দুই মৌজায় অনেক গুলো আপত্তি কেস ও বদর কেস জমা পড়েছে। সেগুলো শুনানীতে হিমসীম ক্ষেত হচ্ছে কর্মকর্তাদের।
এদিকে সেটেলমেন্ট অফিসে কর্মকর্তা/কর্মচারী সংকট থাকায় ডিসপোর্ট মামলাগুলি নিষ্পত্তির জন্য
নোটিশ জারীসহ নানা কাজে বিড়ম্বনার সৃষ্টি হচ্ছে। যার কারণে কাজের গতি দিন দিন নিম্ন গতি হয়ে পড়েছে। তিনি বলেন এ অফিসে আরো দুইজন কর্মকর্তা, দুইজন পেশকার, দুইজন শিকলবাহক, একজন সার্ভেয়ার ও দুইজন জারীকারক এর পদ থাকলেও সেগুলো দীর্ঘদিন থেকে শূন্য রয়েছে। যার ফলে ১৪ বছরেও শেষ হয়নি ভূমি জরিপের কাজ।
এদিকে অভিযোগ উঠেছে উপজেলার ৬৯টি মৌজার মধ্যে ১৩টি মৌজার কাজ ইতিমধ্যে শেষ হয়েছিল কিন্তু রাজনৈতিক বিবেচনায় ঐ ১৩টি মৌজার মধ্যে বিশেষ পারমিশন কেস দায়ের হওয়ায় সেগুলো এখন আপত্তি স্তরে ফিরে এসেছে। স্থানীয় জনসাধারণের দাবী যত তাড়াতাড়িসেটেলমেন্টের ভূমি জরিপের কাজ শেষ হবে তত তাড়াতাড়ি ভূমি সংক্রান্ত জটিলতা ও মালিকানা বিরোধ নিষ্পত্তি হয়ে যাবে এজন্য সেটেলমেন্ট অফিসের শূন্য পদে কর্মকর্তা/কর্মচারী নিয়োগ দিয়ে এই উপজেলার ভূমি জরিপের কাজ শেষ করার দাবী জানিয়েছেন উপজেলার ভূমি মালিকগণ।



মন্তব্য চালু নেই