ফিলিপাইনে মাদকবিরোধী অভিযানে নিহতের সংখ্যা ৬ হাজার ছাড়িয়েছে

ফিলিপাইনে সন্দেহভাজন মাদক ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে চলমান অভিযানে সর্বশেষ নিহতদের মধ্যে রয়েছে ৬ বছরের এক শিশুও। ঘুমন্ত অবস্থাতেই গুলি করে হত্যা করা হয়েছে এই শিশুকে।

শিশুটির মা এলিজাবেথ নাভারো ঘটনার বর্ণনায় বলেছেন, কে যেন দরজায় টোকা দিল। আমার স্বামী বললো, কে? এরপরই দুটি গুলির শব্দ শুনলাম।

এলিজাবেথ যতক্ষণে বুঝলেন আসলে কী হচ্ছে তার ঘরে, ততক্ষণে তার স্বামী ডমিনগো মানোস্কা এবং ছেলে ফ্রাঙ্কিস আর নেই। দরজায় যারা টোকা দিয়েছিলেন তারাও চলে গেছেন।

জুনে ক্ষমতা নেয়ার পর থেকে ফিলিপাইনের প্রেসিডেন্ট রদ্রিগো দুতের্তে মাদকের বিরুদ্ধে ভয়াবহ এক ‘যুদ্ধ’ চালিয়ে যাচ্ছেন। সিএনএনের খবরে বলা হয়েছে, এখনো পর্যন্ত এতে নিহতের সংখ্যা ৫ হাজার ৯০০-এর বেশি।

তবে আল-জাজিরার খবরে বলা হয়েছে, নিহতের সংখ্যা অন্তত ৬ হাজার ১০৮।

গেল সোমবার দুতের্তে নিজেই জানিয়েছেন, দাভাও শহরের মেয়রের থাকাকালীন সময়ে তিনি নিজ হাতেই সন্দেহভাজন মাদকব্যবসায়ীদের হত্যা করেছেন।

সমালোচকরা বিষয়টিকে গণহত্যার সঙ্গে তুলনা করে প্রেসিডেন্টের অভিশংসন দাবি করছেন।

বলা হচ্ছে, এখনো পর্যন্ত নিহতদের দুই-তৃতীয়াংশই বিচার বহির্ভূত বা প্রতিহিংসামূলক হত্যাকাণ্ডের শিকার। বাকিরা নিহত হয়েছেন পুলিশের অভিযানে। ৪০ হাজারের বেশি গ্রেফতার হয়েছেন।

অভিযোগ রয়েছে, মাদকবিরোধী অভিযানের নামে দুতের্তে রাজনৈতিকভাবে তার বিরোধীদের দমন করছেন।

বৃহস্পতিবারও একটি পত্রিকাকে দুতের্তে বলেছেন, দুর্নীতিবাজ রাজনীতিবিদ, যারা এখনো বহাল তবিয়তে রয়েছেন, তাদের হয় পদত্যাগ করতে হবে নয়তো মরতে হবে।

জনমতামতে প্রতিফলিত হচ্ছে, ফিলিপিনোদের বেশিরভাগই দুতের্তের এই ‘যুদ্ধ’ সমর্থন করেন। তারা মনে করছেন, এতে তারা আগের চেয়ে নিরাপদ বোধ করছেন। কিন্তু ম্যানিলার মানুষে গিজগিজে রাস্তা বা বস্তির কেউ এসব হত্যাকে সমর্থনযোগ্য মনে করেন না।

এক নারী বলেছেন, এরা ডানে-বামে সবদিকে মারছে। কোনো কোনো দিনে তার ১০ থেকে ২০ জনকেও হত্যা করে। আমি খুব ভয়ে আছি। কে যে এখন শত্রু, কে না কিছুই এখন বোঝা যায় না।



মন্তব্য চালু নেই