ফাঁকা মাঠে জোর করে ছাত্রীকে গণধর্ষণ

সরস্বতীর পুজোর রাতে বান্ধবীর সঙ্গে ঠাকুর দেখতে বেরিয়েছিল দশম শ্রেণির পড়ুয়া, বছর পনেরোর মেয়েটি। সঙ্গে ছিল বান্ধবীর পরিচিত দুই যুবকও। শনিবার রাতে এলাকায় বেশ কয়েকটি মণ্ডপেও তাদের ঘুরতেও দেখেছেন এলাকার লোকজন।

অভিযোগ, বাড়ি ফেরার পথে নদিয়ার তাহেরপুর এলাকার একটি ফাঁকা মাঠে জোর করে দুই কিশোরীকে নিয়ে যায় স্থানীয় ওই দুই যুবক। সঙ্গের কিশোরী কোনও রকমে পালিয়ে এলেও আসতে পারেনি দশম শ্রেণির ওই পড়ুয়া। ফাঁকা মাঠে আশিস পাড়ুই ও হিমালয় বিশ্বাস নামে ওই দুই যুবক মেয়েটিকে গণধর্ষণ করে। সঙ্গের মেয়েটি কিছুটা দূরে পালিয়ে গিয়ে বাড়িতে ফোন করে বিষয়টি জানায়। পরে বাড়ির লোকজন ও প্রতিবেশীরা এসে ওই দু’জনকে উদ্ধার করে।

রবিবার সকালে ওই কিশোরীর পরিবারের তরফে তাহেরপুর থানায় একটি গণধর্ষণের মামলা রুজু করা হয়েছে। ওই কিশোরীর বান্ধবীর পরিবার থেকে একটি শ্লীলতাহানির মামলাও রুজু করেছে। পুলিশ জানিয়েছে, অভিযুক্তদের খোঁজে তল্লাশি চলছে। রবিবার ওই ছাত্রীর মেডিক্যাল পরীক্ষাও করানো হয়েছে। জেলা পুলিশের এক কর্তার কথায়, ‘‘গণধর্ষণ ও শ্লীলতাহানির মামলা রুজু করা হয়েছে। এই ঘটনা পূর্বপরিকল্পিত কি না সেটাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, তাহেরপুর এলাকায় বেশ কয়েকটি সরস্বতী পুজো হয়। ওই ছাত্রীর বাড়ি থেকে সামান্য দূরেই তার বান্ধবীর বাড়ি। শনিবার সন্ধ্যায় প্রথমে ওই দু’জন বাড়ি থেকে বেরোয়। রাস্তায় দেখা হয় আশিস ও হিমালয়ের সঙ্গে। বান্ধবীর পরিচিত বলে ওই ছাত্রীও তাদের সঙ্গে যেতে তেমন আপত্তি করেনি। বেশ কয়েকটি মণ্ডপে তারা একসঙ্গে ঠাকুরও দেখে। গোল বাধে বাড়ি ফেরার সময়। ওই ছাত্রীর অভিযোগ, ‘‘বাড়ি ফেরার সময় ওরা আমার সঙ্গে খারাপ আচরণ শুরু করে। নিষেধ করলেও শোনে না।

তারপর অন্ধকারে একটি মাঠে ওরা আমাদের জোর করে টানতে টানতে নিয়ে যায়।’’ ওই ছাত্রীর বান্ধবীর কথায়, ‘‘আমি কোনও রকমে পালিয়ে এসে গ্রামে ফোন করেছিলাম। বিশ্বাস করেই ওদের সঙ্গে বেরিয়েছিলাম। কিন্তু ওরা যে এমন কাণ্ড করবে তা ভাবতেও পারছি না।’’

এ দিকে বেশ রাত হয়ে গিয়েছে। অথচ মেয়ে বাড়ি ফিরছে না দেখে দুশ্চিন্তায় পড়েন ওই ছাত্রীর বাড়ির লোকজন। ওই ছাত্রীর বান্ধবীর ফোনে বিষয়টি জানতে পারেন এলাকার মানুষ। পরে ওই দু’জনকে উদ্ধার করে বাড়িতে নিয়ে আসেন তাঁরা। এলাকার লোকজনকে আসতে দেখে চম্পট দেয় ওই দুই যুবক।

স্থানীয় কাউন্সিলর গোবিন্দচন্দ্র পোদ্দার বলছেন, ‘‘ভয়ঙ্কর ঘটনা। এমনটা হলে তো কাউকে বিশ্বাস করার আগেও দু’বার ভাবতে হবে। অভিযুক্তদের ধরে পুলিশ যেন দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেয়।’’ ওই ছাত্রীর বাবা পেশায় ভ্যানচালক। তিনি বলছেন, ‘‘অভাবের সংসার। খুব কষ্ট করে মেয়েকে লেখাপড়া শেখাচ্ছি। সরস্বতী পুজোয় ঘুরতে যাচ্ছে বলে তেমন বাধাও দিইনি। কিন্তু এমনটা যে হয়ে যাবে কে জানত!’’ আনন্দবাজার



মন্তব্য চালু নেই