ফল বিপর্যয়ের তিন কারণ

দেশের ১০ শিক্ষা বোর্ডের মাধ্যমিক (এসএসসি) ও সমমানের পরীক্ষার ফল প্রকাশ করা হয়েছে বৃহস্পতিবার (৪ মে) দুপুরে। আগের বছরের তুলনায় এবার কমেছে পাসের হার ও জিপিএ-৫ এর সংখ্যা। এর জন্য তিনটি কারণকে চিহ্নিত করেছেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ। নতুন পদ্ধতিতে উত্তরপত্র মূল্যায়ন, প্রশ্নফাঁস রোধ এবং পরীক্ষাকেন্দ্রে কড়াকড়ির কারণে গত বছরের চেয়ে এবার কম পাস করেছে বলে মনে করেন তিনি।

দুপুরে সচিবালয়ে পরীক্ষার ফলাফল নিয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে মন্ত্রী বলেন, ‘পরীক্ষার ফল বিপর্যয়ের মূল কারণ হচ্ছে নতুন পদ্ধতিতে উত্তরপত্র মূল্যায়ন। প্রশ্নফাঁস রোধ ও পরীক্ষাকেন্দ্রে কড়াকড়ির কারণেও আগের বছরের চেয়ে কম পাস করেছে। এছাড়াও ছোটখাটো আরো অনেক কারণ আছে। তবে ফলাফল বিপর্যয় মনে হলেও, মূলত এ বছর সঠিক মূল্যায়ন হয়েছে।’

খাতা মূল্যায়ন নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘পরীক্ষা মূল্যায়নে আগে কোনো পদ্ধতি ছিল না। শত শত বছর এভাবেই চলে আসছে। কিন্তু আমরা চিন্তা করলাম এটাকে একটি পদ্ধতির মধ্যে আনা দরকার। শিক্ষকদের খাতা মূল্যায়নের ক্ষেত্রেও অনেক তারতম্য হচ্ছে। দেখা গেছে, একই খাতা একজন দেখে এক রকম নম্বর দিচ্ছেন। আবার আরেকজন শিক্ষক সেটা দেখে আরেক রকম নম্বর দিচ্ছেন। গত তিনবছর এটা নিয়ে গবেষণা করেছি। অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়েছি। এবার আমরা চালু করেছি, প্রধান পরীক্ষককে ১২ শতাংশ খাতা দেখতে হবে। আগে তারা খাতা না দেখেই মতামত দিতেন। কিন্তু এখন আর সে সুযোগ নেই।’

‘এবার আমরা শিক্ষকদের খাতা দেখার বিষয়ে প্রশিক্ষণও দিয়েছি। নম্বর দেওয়ার ক্ষেত্রে একটি স্ট্যান্ডার্ড নিয়ম ফলো করার বিষয়ও অনুসরণ করা হয়েছে। এসব কারণে এবার খাতা দেখার ক্ষেত্রে সঠিক মূল্যায়ন হয়েছে’, বললেন শিক্ষামন্ত্রী। এক-দুই নম্বরের পার্থক্য থাকতে পারে। কিন্তু সেই রকম কোনও পার্থক্য এবার হয়নি।’

সংবাদ সম্মেলনে কুমিল্লা বোর্ডের ফল বিপর্যয় নিয়েও আলোচনা হয়েছে। এ বিষয়ে শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মো. অলিউর রহমান বলেন, ‘গত বছর পাসের হার ছিল ৮৪ শতাংশ, কেন ৫৯ শতাংশ হলো তার একটি পর্যবেক্ষণ নিয়েছি। বিজ্ঞান, মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষায় শিক্ষার্থীদের মধ্যে ইংরেজিতে ফেল করেছে ২৫ হাজার ৬০৬ জন। গণিতে ৩৪ হাজার ৯৮৯ জন। এই দুটো বিষয়ে কোন কোন বিদ্যালয়ে এমনটি হয়েছে তা খতিয়ে দেখার ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এছাড়া মানবিকে, ব্যবসায় শিক্ষায় সামান্য বিপর্যয় হয়েছে।’

এবার দেখে নেয়া যাক কোন বোর্ডে পাসের হার কত-

রাজশাহী শিক্ষা বোর্ড : পাসের হার ৯০ দশমিক ৭০ শতাংশ।

ঢাকা শিক্ষা বোর্ড : পাসের হার ৮৬ দশমিক ৩৯ শতাংশ।

দিনাজপুর শিক্ষা বোর্ড : পাসের হার ৮৩ দশমিক ৯৮ শতাংশ।

চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ড : পাসের হার ৮৩ দশমিক ৯৯ শতাংশ।

সিলেট শিক্ষা বোর্ড : পাসের হার ৮০ দশমিক ২৬ শতাংশ।

যশোর শিক্ষা বোর্ড : পাসের হার ৮০ দশমিক শূন্য ৪ শতাংশ।

বরিশাল শিক্ষা বোর্ড : পাসের হার ৭৭ দশমিক ২৪ শতাংশ।

কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ড : পাসের হার ৫৯ দশমিক শূন্য ৩ শতাংশ।

এ ছাড়া মাদ্রাসা বোর্ডে (দাখিল) পাসের হার ৭৬ দশমিক ২০ শতাংশ এবং কারিগরি বোর্ডে (ভকেশনাল) ৭৮ দশমিক ৬৯ শতাংশ।



মন্তব্য চালু নেই