ফরিদপুরের সালথায় কর্মসৃজন প্রকল্পের কাজে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ

ফরিদপুরের সালথা উপজেলার গট্টি ইউনিয়নে ২০১৪-১৫ অর্থ বছরে অতিদরিদ্রের জন্য কর্মসংস্থান (ইজিপিপি) কর্মসুচির ২য় পর্যায় প্রকল্পের কাজে ব্যাপক অনিয়ম চলছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এ ব্যাপারে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অধিদপ্তর থেকে ওই ইউনিয়নের চেয়ারম্যানকে সতর্ক বার্তা পাঠানো হয়েছে। জানা গেছে, গত ১৮ এপ্রিল (শনিবার) থেকে এ প্রকল্পের কাজ শুরু হয়। কাজ শুরুর পর থেকেই ব্যাপক অনিয়ম চলছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এই ইউপিতে মোট ৯টি প্রকল্পে ২৯৫ জন শ্রমিক বরাদ্দ দেয়া হলেও কাজ করছে মাত্র ১৪৫ জন শ্রমিক।

সংশ্লিষ্ট ইউপি চেয়ারম্যানের ছেলে, ট্যাক অফিসার ও প্রকল্প পিআইসি যোগসাজসে এসব প্রকল্পের বরাদ্দকৃত শ্রমিকের টাকা লুটপাট করার চেষ্টা করছে। গতকাল বুধবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, ইউনিয়নের কানাইড় শহীদ সেকের বাড়ি হতে কদর সেকের বাড়ি পর্যন্ত রাস্তা নির্মান কাজে বরাদ্দকৃত ৩২ জন শ্রমিকের মধ্যে মাত্র ১১ জন শ্রমিক কাজ করছেন, দিয়াপাড়া পাকা সড়ক হতে ছবুর মাতুব্বরের বাড়ি পর্যন্ত রাস্তা পূর্ন-নির্মাণ কাজে ২৫ জন শ্রমিকের মধ্যে মাত্র ১০ জন, ভাবুকদিয়া মোমরেজের বাড়ি হতে আয়নাল মাতুব্বরের বাড়ি পর্যন্ত রাস্তা নির্মাণ কাজে ৫৬ জন শ্রমিকের মধ্যে মাত্র ১২ জন, লক্ষনদিয়া সালাম মোল্যার বাড়ি হতে খলিলের বাড়ি পর্যন্ত রাস্তা নির্মাণ কাজে ২৫ জন শ্রমিকের মধ্যে মাত্র ১২ জন, বালিয়া রওশন সেকের বাড়ি হতে দক্ষিনপাড়া জামে মসজিদ পর্যন্ত রাস্তা নির্মাণ কাজে ৩০ শ্রমিকের মধ্যে মাত্র ১২ জন, আগুলদিয়া-ফুকরা বাদশাহী রাস্তা হতে ধীরেন মাস্টারের বাড়ি পর্যন্ত রাস্তা নির্মাণ কাজে ২৫ জন শ্রমিকের মধ্যে ১৫ জন, সিংহপ্রতাপ পাকা রাস্তা হতে আব্দুল মোল্যার বাড়ি পর্যন্ত রাস্তা নির্মাণ কাজে ৩০ শ্রমিকের মধ্যে ২৩ জন, ভাবুকদিয়া মোতালেব মোল্যার বাড়ি হতে মো‏হাম্মাদ খানের বাড়ি পর্যন্ত ২৫ জন শ্রমিকের মধ্যে ১৮ জন ও দ্বাড়িয়াকান্দি গোরস্থান হতে পাকা রাস্তা হয়ে মীরের বাড়ি পর্যন্ত ৪৭ জন শ্রমিকের মধ্যে ৩২ জন শ্রমিক কাজ করছেন । এছাড়া ভাবুকদিয়া ও দিয়াপাড়া এই ২টি প্রকল্পে ভুয়া পিআইসির নাম দিয়ে কাজ করানো হচ্ছে।

এসব প্রকল্পের একাধিক পিআইসি অভিযোগ করে জানান, তাদের প্রত্যেক প্রকল্প থেকে ৭ থেকে ৮ জন শ্রমিকের বিল উত্তোলন করে সংশ্লিষ্ট চেয়ারম্যানের ছেলে পাবেল রায়হানকে দিতে হবে বলে চুক্তি রয়েছে। যে কারনে প্রত্যেক প্রকল্পে শ্রমিকের সংখ্যা কম রয়েছে। তবে চেয়ারম্যানের ছেলে পাবেল রায়হান বলেন, বৃষ্টির কারণে শ্রমিক পাওয়া যাচ্ছে না বলে শ্রমিকের সংখ্যা কিছু কিছু কম আছে।

অনিয়মের সত্যতা স্বীকার করে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা লিয়াকত হোসেন বলেন, আমি এব্যাপারে সংশ্লিষ্ট চেয়ারম্যান ও পিআইসিদের চিঠি দিয়ে সংশোধন হবার জন্য সতর্ক করে দিয়েছি। তারপরেও অনিয়ম হলে ব্যবস্থা নেয়া হবে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিশ্বাস রাসেল হোসেন বলেন, যে কয়জন শ্রমিক কাজ করবে ঠিক সেই কয়জন শ্রমিকের বিল দেয়া হবে এর বাইরে কাউকেই বিল দেওয়া হবে না।



মন্তব্য চালু নেই