প্লেনে ওঠা আরও বিপজ্জনক এই মুহূর্তে, জানাল গবেষণা

বিমান ভ্রমণে বিপদ কোথায়? জিগ্যেস করাতে জনৈক আড্ডাবাজ চায়ের দোকান কাঁপিয়ে মন্তব্য করেছিলেন, অ্যাক্সিডেন্টের আঁচ পেলে চেন টানা যায় না। কথাটা সত্যি। কিন্তু প্লেনে যদি একথা মাথার মধ্যে ঢুকে যায়, যিনি প্লেন চালাচ্ছেন, সেই পাইলটই ভয়ঙ্করভাবে আত্মহত্যাপ্রবণ। সর্বদাই তাঁর মাথায় ঘুরছে আত্মহননের ইচ্ছা, তা হলে কতটা আরামপ্রদ হতে পারে বিমানযাত্রা?

হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের এক সাম্প্রতিক সমীক্ষা জানাচ্ছে, পাইলট পেশার মধ্যে হাজার হাজার মানুষই অবসাদে আক্রান্ত। এবং এঁদের মধ্যে একটা বড় সংখ্যক মানুষ আত্মহত্যাপ্রবণ। ‘এনভায়রনমেন্টাল হেলথ’ নামক জার্নালে প্রকাশিত একটি নিবন্ধে প্রদত্ত হিসাব অনুযায়ী, বিশ্বের ১৪০,০০০ পাইলটের মধ্যে ৫,৭০০০ জনেরও বেশি আত্মহননেচ্ছা পোষণ করেন। অনেক সময়েই দেখা গিয়েছে স্ট্রেস ও ডিপ্রেশনের কারণে পাইলটরা অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। গবেষকরা দেখিয়েছেন, বেশিরভাগ পাইলটই তাঁদের অবসাদকে চেপে রেখে ককপিটে বসেন। কেরিয়ারে দাগ লাগার ভয়ে তাঁরা প্রকাশ করতেই চান না তাঁদের এই অসুখের কথা।

নাম-পরিচয় গোপন রাখা হবে, এই শর্তে পাইলটরা গবেষণাদলের সমীক্ষায় রাজি হয়েছিলেন। তাতে দেখা গেল, একমাসের মধ্যে উড়ানে অংশ নিয়েছেন, এমন ১৮৪৮ পাইলটদের মধ্যে ২৩৩ জনই অবসাদে আক্রান্ত। এই ভয়াবহ অবসাদের কারণ হিসেবে গবেষকদল জানিয়েছে, পারিবারিক গোলযোগ থেকে শুরু করে যৌন হেনস্থা— বহু কিছুই রয়েছে। মহিলা পাইলটদের ক্ষেত্রে অবসাদের মাত্রা অনেক বেশি বলে জানাচ্ছে সমীক্ষা।

ওদিকে ব্রিটিশ এয়ারলাইন পাইলটস’ অ্যাসোসিয়েশন-এর উড়ান-নিরাপত্তা বিষয়ক আধিকারিক রব হান্টার জানিয়েছেন, পাইলটরা সাধারণত শারীরিক ও মানসিকভাবে সুসাস্থ্যের অধিকারীই হন। কিন্তু জীবনের ওঠানামায় কিছু পাইলট অবসাদে ভুগতেই পারেন। এক্ষেত্রে প্রয়োজন তাঁদের কাজের পরিবেশের বদল। সেটা তৈরি হওয়া সহজ কাজ নয়, সেকথাও প্রকারান্তরে স্বীকার করেছেন তিনি।

ওদিকে, বিভিন্ন এয়ারলাইনস-এর পক্ষ থেকে স্বীকার করা হয়েছে, অনেক সময়েই বৈমানিকরা নিজেদের অসুস্থতাকে লুকোন। কারণ, এতে তাঁদের বেতনের উপরে চাপ পড়ে। স্ট্রেস-ডিপ্রেশনের মতো মারাত্মক ব্যাধিকে তাই চেপে গিয়েই তাঁদের ককপিটে বসতে হয়।
বিপদে থাকেন যাত্রীরা। বলাই বাহুল্য, এই বিপদ ক্রমেই বাড়ছে।



মন্তব্য চালু নেই