প্রেমের টানে মেয়েটির ধর্ম ত্যাগ, অতঃপর…

‘প্রেমের ফাঁদ পাতা ভূবনে, কখন কে ধরা পড়ে কে জানে’। প্রেমের তরে বাবা-মা, ভাই-বোন, আত্মীয় স্বজনের মায়া ছেড়ে বাড়ি থেকে পালিয়ে নিজ ধর্ম (বৌদ্ধ ধর্ম) ত্যাগ করে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করে রাউজানের এক ছেলে সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হলেন রাঙামাটি জেলার কাউখালি উপজেলার এক মারমা যুবতী।

সংসার পাতার পর চিরসুখী দাম্পত্য জীবনের স্বপ্ন দেখছিলেন দুজন। কিন্তু বিবাহের দুই মাস পর মারমা যুবতীর পিতার দায়ের করা মামলায় রাউজান থানা পুলিশ আটক হয়। রাউজান পুলিশ তাদের দুজনকে কাউখালি থানা পুলিশের নিকট সোপর্দ করে।

জানা যায়, পার্বত্য চট্টগ্রামের রাঙামাটি জেলার কাউখালি উপজেলার হীরাগাজী এলাকার চাতিও মারমার কন্যা সিমু মারমা(১৯) প্রেমের সম্পর্কের জের ধরে রাউজান উপজেলার ডাবুয়া ইউনিয়নের আরব নগর এলাকার মৃত হামদু মিয়ার পুত্র মো.ইলিয়াছ(২৫)’র সাথে পালিয়ে আসে।

পালিয়ে আসার পর মারমা যুবতী সিমু মারমা গত ৮ জুন আদালতে উপস্থিত হয়ে পূর্বের ধর্ম (বৌদ্ধ ধর্ম) ত্যাগ করে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন। ইসলাম ধর্ম গ্রহণের পর সিমু মারমা তার নাম রাখেন জান্নাতুল ফেরদৌস। একই সময়ে মুসলিম নিয়ম অনুযায়ী দুজন বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন।

বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হওয়ার পর থেকে ইলিয়াছ তার স্ত্রী জান্নাতুল ফেরদৌসকে নিয়ে রাউজানের ডাবুয়া ইউনিয়নের আরব নগর এলাকায় বসবাস করে আসছিল। ইসলাম ধর্ম গ্রহণকারী ইলিয়াছের স্ত্রী জান্নাতুল ফেরদৌস তার শ্বশুরালয়ে হিজাব পড়ে চলাফেরা করতো বলে জানান এলাকার লোকজন।

সিমু মারমা (ইসলাম ধর্ম গ্রহণের পূর্বের নাম) পালিয়ে আসার পর তার পিতা চাতিও মারমা কাউখালি থানায় ২৯ জুন নারী ও শিশু নির্যতন আইনের ২০০৩ এর৭/৩০ ধারায় মামলা দায়ের করেন। কাউখালি থানার মামলা নং-১১। কাউখালি থানায় মামলার গ্রেপ্তারি পরোয়ানা রাউজান থানায় আসলে মারমা যুবতী উদ্ধার ও অপহরণকারীকে গ্রেপ্তারের প্রচেষ্টা চালায় থানা পুলিশ।

অবশেষে গত রোববার (১৬ আগস্ট) সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় রাউজান ফকির হাট বাজারের আলো শাড়ীজ নামের একটি বিপনী বিতানে শপিং করতে আসলে রাউজান থানার এস আই পরিতোষ দাশ গোপন সংবাদের ভিত্তিতে তাদের দুজনকে আটক করে থানায় নিয়ে যান। পরে স্বামী-স্ত্রী দুজনকে কাউখালি থানার এসআই বিপ্লাবের কাছে সোপর্দ করে।

আটকের পর রাউজান থানায় মো.ইলিয়াছ বলেন, প্রেমের সম্পর্কে জান্নাতুল ফেরদৌস (ইসলাম ধর্ম গ্রহণের পর রাখা নাম) আমার সাথে পালিয়ে এসে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করে। আমরা দুজন বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হই।

জান্নাতুল ফেরদৌস বলেন,ইলিয়াছ আমাকে অপহরণ করেননি। প্রেমের সম্পর্কে তার সাথে পালিয়ে এসে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করে ইসলাম ধর্ম মোতাবেক আমরা বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছি। এদিকে রাউজান থানায় পুলিশের হেফাজতে থাকাকালে জান্নাতুল ফেরদৌস বোরকা পড়া অবস্থায় ছিলেন।

উল্লেখ্য যে, মো. ইলিয়াছ সিএনজি চালিত অটোরিকশা চালক ও জান্নাতুল ফেরদৌস (ইসলাম ধর্ম গ্রহণের পর রাখা নাম) রাউজান উপজেলার একটি বিউটি পার্লারে কাজ করতেন। জান্নাতুল ফেরদৌসের কর্মস্থলে তাদের দেখা হলে দুজনের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে।



মন্তব্য চালু নেই