প্রাথমিক শিক্ষায় বিত্তবানদের এগিয়ে আসার আহ্বান

প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাল্টিমিডিয়া সমৃদ্ধ ডিজিটাল শ্রেণিকক্ষ করার কার্যক্রমে সমাজের বিত্তবানদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

রোববার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য ডিজিটাল কনটেন্ট উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী এ আহ্বান জানান।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘দেশের প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে ১ হাজার ৫শ মাল্টিমিডিয়া শ্রেণিকক্ষ চালু করা হবে। আর এ কাজে সরকারের পাশাপাশি সমাজের বিত্তবানদেরও এগিয়ে আসার আহ্বান জানাচ্ছি।’

শেখ হাসিনা আরো বলেন, ‘আমাদের শিশুরা মেধার দিক থেকে অনেক বেশি এগিয়ে। তাদের প্রযুক্তি নির্ভর করে গড়ে তুলতে ডিজিটাল ক্লাস করে দেয়া হয়েছে। এখন একটা ল্যাপটপ কিনতে বেশি টাকা লাগে না। আমরা সহজ করে দিয়েছি। বাংলাদেশে সব কিছু ডিজিটাল করে দিয়েছে। সব কিছু এখন সহজ হয়ে গেছে।’

‘আজকের শিশুরাই কিন্তু আগামী দিনের শিক্ষক’ উদ্ধৃতি টেনে বলেন, ‘আমাদের শিশুরা অনেক মেধাবী ও মননশীল। তাই তাদের সে সুযোগ করে দিতে প্রযুক্তি ব্যবহার সহজলভ্য করা হচ্ছে। আগামী দিনের শিক্ষক বাচ্চাদের কাছ থেকে ভালো শেখা যায়, তাদের কাছে বিশ্ব এখন উন্মুক্ত। যেহেতু বাচ্চারা এ যুগে জন্ম নিয়েছে। ফলে তাদের মেধা আমাদের চেয়ে অনেক বেশি।’

তিনি আরো বলেন, ‘ছেলে-মেয়েকে সারাক্ষণ বলা হয়-পড় আর পড়। সত্যি বলতে গেলে-তখন আর পড়তে ইচ্ছে করে না। বাচ্চাদের বেশি চাপ দিলে তারা পরবর্তীতে আর ভালো করতে পারে না। বাচ্চাদের ওপর বেশি চাপ দেয়া যাবে না। তাদের পড়াটাকে আনন্দমুখর করে তুলতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘সবাই যে পরীক্ষায় ভালো রেজাল্ট করবে তা কিন্তু নয়। তাই তাদের পড়ার জন্য বেশি চাপ দেয়া যাবে না। খেলা আর আনন্দের ছলে তাদের পড়াতে হবে। শুধু বই পড়ে পড়ে শিক্ষা, আর চোখে দেখে শিক্ষা অনেক তফ‍ৎ রয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘শিশুদের উৎসাহ আর আনন্দ দিতে আমরা সবাইকে একটা সার্টিফিকেট দিয়েছি। আগে ক্লাস ফাইভে কিছু ছেলে-মেয়েকে বেছে নিয়ে বৃত্তি পরীক্ষা দেয়া হতো। বাচ্চাদের কাছ থেকে ভালো শেখা যায়, তাদের কাছে পৃথিবী এখন উন্মুক্ত। তারা অনেক কিছু শিখছে… এভাবেই বাংলাদেশকে এগিয়ে নেবে তারা।’

সর্বনিম্ন ৫শ থেকে ২ হাজার টাকা পর্যন্ত বৃত্তি নিয়ে ছেলে-মেয়েরা ডিগ্রি পর্যন্ত পড়াশোনা করছে বলেও জানান প্রধানমন্ত্রী।
শিক্ষাক্ষেত্রে আওয়ামী লীগ সরকারের সাফল্যের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘আমাদের সাক্ষরতা ৭১ শতাংশে উন্নীত হয়েছে। আমাদের লক্ষ্য শতভাগে উন্নীত করা। আমরা চাই ছেলে-মেয়েরা উন্নত জীবন-যাপন করুক।’

শেখ হাসিনা আরো বলেন, ‘১৯৯৬ সালে ক্ষমতায় আসার পর থেকেই প্রাথমিক শিক্ষার উন্নয়নে নানা ধরনের পদক্ষেপ নিয়েছিল সরকার। কিন্তু ২০০১ সালে নানা ষড়যন্ত্রের মধ্য দিয়ে ২০০১ সালে সরকার গঠন করতে দেয়া হয়নি। ফলশ্রুতিতে সাক্ষরতার হার কমে যায়, প্রাথমিকে ঝড়ে পড়ার হারও বাড়ে। কিন্তু পরবর্তীতে সরকার গঠনের পর প্রাথমিক শিক্ষার উন্নয়নে নানা পদক্ষেপ নিয়েছি।’

অনুষ্ঠানে ব্র্যাকের প্রতিষ্ঠাতা স্যার ফজলে হাসান আবেদ, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রী মোস্তাফিজুর রহমান, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলক প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।



মন্তব্য চালু নেই