প্রাণঘাতী স্ট্রোকের ঝুঁকি কমাবে যে ৭টি কাজ

স্ট্রোক মানে নিশ্চিত মৃত্যু না হলেও মৃত্যুর মুখোমুখি হওয়া। মস্তিষ্কে রক্তচলাচল বাধাপ্রাপ্ত হয় তখন মস্তিষ্কের কোষগুলির মৃত হতে শুরু করে যা অনেকসময় প্রাণঘাতীও হয়ে থাকে। সাধারণত মনে করা হয় পরিবারে যদি অতীতে স্ট্রোকের কোন ইতিহাস থাকে তবে স্ট্রোক হওয়ার সম্ভবান থাকে। এটি একটি ভ্রান্ত ধারণা। পারিবারিক ইতিহাস স্ট্রোকের অনেকগুলো কারণের মধ্যে একটি। আরও কিছু কারণ জড়িত স্ট্রোকের পিছনে। harvard.edu থেকে জানা যায় ২০১৩ সালে ৪,২৫,০০ মহিলা যুক্তরাষ্ট্রে স্ট্রোক আক্রান্ত হন। বয়স বা পারিবারিক ইতিহাসপরিবর্তন করা সম্ভব না হলেও স্ট্রোক কিছু ঝুঁকি আছে যা হ্রাস করা সম্ভব। Dr. Natalia Rost,, associate professor of neurology at Harvard Medical School and associate director of the Acute Stroke Service at Massachusetts General Hospital বলেন “আপনার যদি স্ট্রোকের কারণগুলো জানা থাকে এবং এটি প্রতিরোধে জন্য যা করণিয় তা যদি মেনে চলুন তবে আপনার স্টোকের ঝুঁকি অনেকখানি হ্রাস করতে পারবেন”। কিছু উপায়ে স্ট্রোকের ঝুঁকি হ্রাস করা সম্ভব। স্ট্রোকের ঝুঁকি কমাতে সক্ষম এমন কিছু উপায়ের কথা বলেছেন জান্নাতুত তাসনিম।

১। ব্যায়াম করুন

সপ্তাহে ৫ দিন ২০ থেকে ২৫ মিনিট ব্যায়াম করুন। তা জগিং হোক বা স্কিপিং বা জোরে হাঁটা হোক কিংবা যোগাসন যেটা করতে আপনি পছন্দ করেন সেটি করুন। সকালে এবং দুপুরে খাবার আগে ১৫ মিনিট হাটুন। এটি আপনার স্ট্রোকের ঝুঁকি অনেক কমিয়ে দিবে।

২। কিছুটা বেছে খান

কোলেস্টেরল জাতীয় খাবার স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর তা আমরা সবাই জানি। তাই কোলেস্টেরল জাতীয় খাবার খাওয়ার আগে একটু চিন্তা করুন। কী খাচ্ছেন সেদিকে লক্ষ্য রাখুন। রক্তে কোলেস্টেরল, সুগারের পরিমাণ পরীক্ষা করুন নির্দিষ্ট সময় পর পর। আঁশযুক্ত শাক সবজি বেশি পরিমাণে খাবেন। তেলযুক্ত মাছ খাদ্য তালিকায় রাখুন। মাছের তেলের ওমেগা ৩ ফ্যাটি অ্যাসিড স্ট্রোক প্রতিরোধ করে থাকে। আপনি চাইলে ফিশ লিভার অয়েল বা ওমেগা ৩ ক্যাপসুল খেতে পারেন।

৩। ধূমপান ত্যাগ করুন

ধূমপান স্ট্রোকের প্রধান কারণ। এটি আমাদের ফুসফুসকে নষ্ট করে দেয়। ধূমপানের কারণে উচ্চ রক্তচাপের সমস্যার সৃষ্টি হতে পারে, যা স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়়িয়ে দেয়।Dr. Rost বলেন “নিয়মিত ব্যায়াম ওজন কমানোর পাশাপাশি ধূমপানের অভ্যাস ত্যাগ করতে হবে, স্ট্রোকের ঝুঁকি হ্রাস করার জন্য”।

৪। ওজন কমান

শরীরে অতিরিক্ত মেদ স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয় বহু গুণ। অতিরিক্ত মেদের কারণে শরীরের কোলেস্টরলের মাত্রা বৃদ্ধি পায়, হৃদযন্ত্র স্বাভাবিক কাজে বাধাগ্রস্ত হয়ে থাকে।

৫। হাইপারটেনশন

নিয়মিত রক্তচাপের পরীক্ষা করাতে হবে। অতিরিক্ত চিন্তার ফলে উচ্চরক্তচাপের সমস্যা হতে পারে। আবার অনেকের ক্ষেত্রে দেখা যায় রক্তচাপ উঠা নামা করছে, রক্তচাপের প্রকৃতির এই ধরণের তারতম্য হলে স্ট্রোকের ঝুঁকি বেড়ে যায়। তাই চিকিৎসকের পরামর্শে ওষুধ খান, এবং দুশ্চিন্তা করা বন্ধ করুন।

৬। অল্প পরিমাণে চকলেট খান

সপ্তাহে এক থেকে দুইবার চকলেট খাওয়া শতকরা ৩০ ভাগ স্ট্রোকের ঝুকি কমিয়ে দেয়। তাই নিয়মিত সামান্য পরিমাণে চকলেট খান। ডায়বেটিক রোগীরা চকলেট খাওয়া থেকে বিরত থাকুন।

৭। নিয়মিত ডেন্টিস্টের কাছে যান

প্রতি ৬ মাস পর পর ডেন্টিস্টের কাছে যান।এই একটি কাজ ২৪% হৃদরোগের এবং ১৩% স্ট্রোকের ঝুঁকি কমিয়ে থাকে। দাঁতে কোন প্রকার অস্বাভাবিকতা ধরা পরলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

স্ট্রোকের আরেকটি অন্যতম কারণ হল স্ট্রেস। দুশ্চিন্তা, অতিরিক্ত কাজের চাপ আপনাকে স্ট্রোকের দিকে নিয়ে যায়। দুশ্চিন্তাকে জীবন থেকে দূরে রাখুন, স্ট্রোক হওয়ার সম্ভাবনা কমে যাবে অনেকখানি।

পরামর্শদাতা

জান্নাতুত তাসনিম

এমবিবিএস

শহীদ সোহরাওয়ার্দি মেডিকেল কলেজ

লিখেছেন

নিগার আলম



মন্তব্য চালু নেই