প্রাকৃতিকভাবে কমিয়ে ফেলুন কোলেস্টোরল

কোলেস্টরল শব্দটির সাথে কম-বেশি সবাই পরিচিত হলেও একে নিয়ে বেশ কিছু ভুল, অস্পষ্ট ও অপ্রাসঙ্গিক ধারণা আছে আমাদের সবার মনে। অনেকে ঠিক করে জানেনই না যে কোলেস্টরল কী, অথচ সময় পেলেই খোঁজ করেন কোলেস্টরলের পরিমাণ কম এমন সব খাবারের। শুধু কি তাই? অতিরিক্ত কোলেস্টরল আসলেও কি খুব বেশি ক্ষতিকরক, কাদের জন্য বা কেন সেটা নিয়েও দ্বিধা থাকে আমাদের অনেকের মনে। চলুন সেসব দ্বিধার জট খুলে জেনে আসি প্রাকৃতিকভাবে শরীর থেকে কোলেস্টরল কমানোর কার্যকরী পদ্ধতি।

কোলেস্টরল কী? কোলেস্টরল আমাদের শরীরের জন্য প্রচন্ড দরকারী একটি উপাদান যেটি কিনা অনেকটা অংশে শরীর নিজেই তৈরি করে নেয়। তবে খানিকটা আঠালো এই উপাদানটিকে বাইরে থেকেও নানারকম প্রাণীজ চর্বি, যেমন- ডিম, দুধ, মাংস ইত্যাদির মাধ্যমে পেতে পারি আমরা। মজার ব্যাপার হল, অন্যান্য অনেক চর্বির মতন এই কোলেস্টরল জিনিসটাকে কিন্তু কোনভাবেই পুড়িয়ে ফেলা যায়না। এটি সবসময়ই শরীরের এখান থেকে ওখানে ঘুরেফিরে বেড়ায়। আর এর ফলাফল? কখনো খারাপ, কখনো ভালো। তবে সেটা পুরোপুরিই নির্ভর করে এর প্রকৃতির ওপর।

কত প্রকার? কোলেস্টরল মোট দুই ধনের হয়। এলডিএল ও এইচডিএল। এইচডিএল অর্থ লো ডেনসিটি লিপোপ্রোটিন। যেটি কিনা আমাদের শরীরকে নানারকম রোগ ও হৃদরোগের কবলে ফেলে। অন্যদিকে এইচডিএল বা হাই ডেনসিটি লিপোপ্রোটিনকে ভালো কোলেস্টরল মনে করা হয়। এটিকে আমাদের শরীরের জন্য উপকারী বলে মনে করেন চিকিত্সকেরা। দি সেন্টার অব ডিজিজ কন্ট্রোলের সরবরাহকৃত তথ্যানুসারে, বর্তমানে প্রায় ৭৩.৫ মিলিয়ন প্রাপ্তবয়স্কদের ভেতরে প্রচুর মাত্রার এলডিএল বিদ্যমান রয়েছে।

কতটা কোলেস্টরল গ্রহন করা উচিত? আগেই বলা হয়েছে যে আমাদের শরীরের জন্যে দরকারী মাত্রার কোলেস্টরল শরীর নিজেই তৈরি করে নিতে পারে। তাই আলাদা করে বাইরে থেকে কোলেস্টরল নেওয়ার দরকার পড়েনা। এক্ষেত্রে কোলেস্টরল যেহেতু কেবল প্রাণীর কাছ থেকেই পাওয়া যায়, সুতরাং চেষ্টা করুন অতিরিক্ত পরিমাণে প্রাণীজ খাবার থেকে বিরত থাকতে। তবে এ তো গেল কোলেস্টরল আলাদা করে না গ্রহনের পদ্ধতি। কিন্তু যে অতিরিক্ত কোলেস্টরেল এর ভেতরেই শরীরে চলে গিয়েছে আপনার সেটার কি হবে? চলুন তাই জেনে আসি এমন কিছু প্রাকৃতিক খাবারকে যেটি সহজেই শরীরের অতিরিক্ত এলডিএল কোলেস্টরলকে দূর করে এইচডিএল কোলেস্টরলের মাত্রা বাড়িয়ে দেবে।

১. ওট ওট এমন একটি খাবার যেটি আপনাকে প্রচন্ডভাবে সাহায্য করবে শরীরের অতিরিক্ত এলডিএল কোলেস্টরলকে কমাতে। এটি রক্তে বেটা গ্লুকোন উৎপাদন করে, যেটি কিনা খুব সহজেই রক্তের ভেতরে থাকা এলডিএলকে সরিয়ে দিয়ে তার বদলে জায়গা করে দেয় এইচডিএলের।

২. জাম গ্রীষ্মকালে জাম একটি অতি উপাদেয় ও সহজলভ্য ফল। আর এই জামেরই একটি অনন্য গুন হচ্ছে এই যে, এটি আমাদের হৃদপিন্ডকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে। সেইসাথে রক্তের প্রবাহকে ঠিকঠাক রাখতে ও রক্তের ভেতর থেকে দূষিত পদার্থকে সরিয়ে নিতেও বেশ সাহায্য করে এই ফলটি।

৩. পাস্তুরিত ডিম ডিমের ক্ষেত্রে আপনার মাথায় প্রশ্ন আসতেই পারে যে, ডিমে কি এলডিএল নেই? হ্যাঁ! আছে। তবে কিছু ডিমে এলডিএল নয়, এইচডিএলকে খুঁজে পাবেন আপনি। আর তাই এইচডিএল কোলেস্টরল সমৃদ্ধ ডিমকে খুঁজে পেতে চেষ্টা করুন সেই ডিমকে বাছতে যেটি এমন মুরগী থেকে এসেছে যাকে কিনা পাস্তুরিত খাবারই খাওয়ানো হত। অন্যকোন খাবার নয়। তাহলেই খুব সহজে এইচডিএল কোলেস্টরলকে পেয়ে যাবেন আপনি।



মন্তব্য চালু নেই