প্রসূতি স্ত্রীর প্রতি স্বামীর করণীয়

পৃথিবীতে নারী জীবনের সবচেয়ে রোমাঞ্চকর অনুভূতি হচ্ছে মা হবার অনুভূতি। সন্তান ধারণের এই নয় মাস নারীর জীবনে আসে ব্যাপক পরিবর্তন। এই পরিবর্তন শারীরিক, মানসিক সবক্ষেত্রে। আপনাকে স্বামী হিসেবে প্রথমেই আপনার স্ত্রীর এই পরিবর্তনের সাথে খাপ খাওয়ানোর মানসিকতা তৈরি করতে হবে।

স্বামী হিসেবে আপনার করণীয় :

# আপনার স্ত্রী যে আপনার জীবনের অসাধারণ এক প্রাপ্তি তা তাকে অনুধাবন করান। এই সময়ে নারীর শারীরিক পরিবর্তন যেমন ধীরে ধীরে ওজন বাড়তে থাকে। এতে আপনার স্ত্রী হয়তো নিজের শারীরিক সৌন্দর্য নিয়ে হীনমন্যতায় ভুগতে পারেন। এ সময় আপনি তার রুপের প্রশংসা করুন। এতে তার আত্মবিশ্বাস বাড়বে।

# স্ত্রীকে চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যাবার দায়িত্ব (কোনো সমস্যা না থাকলে) আপনাকেই নিতে হবে। এতে আপনার স্ত্রী অনুভব করবে, আপনি তাকে গুরুত্ব দিচ্ছেন। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা তৃতীয় বিশ্বের দেশের জন্য পুরো গর্ভকালীন সময় ন্যূনতম চার বার চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যাবার বিধান রেখেছে। যাকে বলা হয় এন্টি-ন্যাটাল চেক-আপ।
প্রথম ১৮ সপ্তাহের মধ্যে একবার,
১৮ থেকে ২৪ সপ্তাহের মধ্যে একবার
২৪ থেকে ৩৬ সপ্তাহের মধ্যে একবার
৩৬ সপ্তাহের পর থেকে প্রতি সপ্তাহে একবার
এছাড়া যেকোনো সমস্যা দেখা দিলে চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে।

# বাড়িতে স্ত্রীকে সহায়তা করুন। এ সময় শরীর অত্যন্ত ক্লান্ত থাকে বিশেষ করে প্রথম ভাগে (ফার্স্ট টার্ম) ও তৃতীয় ভাগে (থার্ড টার্ম) আপনার স্ত্রী যে সমস্ত ঘর ও গৃহস্থালীয় কাজ নিজ হাতে সামলাতেন সে কাজগুলোতে যেমন ঘরবাড়ি পরিষ্কার রাখা, রান্নাবান্নাতে সহায়তা করুন।

# স্ত্রীকে চমক দিন। এ সময় নারীর মানসিক অবস্থা যখন তখন পরিবর্তিত হয়। মন খারাপ লাগা, উত্তেজিত হয়ে যাওয়া খুবই স্বাভাবিক এ সময়। আপনার ভালোবাসা স্ত্রীর এ ধরনের পরিবর্তন সামাল দিতে পারে। স্ত্রীর জন্য উপহার নিয়ে আসতে পারেন। এ উপহার হতে পারে ফুলের তোড়া, পছন্দের কোনো কিছু এমনকি আইসক্রিমও নিয়ে আসতে পারেন।

# এ সময়ে আপনার স্ত্রীর বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ বা রাগারাগি করবেন না। এতে সে মন খারাপ করবে, যা পরবর্তীতে প্রভাব ফেলবে।

# আপনার স্ত্রী হয়তো আগে সংসারে অনেক কিছুই নিজে দায়িত্ব নিয়ে করতেন। এখন হয়তো সেগুলো সেভাবে হচ্ছে না। কিন্তু তাই বলে কোনো অভিযোগ করবেন না। বরং আপনি তাকে বলুন— দেখো আমি তোমার জন্য অনেক কিছু করতে পারি। আপনার এই ছোট কথাই তাকে দেবে আনন্দের অনুভূতি।

# তার খাবার দাবারের প্রতি খেয়াল রাখুন। এ সময় নারীর শরীরের জন্য দরকার অতিরিক্ত ক্যালরি তথা অতিরিক্ত খাবার। খাদ্য তালিকায় রাখুন মাছ, মাংস, শাকসবজি, দুধ, কলা, ডিম, ফল-মুল ইত্যাদি।

# সম্ভাব্য ডেলিভারির তারিখ মাথায় রেখে অন্তত একমাস আগে থেকেই প্রস্তুত থাকুন। কেননা কখনো কখনো নির্ধারিত সময়ের আগেই বাচ্চা হয়ে যেতে পারে।



মন্তব্য চালু নেই