প্রশান্ত মহাসাগরে পরমাণু ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়ল মার্কিন নৌসেনা

প্রশান্ত মহাসাগরের জল তোলপাড় করে পর পর চারটি সুদীর্ঘ পাল্লার পরমাণু ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়ল আমেরিকা। মার্কিন নৌসেনাই বিজ্ঞপ্তি দিয়ে এই উৎক্ষেপণের কথা জানিয়েছে। প্রশান্ত মহাসাগরের বুকে যে ব্যালিস্টিক মিসাইল আমেরিকা ছুড়েছে, সেগুলি ৭ হাজার ৪০০ কিলোমিটার দূরে পরমাণু হামলা চালাতে সক্ষম। ক্ষেপণাস্ত্রটির নাম ট্রাইডেন্ট টু ডি ফাইভ। সমুদ্রের গভীর থেকে ক্ষেপণাস্ত্রগুলি ছোড়া হয়েছে।

ঠিক কোন তারিখে ক্ষেপণাস্ত্রগুলি ছোড়া হয়েছে, তা মার্কিন নৌসেনা জানায়নি। বিজ্ঞপ্তিতে শুধু জানানো হয়েছে, চলতি মাসেই ক্যালিফোর্নিয়া উপকূলের অদূরে প্যাসিফিক টেস্ট রেঞ্জ থেকে ট্রাইডেন্ট টু ডি ফাইভ ক্ষেপণাস্ত্রগুলি ছোড়া হয়েছে। সমুদ্রের গভীর থেকে নিক্ষিপ্ত ক্ষেপণাস্ত্রগুলি জল ফুঁড়ে বাইরে এসে গন্তব্যের দিকে ছুটে গিয়েছে

এবং নির্ভুল লক্ষ্যে আঘাত হেনেছে। যে চারটি ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হয়েছে, সেগুলির সবক’টিতেই মাল্টিপল ইনডিপেনডেন্টলি টার্গেটেবল রি-এন্ট্রি ভেহিকল বা এমআইআরভি লাগানো ছিল। অর্থাৎ একটি ক্ষেপণাস্ত্রই এক সঙ্গে অনেকগুলি লক্ষ্যে আঘাত হানতে সক্ষম।

মার্কিন নৌসেনা সূত্রের খবর, ওহায়ো ক্লাস সাবমেরিন থেকে ক্ষেপণাস্ত্রগুলি ছোড়া হয়েছে। আমেরিকার যে নিউক্লিয়ার ট্রায়াড (ভূমি, আকাশ ও জলভাগ— এই তিন অবস্থান থেকেই পরমাণু হামলা চালানোর ব্যবস্থা) রয়েছে, তার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অংশ হল এই ওয়াহো ক্লাস সাবমেরিন। এই সাবমেরিন সমুদ্রের গভীরে লুকিয়ে যে কোনও ভূ-ভাগে বা জলভাগে পরমাণু হামলা চালাতে পারে। মার্কিন নৌসেনার হাতে ১৪টি এই গোত্রের সাবমেরিন রয়েছে। প্রতিটি সাবমেরিনে ২৪টি করে ট্রাইডেন্ট টু ডি ফাইভ ক্ষেপণাস্ত্র বহন করা সম্ভব।

আমেরিকা ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষামূলক উৎক্ষেপণ করছে, এ ঘটনা খুব অস্বাভাবিক নয়। কিন্তু ঠিক যে সময়কে এই মহড়ার জন্য বেছে নেওয়া হল, তা যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলে প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন। সমুদ্রের গভীরে লুকিয়ে পরমাণু হামলা চালানোর সক্ষমতাই হল নিউক্লিয়ার ট্রায়াডের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশ। যুদ্ধের সময় প্রতিপক্ষের আচমকা হামলায় যদি স্থলভাগ এবং আকাশ থেকে হামলা চালানোর সক্ষমতা নষ্ট হয়ে যায়, তা হলে সমুদ্রের গভীর থেকে পাল্টা পরমাণু হামলা চালানোই একমাত্র পথ। চিন-আমেরিকা বাগ্‌যুদ্ধ এবং উত্তেজনা সম্প্রতি যে ভাবে লাফিয়ে বেড়েছে, তার প্রেক্ষিতে সমুদ্রের গভীর থেকে পরমাণু হামলা চালানোর সক্ষমতা নতুন করে পরীক্ষা করে নেওয়া নিঃসন্দেহে বার্তাবহ পদক্ষেপ, বলছে ওয়াকিবহাল মহল।-আনন্দবাজার



মন্তব্য চালু নেই