প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ে চাকুরীর নামে জালিয়াতি ও জমিদখলের তদন্ত চায় ঝালকাঠির নলছিটি কুশংগল এলাকার ভূক্তভোগীরা

বয়স জালিয়াতি ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সশস্ত্র বিভাগ বাহিনীতে কার্পেন্টার পদে কর্মরত আব্দুল মজিদ হাওলাদারের বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রী সহ সশস্ত্র বিভাগ, ডিজিএফআই ও দূর্নীতি দমন কমিশনে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে ঝালকাঠি নলছিটি উপজেলার কুশংগল এলাকার অর্ধশত পরিবার। অভিযোগে নলছিটিতে জালিয়াতির মাধ্যমে জমি দখল, নিরীহ লোকজনকে হয়রাণী সহ ডাকাতির দায়ে অভিযুক্ত ৭৮ বছর বয়সী আঃ মজিদের অত্যাচার ও নির্যাতের হাত থেকে রেহাই পেতে ভূক্তভুগী পরিবারগুলো সরকারের উর্ধতন কর্তৃপক্ষের কাছে দ্রুত তদন্ত ও আইনগত ব্যবস্থা গ্রহনের দাবী জানিয়েছেন।
স্থানীয় ভূক্তভোগী পরিবারগুলোর অভিযোগ, মজিদ হাওলাদার প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ে সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের দাপট দেখিয়ে ভূয়া জালিয়াতি ডিক্রী দ্বারা চলতি বছরের ১০ মার্চ নলছিটি উপজেলার কুশংগল মৌজার ৩০-৩৫টি পরিবারের ৫ একর ৭১ শতাংশ জমি রেকর্ড করে দখলের চেষ্টা করছেন। প্রায় ৫৮ বছর পূর্বে ১৯৫৬ সালের একটি ভূয়া ডিক্রী উপস্থাপন করে ও প্রায় ৩০ বছর আগে মারা যাওয়া বড় ভাই ওয়াজেদ আলী হাং কে জিবীত দেখিয়ে রেকর্ড করে নিয়ার পর কোটি টাকা মূল্যের উক্ত সম্পত্তির একাংশ ইতিমধ্যে সাইনবোর্ড টানিয়ে দখল করে নিয়েছে বলেও অভিযোগ রয়েছে।
তারা আরো জানায়, মজিদ হাওলাদারের উক্ত ৭৪/১৯৫৬ ডিক্রীকৃত সম্পত্তি ইতিপূর্বে তারই পিতা আ: গনি হাওলাদারের জীবদ্দশায় ১৯৭৫ সালে ১৮১/৭৫ নং ডিক্রীমূলে এশবার দখলের চেষ্টা চালিয়ে ছিলো। কিন্তু বরিশাল আদালতে বিচারাধীন মামলার রায়ে উক্ত ডিক্রিকে জালিয়াতিপূর্ন বলে অভিযোগে খারিজ করে দেন। এছাড়া উক্ত সম্পত্তির নিয়ে আবদুল ওয়াহেদ বাদী হয়ে ১৯৯৮ সালে ঝালকাঠি সহকারী জজ আদালতে (৩৫/৯৮ মিস মোকদ্দমা) একটি মামলায় এই মজিদ কেও বিবাদী করার পর উক্ত মামলার চুরান্ত বিচারে বিবাদি পক্ষ হেরে যায়। বর্তমানে মজিদের  উল্লেখিত ডিক্রী নং ৭৪/৫৬ দলিলের নকলের বিপরীতে প্রকৃত রেকর্ড অনুসন্ধানকালে গত ২৬ নভেম্বর ২০১৪ বরিশাল রেকর্ড রুম থেকে প্রদানকৃত তথ্যে উক্ত নাম্বারের কোন ডিক্রী নেই বলে তথ্য প্রদান করেছে।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, মজিদ হাওলাদার নলছিটি উপজেলা ভূমি অফিসের একটি চক্রের মাধ্যমে ১৯৫৬ সালের ডিক্রী দলিল দাখিল করে ৫৮ বছর আগের ডিক্রীমূলে দাখিলা প্রদানের জন্য জমা করেন। পরবর্তীতে সে বিভিন্ন সময় প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের টেলিফোন নাম্বার থেকে নলছিটি ভূমি অফিসে ফোন করে ডিক্রী মূলে রেকর্ড দেয়ার তাগাদা দিতে থাকে। এক পর্যায়ে আতংকের মুখে ভূমি অফিসের স্থানীয় কর্মকর্তা-কর্মচারীরা কোন ধরনের তদন্ত, রেকর্ড-পর্চা, দখল-খাজনা, মিউটেশন বা কাগজপত্র ছাড়াই ৫একর ৭১শতাংশ সম্পত্তির মিউটেশন রেকর্ড পূর্বক চলতি বছরের ১০ মার্চ হাল সন পর্যন্ত খাজনা পরিশোধের রশিদ দিয়ে দেন।
এ ব্যাপারে মৃত ব্যক্তির নামে রেকর্ড প্রদান ও ৫৮বছর আগের ডিক্রী বলে কি ভাবে মিউটেশন করা হ’ল জানতে নলছিটি এ্যাসিল্যান্ডের দায়িত্বে থাকা উপজেলা নির্বাহী অফিসার আবু হাসনাত মোহাম্মদ আরেফীনের সাথে (যার স্বাক্ষরে রেকর্ড করা হয়) ডিসেম্বর মাসের প্রথম দিকে তার সেলফোনে আলাপ কালে বলেন, এ বিষয়ে যদি কোন পক্ষের আপত্তি বা অভিযোগ থাকে তবে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার কবে। কয়েক দিন পূর্বে কোনপক্ষ এখোন পর্যন্ত অভিযোগ করেছেন কিনা জানতে চাইলে পরে কথা বলবেন বলে ফোন রেখে দেন।



মন্তব্য চালু নেই