প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের সমালোচনায় অ্যামনেস্টি

দেশে চলমান সংহিস রাজনৈতিক প্রতিবাদ কর্মসূচি চলাকালে পেট্রোলবোমা হামলাকারীদের দমনে পুলিশকে অতিরিক্ত ক্ষমতা দেয়ার সমালোচনা করেছে লন্ডনভিত্তিক আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন অ্যামিনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল। তারা বলেছে, এর মাধ্যমে সরকার অতিরিক্ত ঝুঁকি নিয়েছে। এছাড়া ভয়াবহ পেট্রোলবোমা হামলা ঠেকাতে অতিরিক্ত পুলিশ ব্যবহার কোনো যথার্থ পদক্ষেপ নয়।
বৃহস্পতিবার অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে সংস্থাটি এ মত দিয়েছে।
গত বুধবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পুলিশ সপ্তাহ ২০১৫ উপলক্ষে জ্যেষ্ঠ পুলিশ কর্মকর্তাদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছিলেন, ‘সরকারপ্রধান হিসেবে আমি আপনাদের অনুমতি দিচ্ছি, পেট্রোলবোমা ছুঁড়ে মানুষ হত্যাকারীদের বিরুদ্ধে যখন যেখানে যে ব্যবস্থা নেয়া প্রয়োজন তা আপনারা নেবেন। দায়-দায়িত্ব আমি নেব।’
গত বছরের ৫ জানুয়ারির ‘একতরফা’ নির্বাচনের মাধ্যমে গঠিত আওয়ামী লীগ সরকারের পদত্যাগের দাবিতে ৬ জানুয়ারি থেকে টানা অবরোধ কর্মসূচির ডাক দেয় বিএনপির নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোট। তবে সহিংসতার শুরু এর দুই দিন আগে থেকেই। গত ২৬ দিনে সহিংসতায় নিহত হয়েছেন কমপক্ষে ৪১ জন।
বিবৃতিতে অ্যামিনেস্টির বাংলাদেশ গবেষক আব্বাস ফাইয়াজ বলেন, ‘দেখা যাচ্ছে এ ধরনের মন্তব্য (প্রধানমন্ত্রীর) অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। কারণ এটি পুলিশের জন্য বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে অপ্রয়োজনীয় ও অহেতুক শক্তি প্রয়োগ এমনকি বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড- যা বাংলাদেশি নিরাপত্তাবাহিনী বারবার করে আসছে তার উন্মুক্ত আহ্বান।’ সম্প্রতি পুলিশের সঙ্গে তথাকথিত বন্দুকযুদ্ধের ঘটনারও সমালোচনা করা হয়।
সম্প্রতি পুলিশের কিছু অভিযানে বেশ কয়েকজনকে নিহত হয়েছে। এলিট ফোর্স হিসেবে পরিচিত র‌্যাবের অভিযানও এর মধ্যে অন্তর্ভুক্ত। অ্যামিনেস্টির ভাষ্য অনুযায়ী, ১২ থেকে ২৮ জানুয়ারি মধ্যে ১০ জন নিহতের ঘটনাকে পুলিশ ‘বন্দুকযুদ্ধ’ বলে আখ্যা দিয়েছে।
আব্বাস ফাইয়াজ বলেন, ‘পুলিশের অভিযানে এসব মৃত্যু- যার মধ্যে বেশ কিছু বিচারবহির্ভূত সেগুলোকে অবশ্যই তদন্ত করতে হবে এবং যারা এর জন্য দায়ী তাদের বিচারের মুখোমুখি করতে হবে। নিরাপত্তা বাহিনীর দায়িত্ব আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা কিন্তু এটি তাদের অবস্থানকে আইনের ঊর্ধ্বে নিয়ে যায়নি এবং এটা কখনোই বারবার অতিরিক্ত শক্তি প্রয়োগের কোনো অজুহাত হতে পারে না।’



মন্তব্য চালু নেই