প্রক্টরের মৌখিক নির্দেশে বেরোবি শিক্ষার্থী আটক, হার্ট অ্যাটাকে পিতার মৃত্যু

বেরোবি প্রতিনিধি : অসৌজন্যমূলক আচরণের অভিযোগে প্রক্টরের মৌখিক নির্দেশে এক শিক্ষার্থীকে গ্রেফতারের পর তার পিতার মৃত্যু হয়েছে। ছেলের গ্রেফতারের সংবাদ পেয়ে পিতা অনীল চন্দ্র রায় নীলফামারী সদর হাসপাতালে নেওয়ার পথে হার্ট অ্যাটাকে মারা যায়। আজ সোমবার রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে (বেরোবি) বেলা পৌনে বারোটায় এ ঘটনা ঘটে। পরে তাকে বিকাল সাড়ে তিনটার দিকে ছেড়ে দেওয়া হয়।

শিক্ষার্থীর নাম দীপু চন্দ্র রায়। তার বাড়ি নীলফামারি সদর উপজেলায়। সে গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের ৫ম ব্যাচের শিক্ষার্থী।
এ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রক্টর ও প্রশাসনের বিরুদ্ধে একটি ঝটিকা মিছিল করে বিভাগের শিক্ষার্থীরা। ঘটনার প্রতিবাদে আগামী সোমবার বিক্ষোভ মিছিলসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. একে এম নূর-উন-নবী কে স্মারকলিপি প্রদান করা হবে বলে শিক্ষার্থীরা জানায়।

প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, গত ১২/১৩ দিন পূর্বে প্রক্টর মীর তামান্না ছিদ্দীকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সাইাকেল চালাচ্ছিলেন। ঐ শিক্ষার্থী ও তার সহপাঠীরা সে সময় পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন। হঠাৎ করে আজ প্রক্টর এর সঙ্গে দেখা হলে সালাম দেয় তার সহপাঠী। সালাম না নেওয়ায় ‘আমাদেরকেও সাইকেল চালাতে হবে’ এ কথা বলায় প্রক্টর তাকে তৎক্ষণাৎ ধরে নিয়ে পুলিশ ফাঁড়িতে যায় এবং তাকে কয়েক ঘন্টা আটকে রাখা হয় । এ ঘটনা শুনে তার অসুস্থ বাবা হাসপাতালে যাওয়ার পথে হার্ট অ্যাটাকে মারা যায়। অভিযোগ আছে, আটক করার পর ঐ শিক্ষার্থীকে তার বাড়ির সঙ্গে তাকে যোগাযোগ করতে দেওয়া হয়নি।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে প্রক্টর মীর তামান্না ছিদ্দীকা বলেন, ‘আজ বেলা পৌনে বারোটায় ক্যাম্পাসে প্রবেশের পর ঐ শিক্ষার্থী অসৌজন্যমূলক আচরণ করে। পরে তাকে পুলিশ ফাঁড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়। শিক্ষার্থীটির বাবার অসুস্থতার খবর পেয়ে পরে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়।’

বিষয়টি সম্পর্কে জানতে চাইলে বিভাগের প্রধান ড. মো: নজরুল ইসলাম বলেন, তাকে পুলিশ ফাড়িতে নিয়ে যাওয়ার ঘটনা সত্যি। ঐ শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে ইভটিজিংয়ের মামলারও হুমকি দেওয়া হয়েছিলো। কিন্তু মামলা দেওয়া হয়নি। তবে তার বাবা মারা যাওয়ার ঘটনায় শিক্ষার্থীটিকে দ্রুত ছেড়ে দেওয়া হয়।

এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের পুলিশ ফাঁড়ির এস আই এরশাদ আলীকে কল করলে রিসিভ করেন নি তিনি।

এ ঘটনায় নীলফামারী জেলা ছাত্র কল্যাণ সমিতি তীব্র নিন্দা জানিয়েছে এবং ঘটনার দ্রুত তদন্ত করে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য প্রশাসনকে অনুরোধ জানিয়েছে। বিষয়টি নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে উত্তেজনা বিরাজ করছে।



মন্তব্য চালু নেই