প্রকাশ্যে আসছে বিএনপি প্রার্থীরা!

শীঘ্রই প্রকাশ্যে আসার প্রস্তুতি নিচ্ছেন তিন সিটি নির্বাচনে সম্ভাব্য মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীরা।

একাধিক মামলায় জর্জরিত ২০ দলীয় জোটের নেতাকর্মীরা এখন আত্মগোপন থেকে একযোগে বেরিয়ে আাসার প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে জানা গেছে।

প্রতিটি মামলায় জামিন নিয়ে নির্বাচনী মাঠ চষে বেড়ানোর জন্য উৎগ্রীব হয়ে আছেন তারা। এরই মধ্যে বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থীরা জামিনের জন্য করণীয় ঠিক করতে তাদের আইনজীবীদের সঙ্গে কথাবার্তা বলতে শুরু করেছেন।

বিএনপি নেতা ও তাদের আইনজীবীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, চলতি সপ্তাহের শেষের দিকে, না হয় আগামী সপ্তাহের শুরুতে প্রার্থীরা জামিনের জন্য আদালতে যেতে পারেন বলে জানা গেছে।

মনোনয়নপত্র যাচাই বাছাই শেষে প্রার্থী চূড়ান্ত হওয়ার পরই তারা প্রকাশ্যে বের হয়ে আসবেন এবং আদালতের দ্বারস্থ হবে এবং জামিন চাইবেন।

আগামী ১ ও ২ এপ্রিল ঢাকা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র যাচাই বাছাই।

এদিকে আরেকটি সূত্র জানিয়েছে, নির্বাচন ঘনিয়ে আসায় মেয়র বা কাউন্সিলর প্রার্থীসহ আত্মগোপনে থাকা নেতাকর্মীদের নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছেন বিএনপির হাইকমান্ড। তারা মনে করছে, দল সমর্থিত প্রার্থীরা যদি মাঠে থাকতে না পারে বা তাদের জন্য কর্মীরা যদি কাজ করতে না পারেন তাহলে নির্বাচনী বৈতরণী পার হওয়া কঠিন হবে। এ নিয়ে বিএনপির পেশাজীবীরা আলাপ আলোচনা করছেন। শিগগির বিষয়টি পরিষ্কার হবে।

নেতাকর্মীদের মামলার কাগজপত্র নিয়ে আইনজীবীদের সঙ্গে যোগাযোগ করার জন্য বলা হয়েছে।

তবে এর আগে দলীয় প্রার্থী ও নেতাকর্মীদের হয়রানি বন্ধসহ বেশ কিছু দাবি নিয়ে নির্বাচন কমিশনে প্রতিনিধি দল পাঠাবে বিএনপি। প্রতিনিধি দল কমিশনের মেজাজ এবং আন্তরিকতা বোঝার চেষ্টা করবে। তারা জানার চেষ্টা করবে সরকার আসলে কি চায়?

ঢাকা সিটি করপোরেশনের দুইভাগে মেয়র পদে বিএনপি নেতাদের মধ্যে মনোনয়নপত্র নিয়েছেন ছয়জন।

এদের মধ্যে কারাগারে আছেন নাসির উদ্দিন আহমেদ পিন্টু । গ্রেপ্তারি পরোয়ানা আছে মির্জা আব্বাস এবং আবদুল আউয়াল মিন্টুর বিরুদ্ধে। আবদুস সালাম ও সাবেক কমিশনার আবুল বাশার আছেন আত্মগোপনে। তাদের দুজনের বিরুদ্ধেও একাধিক মামলা আছে।

মামলা থাকলেও রবিবার নিজে হাজির হয়ে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন ড. আসাদুজ্জামান রিপন। অন্যরা পরিবারের সদস্য অথবা আইনজীবীদের দিয়েই মনোনয়নপত্র সংগ্রহ ও জমার কাজ শেষ করেছেন।

অন্যদিকে কাউন্সিলর পদে যারা মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন তাদেরও প্রায় সবার বিরুদ্ধে আছে একাধিক মামলা।

দলীয় সূত্রে জানা গেছে, নির্বাচনে থাকতে বিএনপি শেষ পর্যন্ত চেষ্টা করবে। দলটির নেতারা বলছেন, সরকার যদি আসলেই চায় বিএনপি নির্বাচনে থাকুক তাহলে যেসব প্রার্থী মামলাগত ঝামেলায় আছেন তাদের জামিনের ক্ষেত্রে ইতিবাচক পদক্ষেপ নেবে। হয়রাণি বন্ধ করা হবে। দলের কেন্দ্রীয় ও মহানগর কার্যালয় খুলে দেয়া হবে।

কিন্তু সরকারের পক্ষ থেকে কোনো ইতিবাচক সাড়া না আসলে নির্বাচন নিয়ে তারা নতুন করে ভাববেন।

বিএনপির প্রার্থীদের নিয়ে কাজ করছেন দলটির এমন একজন কেন্দ্রীয় নেতা এক প্রশ্নের জবাবে  বলেন, “সরকার কি করে তার ওপর অনেক কিছু নির্ভর করে। তারা (সরকার) তো বলছে বিএনপি নির্বাচনে আসুক। এখন প্রার্থীরা আদালতে জামিন চাইতে গেলে বোঝা যাবে তারা কতটা আন্তরিক।”

সরকারের সঙ্গে বিএনপির পক্ষ থেকে এ বিষয়ে কোনো আলোচনা হচ্ছে কিনা এমন প্রশ্ন করলে তিনি বিষয়টি এড়িয়ে যান।

বিএনপিপন্থি আইনজীবী অ্যাডভোকেট সানাউল্লাহ মিয়া  বলেন, “দলের নির্দেশনার পাশাপাশি প্রার্থীরাও জামিনের বিষয়টি নিয়ে আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন। মনোনয়নপত্র যাচাই বাছাই শেষ হলে আমরা আদালতের কাছে তাদের জামিনের আবেদন করবো।”

এছাড়া নির্বাচনকালীন সময় প্রার্থী ও ভোটাররা যাতে নির্বিঘেœ কাজ করতে পারেন সেজন্য বিএনপির পক্ষ থেকেও সহযোগিতা চাওয়া হবে বলে জানান এই আইনজীবী।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য লে: জেনারেল (অব:) মাহবুবুর রহমান  বলেন, “বিএনপি ইতিবাচক চিন্তা করলেও সরকার এগিয়ে আসছে না। প্রার্থীরা নির্বিঘেœ কাজ করতে পারেন সেজন্য আমরা সরকার ও নির্বাচন কমিশনের সহযোগিতা চাই।”



মন্তব্য চালু নেই