পৌর নির্বাচন: চট্টগ্রামের রাউজানে আ.লীগের ফাঁকা মাঠে গোল

চট্টগ্রামের রাউজান পৌরসভা নির্বাচনে সাধারণ ও সংরক্ষিত সাতটি ওয়ার্ডে ফাঁকা মাঠে গোল দিতে যাচ্ছে আওয়ামী লীগ। এসব ওয়ার্ডে বিএনপি কিংবা স্বতন্ত্র কোনো প্রার্থী না থাকায় বিনা প্রতিদ্বন্দ্বতায় বিজয়ী হতে চলেছেন সাধারণ ছয়টি এবং একটি সংরক্ষিত ওয়াডের প্রার্থীরা।
মনোনয়নের যাচাই-বাছাইয়ে কোনো ত্রুটি ধরা না পড়লে এই সাতজন প্রার্থীর বিজয় অনেকটা নিশ্চিত হয়ে গেছে। প্রায় বিজয় নিশ্চিত কাউন্সিলর প্রার্থিদের একজন নতুন মুখ ছাড়া বাকি সবাই পুরোনো। একমাত্র প্রার্থী হওয়ায় বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বিজয়ের পথে ওয়ার্ডগুলোর প্রার্থীদের পাশাপাশি তাদের ভোটাররাও স্বস্তিবোধ করছে। তাদের মধ্যে উল্লাসের ভাবও দেখা গেছে। এদিকে স্থানীয় এক সূত্রে জানা গেছে, শুধু এই সাতজনই নয়, আরও তিনটি সাধারণ পুরুষ কাউন্সিলর পদেও আওয়ামী লীগের একক প্রার্থী হওয়ার বিষয়টি চূঙান্ত হয়েছে। যদিও ওইসব ওয়ার্ডের মধ্যে দুটি ওয়ার্ডে দুইজন করে এবং একটি ওয়ার্ডে তিনজন প্রতিদ্বন্দ্বী রয়েছেন।
তবে গোপন সূত্রের খবর পাওয়া গেছে, ১৩ ডিসেম্বর মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিনে এই তিন ওয়াডের একজন করে ছাড়া বাকি প্রার্থীদের সবাই মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করবেন। আর তা হলে সাত বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বিজয়ীর সাথে যোগ হবে আরও তিনজন। এতে মোট বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় আওয়ামী লীগের বিজয়ী কাউন্সিলর হবেন দশজন।
বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হতে চলা কাউন্সিলর প্রার্থীরা হলেন-কাউন্সিলর পদে ২নং ওয়ার্ডে বর্তমান প্যানেল মেয়র বশির উদ্দিন খান (আ.লীগ মনোনীত), ৯নং ওয়ার্ডে বর্তমান কাউন্সিলর ও ২য় প্যানেল মেয়র জমির উদ্দিন পারভেজ (আ.লীগ মনোনীত), ৬নং ওয়ার্ডে বর্তমান কাউন্সিলর অ্যাডভোকেট সমীর দাশগুপ্ত (আ.লীগ মনোনীত), ১নং ওয়ার্ডে বর্তমান কাউন্সিলর আলমগীর আলী (আ.লীগ মনোনীত), ৪নং ওয়ার্ডে মোহাম্মদ শওকত হাসান (আ.লীগ মনোনীত), ৭নং ওয়ার্ডের বর্তমান কাউন্সিলর আজাদ হোসেন (আ.লীগ মনোনীত), ও ৭,৮.৯ নং ওয়ার্ডে বর্তমান কাউন্সিলর জান্নাতুল ফেরদৌস ডলি (আ.লীগ মনোনীত)।
বাকি তিনটি ওয়ার্ডেও একক প্রার্থী করার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়েছে আওয়ামী লীগ। সেই ওয়ার্ডগুলো হচ্ছে ৩নং, ৫নং ও ৮নং ওয়ার্ড।
এদিকে বিএনপি থেকে কোনো কাউন্সিলর প্রার্থী নির্ধারণ না করার কথা স্বীকার করলেও অনেক বিএনপি সমর্থক ও সমমনা কাউন্সিলর প্রার্থী ভয়ে মনোনয়ন ফরম জমা করতে পারেননি বলে অভিযোগ করেছেন উত্তর জেলা বিএনপির সদস্য সচিব ও বর্তমান মেয়র কাজী আবদুল্লাহ আল হাছান। তবে কোনো কাউন্সিলর প্রার্থী মনোনয়ন ফরম জমা দিতে এসে পারেননি এমন কোনো অভিযোগ কোথাও আসেনি বলে জানান উপজেলা নির্বাচন অফিসের কর্মকর্তারা।রাউজান
বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বিজয়ী হতে যাওয়ার ব্যাপারে বর্তমান প্যানেল মেয়র ও ৩নং ওয়াডের বর্তমান কাউন্সিলর বশির উদ্দিন খান বলেন ‘আমি এর আগে তিনবার কাউন্সিলর নির্বাচিত হয়েছি জনগণের ভোটে। এবার হলে চারবার নির্বাচিত হবো। উন্নয়ন, শান্তি শৃঙ্খলা বজায় রাখায় মানুষ শান্তিতে ঘুমিয়েছে। মানুষের পাশে থেকে সবসময় কাজ করেছি। মানুষ আমাকে ছাঙা আর কাউকে যোগ্য বলে মনে করে না। এজন্যে আর কেউ প্রার্থী হননি।
বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বিজয়ী হতে যাওয়ার ব্যাপারে ৯নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর জমির উদ্দিন পারভেজ বলেন এলাকায় আমার ব্যাপক উন্নয়ন কাজ দেখে মানুষ ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। একারণে কেউ আমার বিপক্ষে নির্বাচন না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আমি সবসময় মানুষের পাশে ছিলাম, ভবিষ্যতেও মানুষ আমাকে কাছে পাবে। সে কারণে মানুষ আমার বিকল্প চিন্তা করেনি।
১নং ওয়াডের বর্তমান কাউন্সিলর ও নির্বাচিত হওয়ার পথে থাকা আলমগীর আলী বলেন গত দুইবার আমি বিপুল ভোটে কাউন্সিলর নির্বাচিত হই। একারণে মানুষের সাথে আমার গভীর সম্পর্ক গড়ে উঠে। তাদের সুখে, দুঃখে আমি ছিলাম সবসময় পাশে। মানুষকে আমি এত বেশি সময় দিয়েছি যে, কেউ আমার বিপক্ষে নির্বাচন করে সুবিধা পাবে, সে অবস্থা আমি রাখিনি। এজন্যে কেউ আমার সাথে প্রতিদ্বনিদ্বতা করার আগ্রহও করেনি।
এব্যাপারে ৭.৮.৯ নং ওয়াডের বর্তমান কাউন্সিলর জান্নাতুল ফেরদৌস ডলি বলেন, গত নির্বাচনে বিজয়ী হওয়ার পর দলের প্রত্যেকটি কাজে এবং ওয়াডের মানুষের সাথে আমার যোগাযোগ ছিল বেশি। মানুষের সেবা করারও চেষ্টা করেছি। এজন্যে আমার সাথে কেউ প্রতিদ্বনিদ্বতা করেনি।



মন্তব্য চালু নেই