পেনশনে কপাল খুলছে বেসরকারি চাকরিজীবীদের

কপাল খুলছে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত চাকরিজীবীদের। আগামীতে বেসরকারি খাতের চাকরিজীবীদেরও পেনশন দেওয়ার পরিকল্পনা করছে সরকার।

বৃহস্পতিবার বিকেলে জাতীয় সংসদে ২০১৬-১৭ অর্থবছরের বাজেট প্রস্তাবকালে এমনই পরিকল্পনার কথা জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। অর্থমন্ত্রী এমন ঘোষণায় তাৎক্ষণিক খুশিতে আত্মহারা বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের চাকরিজীবীরা।

একটি বেসরকারি ওষুধ কোম্পানিতে চাকরি করেন হাছান আলী। তিনি বলেন, চাকরি জীবনের শেষ বেলায় এমন আর্থিক নিরাপত্তা মিলবে, তা কল্পনায় ছিল না।

শাহজালাল ইসলামী ব্যাংকের কর্মকর্তা অমি রহমান বলেন, এটি সবার জন্যই আশীর্বাদ। এর ফলে সরকারি চাকরিজীবীদের সঙ্গে যে আর্থিক বৈষম্য ছিল, তা অনেকটাই লাঘব করবে।

অর্থমন্ত্রী তার বাজেট বক্তৃতায় বলেন, বর্তমানে আমাদের কর্মক্ষম জনগোষ্ঠীর মাত্র ৫ শতাংশ সরকারি চাকরিতে নিয়োজিত, যাদের জন্য পেনশন সুবিধা রয়েছে।

অন্যদিকে, ব্যক্তিখাতের ৯৫ শতাংশের মধ্যে আনুষ্ঠানিকভাবে নিযুক্ত প্রায় ৮ শতাংশের কিছু অংশ গ্রাচ্যুইটি সুবিধা পেলেও বাকিদের জন্য কোনো সুবিধায় নেই।

“জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার হ্রাস ও গড় আয়ু বৃদ্ধির কারণে জনমিতিক কাঠামো পরিবর্তন হচ্ছে। এতে প্রবীণদের সংখ্যা এবং মোট জনগোষ্ঠীতে এর অনুপাত ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে। অন্যদিকে, নগরায়নের কারণে একক পরিবারের সংখ্যাও বাড়ছে, যা ভবিষ্যতে প্রবীণদের আর্থিক ও সামাজিকভাবে নিরাপত্তাহীন হওয়ার ঝুঁকি বৃদ্ধি করছে। সরকারের একার পক্ষে এ ঝুঁকি মোকাবেলা দুরূহ হবে। এ প্রেক্ষাপটে সকল শ্রমজীবী জনগোষ্ঠীসহ প্রবীণদের জন্য একটি সার্বজনীন ও টেকসই পেনশন পদ্ধতি প্রবর্তন এখন সময়ের দাবি।

তিনি আরও বলেন, এ লক্ষ্যে আমরা পেনশন ব্যবস্থায় আমূল পরিবর্তন আনার কথা ভাবছি। এতে ভবিষ্যতে যোগদানকারী সকল সরকারি চাকুরিজীবীর জন্য বিদ্যমান পেনশন পদ্ধতি পরিবর্তন করে অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে পেনশন পদ্ধতি চালু করা হবে। পর্যায়ক্রমে, আধা-সরকারি ও ব্যক্তিখাতে আনুষ্ঠানিকভাবে এবং অনানুষ্ঠানিক বা স্ব-কর্মসংস্থানে নিযুক্ত কর্মজীবীসহ সকল স্তরের জনগোষ্ঠীর জন্য সরকার নিয়ন্ত্রিত একটি সমন্বিত কাঠামোর আওতায় সার্বজনীন পেনশন ব্যবস্থা প্রণয়নের পরিকল্পনা গ্রহণ করেছি।

অর্থমন্ত্রী বলেন, ডিপিএস ব্যবস্থা যেভাবে বেসরকারি খাতে একটি পেনশন সুযোগ করে দিয়েছে, এখন এটাকে সার্বজনীন করার জন্য কি ব্যবস্থা নেয়া যায় সেটিই হবে নতুন পরিকল্পনার ভিত্তি। এ ব্যবস্থায় একদিকে যেমন প্রবীণদের আর্থিক ও সামাজিক সুরক্ষা নিশ্চিত হবে, অন্যদিকে দেশের আর্থিক খাতের গভীরতা নিশ্চিতসহ দীর্ঘমেয়াদি বিনিয়োগ চাহিদা পূরণে সহায়ক তহবিল সৃষ্টি করবে।



মন্তব্য চালু নেই