পৃথিবীর সবচেয়ে বিষাক্ত সাপ রয়েছে সুন্দরবনে

পৃথিবীর সবচেয়ে বড় বিষধর সাপ শঙ্খচূড় (King Cobra)। এই সাপের সবচেয়ে বেশি দেখা পাওয়া যায় বাংলাদেশের সুন্দরবনে। শঙ্খচূড় সম্পূর্ণ আলাদা প্রজাতির একটি সাপ। এই সাপ লম্বায় ৫.৬ মিটার (১৮.৫ ফুট) পর্যন্ত হতে পারে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে সম্পূর্ণ দক্ষিণ এশিয়ার বণাঞ্চল জুড়েই শঙ্খচূড় দেখা যায়। সাপের মধ্যে সবচেয়ে বড় আকৃতির অজগর (Python) হলেও বিষাক্ত সাপের মধ্যে সবচেয়ে বড় শঙ্খচূড়। গোখরা সাপের (Cobra) সঙ্গে কিছুটা মি আছে, তাই এই সাপকে রাজ গোখরা বা King Kobra বলা হয়। এদের বিষ ধারণ ক্ষমতাও সবচেয়ে বেশি। যে পরিমাণ বিষ এরা থলিতে জমা রাখে তাতে মানুষ তো মারা যায়-ই, পূর্ণ বয়স্ক একটি হাতিরও মৃত্যু হয় ৩ ঘণ্টার মধ্যে। এরা সহজে মানুষের কাছাকাছি আসে না। ফণা তুলে শুধু ভয় দেখায়

Ophiophagus শঙ্খচূড় সাপের প্রজাতির নাম। যার অর্থ সাপ খাদক, এবং প্রাথমিকভাবে এটি অন্যান্য সাপ ভক্ষণ করেই তার খাদ্য চাহিদা মেটায়। যে সকল সাপ এটি ভক্ষণ করে তার মধ্যে আছে র‌্যাট সাপ, এবং ছোট আকৃতির অজগর। এছাড়াও অন্যান্য বিষধর সাপও ভক্ষণ করে, যেমন: ক্রেইট, গোখরা, এবং নিজ প্রজাতিভুক্ত অন্যান্য ছোট সাপ। Cobra-2 শঙ্খচূড় সাপের বিষ নিউরোটক্সিক, অর্থাৎ এটির বিষ আক্রান্ত প্রাণীর স্নায়ুতন্ত্রে আক্রমণ করে। শঙ্খচূড়ের একটি সিম্পল দংশনই যে কোনো মানুষকে মেরে ফেলার জন্য যথেষ্ট। এর কামড়ের ফলে সৃষ্ট মৃত্যু হার প্রায় ৭৫%।

সুন্দরবনের গভীরে এই সাপের অস্তিত্ব দেখতে পাওয়া যায়। ডিম পাড়ার আগে স্ত্রী শঙ্খচূড় তা শরীর পাকিয়ে কুণ্ডুলী তৈরি করে, এবং তা মৃত পাতা ব্যবহার করে উঁচু ঢিপির মতো তৈরি করে। পরবর্তীতে সেখানে ২০ থেকে ৪০টির মতো ডিম পাড়া হয়। কুন্ডুলী পাকানো দেহটি ইনকিউবেটরের মতো কাজ করে। বাচ্চা ফোটার আগ পর্যন্ত শঙ্খচূড় তার ঢিপিটিকে বিরামহীনভাবে পাহারা দিতে থাকে, এবং কোনো প্রাণী যেনো কাছে আসতে না পারে, সেদিকে লক্ষ্য রাখে।

ঢিবির মধ্যে প্রায় ২৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় ডিমগুলোকে তা দেওয়া হয়। বাচ্চা ফোটার পর তা নিজে নিজেই ডিমের খোলস ভেঙে বেরিয়ে যায় এবং নিজেই নিজের শিকার খুঁজতে থাকে, এজন্য মাকে তার নিজের বাচ্চা ভক্ষণ করতে হয় না। শিশু শঙ্খচূড়ের দৈর্ঘ হয় প্রায় ৫৫ সেন্টিমিটার এবং এদের বিষ প্রাপ্তবয়স্কদের মতোই। মানে এর কামড় বড় সাপের কোনো অংশে কম না।



মন্তব্য চালু নেই