পৃথিবীর যত প্রাচীন সুর ও গান

নানারকম গান আর সুর প্রতিদিনই শুনি আমরা। বিশেষ করে তথ্য-প্রযুক্তির এই যুগে পৃথিবীর যেকোন প্রান্তের যেকোন সঙ্গীত মুহূর্তে পৌঁছে যায় আমাদের হাতেরই মুঠোয়। বর্তমান সময়ের এই সঙ্গীত আর সুরগুলোকেতো আমরা শুনি। কিন্তু কখনো কি জানতে ইচ্ছে হয়েছে যে অতীতেও এমনভাবেই সুর বেজে উঠতো কিনা পৃথিবীর বাসিন্দাদের গলায়? কেমন ছিল সেই সুরগুলো? চলুন জেনে আসি এমনই কিছু প্রাচীন সুরকে।

১. হারিয়ান হাইম নম্বর-৬

১৯৫৫ সালের কথা। সিরিয়ার ইউগাইর্টের প্রাসাদে একজন নৃতত্ত্ববিদ আবিষ্কার করেন প্রাচীন এক ট্যাবলেট, যেটার ভেতরের অঙ্কনগুলো খুব সহজেই বুঝিয়ে দিচ্ছিল যে এটি সাধারণ কথা-বার্তা নয়। বরং অনেকটা সঙ্গীত আর সুরের ইন্সট্রাকশন যেন। ৩,৪০০ বছর পূর্বে রচিত এই সুর আর গানকেই পৃথিবীর প্রাচীনতম কম্পোজিশন বলে মনে করা হয়। ট্যাবলেটের কিছু অংশ মেসোপটেমিয়ার একটি ভাষা হারিয়ানের মতন। প্রভু নিককালকে উদ্দেশ্য করে রচনা করা হয়েছিল এই গান। তবে এটি থেকে পুরোপুরিভাবে অর্থ বের করতে পারেননি এখনো কেউ।

২. অষ্ট্রেলিয়ার আদিম সংগীত

প্রায় ৫০,০০০ বছর পুরোন এই অষ্ট্রেলিয়ার আদিম সংগীতগুলোর সৃষ্টি হয়েছিল অনেক অনেক বছর আগে। অষ্ট্রেলিয়ার রাস্তাঘাটের বর্ণনা এতটাই চমত্কারভাবে পাওয়া যায় এই গানগুলোতে যে এখনো সেটা ব্যবহার করা হয়। অবশ্য স্থান, কাল, পাত্র, ইতিহাসভেদে এই গানের ভেতরে এসেছে পরিবর্তন। তবে গান আর সুরের মুগ্ধতা রয়ে গিয়েছে একইরকম।

৩. ইনহারজাউয়ির হার্পারের গান

মিশরের থেবেসে অবস্থিত রাজকীয় কবরগুলোর ভেতরে পাওয়া গিয়েছে অসাধারণ কিছু কবিতা আর গান। ১১৬০ খ্রিষ্টাব্দের এই গানগুলোর ভেতরে রয়েছে অসম্ভব সুন্দর ইনহারজিউয়ির হার্পারের গান বা হার্পার্স সং। মিশরের তখনকার জীবনযাত্রা সম্পর্কে বেশ ভালো একটা ধারণা পাওয়া যায় এই গানটিতে।

৪. দ্যা বেথ গাজো

১,৮০০ বছর আগে তৈরি হয়েছিল এই গান। ক্রিষ্টিয়ানিটির সবচাইতে প্রচীন গান মনে করা হয় একে। যীশু খ্রীষ্ট ব্যবহৃত আরমানিক ভাষার একটি উপভাষা সিরিয়াকে রচিত হয়েছে এই গান। বেথ গাজোর রয়েছে হাজারটি সুর। তবে বর্তমানে সেই সুরের ভেতরে বেঁচে আছে মাত্র ৭০০ টি।

৫. সেইকিলোসের গান

১৮৮৩ সালে টার্কিতে নৃতত্ত্ববিদেরা হঠাত্ আবিষ্কার করেন মার্বেল সেলে অঙ্কিত একটি গান। কবে তৈরি হয়েছিল এটি সেটা ঠিক বোঝা না গেলেও খ্রিষ্টাব্দের প্রথম শতকেই সৃষ্টি হয়েছিল গানটি সেটা সম্পর্কে নিশ্চিত সবাই। যদি প্রাচীন কোন সুর থেকে থাকে পৃথিবীতে, তাহলে প্রচীন ও পূর্ণাঙ্গ সুর হিসেবে প্রথমে নাম থাকবে সেইকিলোসের।



মন্তব্য চালু নেই