পুজোর মধ্যে সমানে এটিএম-এ কার্ড ঢুকিয়েছেন? কার্ডের তথ্য সুরক্ষিত আছে তো?

এতদিন ক্রেডিট কার্ড জালিয়াতির কথাই সবচেয়ে বেশি শোনা গিয়েছে। কিন্তু, এবার দেশজুড়ে ৩০ লাখেরও বেশি ডেবিড কার্ডের গোপন তথ্য বের করে নিয়েছে হ্যাকাররা। আর এর জেরে স্টেট ব্যাংক অফ ইন্ডিয়া, এইচডিএফসি, অ্যাক্সিস ব্যাংক, আইসিসিআই ব্যাংক, ইয়েস ব্যাংক তাদের গ্রাহকদের সাবধান করেছে। এমনকী, ৬ লক্ষেরও বেশি ডেবিড কার্ড ব্লক করে দিয়েছে স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া। ইতিমধ্যেই বহু কার্ডের গোপন তথ্য হ্যাক করে অ্যাকাউন্ট থেকে অর্থ বের করে নেওয়া হয়েছে। এই কর্মকাণ্ডের মধ্যে দিয়ে আরও বড় কোনও ধরনের অর্থ জালিয়াতির ছক কষা হয়েছিল বলেই মনে করছে দেশের ব্যাংকগুলি।

এই পরিস্থিতিতে অধিকাংশ ব্যাংকই গ্রাহকদের ডেবিড কার্ড বদলে নিতে আর্জি রাখছে, অথবা ডেবিড কার্ডের সিকিউরিটি ইনফরমেশন আপডেট করে নেওয়ার কথা বলছে। কিন্তু, কীভাবে ৩০ লক্ষেরও বেশি ডেবিড কার্ড থেকে বেরিয়ে গেল যাবতীয় সিকউরিটি ইনফরমেশন?

জানি গিয়েছে, হিতাচি-র এটিএম পেমেন্ট গেটওয়েতে এই হ্যাকিং-এর ঘটনা ঘটেছে। হিতাচি দেশের মধ্যে অন্যতম বৃহৎ এটিএম পেমেন্ট গেটওয়ে ব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণ করে। হিতাচির অনলাইন সিস্টেমকে হ্যাক করে এর আওতায় থাকা যাবতীয় এটিএম মেশিনগুলিতে এটিএম ভাইরাস বা ম্যালওয়ার প্রবেশ করিয়ে দিয়েছিল হ্যাকাররা। যার জেরে এই সব এটিএমে যারা ডেবিড কার্ড সোয়াইপ করেছেন তাঁদের ডেবিড কার্ড থেকে সিভিসি নম্বর, কার্ড নম্বর থেকে পিন নম্বর এমনকী একজন গ্রাহকের প্রোফাইলের সমস্ত তথ্যই হ্যাকারদের কাছে চলে গিয়েছে। হিতাচি জানিয়েছে, মাসখানেক আগে এই ঘটনার সূত্রপাত। তবে, এই বিষয়টি নজরে আসার পরই তা অনলাইনেই প্রতিরোধ করা হয়। কিন্তু, ততক্ষণে ৩০ লক্ষেরও বেশি ডেবিড কার্ড থেকে গোপন তথ্য হ্যাকারদের হাতে চলে গিয়েছিল বলেও জানিয়েছে হিতাচি।

ভিসা এবং মাস্টার কার্ডের প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করা এমন ২৬ লক্ষ ডেবিড কার্ডে এই গোপন তথ্য ফাঁস হয়েছে বলে দাবি করা হচ্ছে। কেন্দ্রীয় সরকারে রুপে প্ল্যাটফর্মে থাকা ৬ লক্ষ ডেবিড কার্ডেরও একই হাল হয়েছে। যে সব ব্যাঙ্ক এই হ্যাকিং-এ সবচেয়ে বেশি ক্ষতির সামনে দাঁড়িয়ে সেগুলি হল স্টেট ব্যাংক অফ ইন্ডিয়া, এইচডিএফসি, অ্যাক্সিস ব্যাংক, আইসিসিআই ব্যাংক, ইয়েস ব্যাংক।

প্রাথমিকভাবে গ্রাহকদের বলা হচ্ছে ডেবিড কার্ডের পিন নম্বর বদলে ফেলতে। নিজস্ব ব্যাংক ছাড়া অন্য কোনও ব্যাংক-এর এটিএম-এর ডেবিড কার্ড সোয়াইপ করতে বারণ করা হচ্ছে। পিন নম্বর গোপন রাখতে বলা হচ্ছে। ফোনেও পিন নম্বর অন্যের সঙ্গে আদান-প্রদান করতে বারণ করা হচ্ছে।

তবে, এই জালিয়াতির জন্য যে সব গ্রাহকের অ্যাকাউন্ট থেকে অর্থ বের করেছে হ্যাকাররা তা ব্যাংক ফেরাবে না বলেই জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। কারণ, এটা এটিএম মেশিনে ম্যালওয়ার-এর হানায় হয়েছে। যদিও, এটিএম মেশিনগুলির পেমেন্ট গেটওয়ের কাজে যে সব সংস্থা রয়েছে তাদের সম্মিলিত প্ল্যাটফর্ম ‘পেমেন্ট কর্পোরেশন অফ ইন্ডিয়া’ বা ‘এনপিসিআই’ দাবি করেছে গ্রাহকদের কারোরই বড় রকমের অর্থ জালিয়াতি হয়নি। তাই, ক্ষতিপূরণ দেওয়ার প্রশ্ন নেই।



মন্তব্য চালু নেই