পায়ের নিচে মাটি নেই, বিদেশে তৎপর আইএস

তুরস্কের বিমানবন্দরে গত সপ্তাহের রোববার সন্ত্রাসী হামলায় নিহত হন ৪১ জন। পরে শুক্রবার হামলা হয় বাংলাদেশের রাজধানী গুলশানের একটি রেস্তোরাঁয়, যেখানে নিহত হন সন্ত্রাসীসহ ২৮ জন। গতকাল রোববার ভোরে শক্তিশালী বোমা হামলা হয় বাগদাদের বাণিজ্যিক এলাকায়। ভয়াবহ এই বোমা হামলায় নিহত ১২৫। মাত্র সাতদিনের মধ্যে ঘটা এসব ঘটনার প্রতিটিরই দায় স্বীকার করেছে মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক জঙ্গি সংগঠন ইসলামিক স্টেট (আইএস)।

উল্লিখিত এসব হামলার পরিপ্রেক্ষিতে আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা বলছেন, প্রথাগত সামরিক হামলায় ইরাক ও সিরিয়ায় দখলে থাকা অঞ্চল হারালেও আইএসই জঙ্গি সংগঠন সীমান্তহীন রাজ্য প্রতিষ্ঠা করছে। এটি আরো বিস্তৃত হচ্ছে। সীমান্তহীন রাজ্য প্রতিষ্ঠায় অন্যতম প্রতিদ্বন্দ্বী জঙ্গি সংগঠন আল-কায়েদার চেয়ে বেশ উন্নত আইএস।

দুই বছরেরও বেশি সময় ধরে সদস্য সংগ্রহ, প্রশিক্ষণ এবং পরে তাঁদের পশ্চিমা দেশে পাঠানোর প্রক্রিয়া চালাচ্ছে আইএস। ঘরে বারবার বিভিন্ন সামরিক হামলার শিকার হলেও বিশ্বজুড়ে একের পর এক আঘাত হানছে তারা। যুক্তরাষ্ট্রের বিমান হামলার সহায়তায় গত মাসেই ইরাকি সেনাবাহিনী ইরাকের ফালুজা শহর দখল করেছে। এই শহর দীর্ঘদিন ধরেই আইএসের শক্ত ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত ছিল।

মার্কিন নিরাপত্তাবিষয়ক সংস্থা র‍্যান্ড করপোরেশনের জ্যেষ্ঠ নীতি বিশ্লেষক এবং যুক্তরাষ্ট্রের সন্ত্রাসবাদ দমনবিষয়ক সংস্থা এনসিসির সাবেক উপপরিচালক অ্যান্ড্রু এম লাইপম্যান বলেন, হামলাগুলোকে কোনো নির্দিষ্ট ছকে ফেলা যায় না। কিছু হামলা কেন্দ্রীয়ভাবে পরিকল্পিত, কিছু হামলায় আইএস কিছুটা জড়িত, কিছু হামলা পুরোপুরিই স্থানীয়ভাবে পরিচালিত হয়। হামলার হুমকি জটিল হয়ে দেখা দিচ্ছে।

যুক্তরাষ্ট্রের হাউস ইনটেলিজেন্স কমিটির শীর্ষ ডেমোক্রেট সদস্য ক্যালিফোর্নিয়া অঙ্গরাজ্যের প্রতিনিধি অ্যাডাম বি এসচিফ বলেন, বিশ্বজুড়ে জঙ্গিবাদের ধরন পাল্টাচ্ছে, যে জন্য নতুনভাবে পরিকল্পনা নেওয়া প্রয়োজন।

সিরিয়া ও ইরাকের বাইরে জঙ্গিবাদ দমনে নেওয়া পদক্ষেপ প্রসঙ্গে হতাশা প্রকাশ করেন যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএর পরিচালক জন ও ব্রায়ান। তিনি বলেন, জঙ্গিরা যেভাবে পরিবর্তন হচ্ছে সেখানে এদের দমনে নেওয়া পদক্ষেপ ততটা কার্যকর নয়।

গত ২১ মার্চ আইএস মুখপাত্র আবু মোহাম্মদ আল-আদনানি এক অডিও বার্তায় দাবি করেন, সংগঠনটি এর মূল হিসেবে রাখতে গেরিলা হামলা চালাচ্ছে। এর মাধ্যমে এটিই বোঝা যায়, সিরিয়া ও ইরাকের শক্তিশালী ঘাঁটি কোনো না কোনো সময় হারাতে হবে বলে বুঝতে পেরেছে আইএস। ওই অডিওবার্তায় বিশ্বের আইএস সমর্থক জঙ্গিগোষ্ঠীকে যে কোনোভাবে শত্রুদের ওপর হামলা অব্যাহত রাখার আহ্বান জানানো হয়।



মন্তব্য চালু নেই