পাঠ্যবইয়ে বিভ্রান্তিকর তথ্য : মুসা ইব্রাহীমের বিরুদ্ধে রাজশাহীতে মামলা

প্রাথমিকের পাঠ্যবইয়ে এভারেস্ট বিজয় নিয়ে বিভ্রান্তিকর তথ্য প্রকাশের অভিযোগে রাজশাহীর একটি আদালতে দেশের প্রথম এভারেস্ট জয়ী দাবিদার মুসা ইব্রাহীমের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে।

রোববার রাজশাহী সদর সিনিয়র জজ আদালতে এ মামলা করেন রাজশাহী বার অ্যাসোসিয়েশনের আইনজীবী আহমেদ ইবনুল ওয়াক্ত এবং হাসান ইমাম।

১০১ ধারায় দায়ের করা মামলাটি শুনানির জন্য আগামী ৯ জুন দিন ধার্য করেছেন আদালতের বিচারক।

আইনজীবী আহমেদ ইবনুল ওয়াক্ত জানান, পঞ্চম শ্রেণীর ‘আমার বাংলা বই’ এ মুসা ইব্রাহীমের হিমালয় জয় বিষয়ে ‘হিমালয়ের শীর্ষে বাংলাদেশের পতাকা’ নামক একটি নিবন্ধ প্রকাশিত হয়েছে। নিবন্ধে মুসা ইব্রাহীম অনেক বিভ্রান্তিকর ও মনগড়া তথ্য দিয়েছেন।

বাদীপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট সারওয়ার জাহান সাদি জানান, বাদি মামলাটি করেছেন বইটির ওয়েবসাইট ও জুলাই ২০১২ সালের সংস্করণের ভিত্তিতে। আরজিতে দাবি করেছেন, রচনাটির প্রথম অনুচ্ছেদের শেষ সারিতে লেখা মুসা ইব্রাহীমের হিমালয়ের সর্বোচ্চ চূড়ায় আরোহণের সময়ের জায়গায় লেখা রয়েছে ‘ভোর ৫ টা ৫৫ মিনিট’। এটা সঠিক নয়। মামলার আরজিতে উল্লেখ করেছেন মুসার সনদে লেখা রয়েছে ৬টা ৫০ মিনিট। তিনি হিমালয়ান ডাটা বেজের উদ্ধৃতি দিয়ে বলেন, সেখানে লেখা রয়েছে ৪টা ৫০ মিনিট। তবে ২০১৩ সালের সেপ্টেম্বর মাসে সংস্করণে এই জায়গায় লেখা রয়েছে ভোর ৫টা ১৬ মিনিট।

আরজিতে দ্বিতীয় অভিযোগ আনা হয়েছে, মুসা ইব্রাহীমের ছোটবেলায় বাবার সঙ্গে ঠাকুরগাঁও শহরের এক জায়গায় যাওয়ার কথা বলা আছে, যেখান থেকে এভারেস্টের কিছু অংশ দেখা যায়। মামলার আরজিতে দাবি করা হয়েছে ঠাকুরগাঁও থেকে এভারেস্টের কোনো অংশই দেখা যায় না। তিনি ঠাকুরগাঁও জেলা বাতায়ন ও বাংলাপিডিয়ার তথ্য দিয়ে তা প্রমাণ করেছেন।

আরজিতে বলা হয়েছে বইটির ১০৭ নম্বর পৃষ্ঠায় ১৫তম সারিতে এভারেস্টের উচ্চতার জায়গায় বলা হয়েছে ২৯ হাজার ৩৫ মিটার। সঠিক উচ্চতা হবে আট হাজার ৮৪৮ মিটার। অবশ্য ২০১৩ সালের সেপ্টেম্বর সংস্করণের সঠিক উচ্চতাই দেয়া রয়েছে, জানালে তিনি আবার ওয়েবসাইটের উদাহরণ টেনে বলেন, ওয়েবসাইট তো এখন তথ্যের উৎস।

তার আরজিতে বইটির ১০৯ নম্বর পৃষ্ঠার অষ্টম সারিতে দেয়া বেস ক্যাম্পের উচ্চতা নিয়ে অভিযোগ আনা হয়েছে। আরজিতে বলা হয়েছে ওয়েবসাইট ও তার কাছের বইতে বেস ক্যাম্পের উচ্চতা দেয়া হয়েছে ছয় হাজার ৪৫০ মিটার। অথচ প্রকৃত উচ্চতা হবে ছয় হাজার ৪৯০ মিটার। অবশ্য ২০১৩ সালের সেপ্টেম্বর সংস্করণে দেয়া রয়েছে ২১ হাজার ফুট।

অ্যাডভোকেট সারওয়ার জাহান সাদি আরো জানান, জনস্বার্থে মামলাটি দায়ের করা হয়েছে। এই মামলায় মুসা ইব্রাহীম ছাড়াও আরো চার জনকে আসামি করা হয়েছে। অন্য আসামিরা হলেন শিক্ষামন্ত্রণালয়ের সচিব, সরকারি প্রেসের পরিচালক ও বাংলাদেশ সরকার।



মন্তব্য চালু নেই