পাকিস্তানে সেনা স্কুলে তালেবান হামলা, নিহত ১৩০

পাকিস্তানের খাইবার পাখতুনখাওয়া প্রদেশের রাজধানী পেশোয়ারে সেনাবাহিনী পরিচালিত আর্মি পাবলিক স্কুলে তালেবানের হামলায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ১৩০ জন হয়েছে। এর মধ্যে ৮৪ জনের বেশি শিশু রয়েছে।

হামলায় আহত হয়েছে অনেক শিক্ষার্থী। যাদের উদ্ধার করা গেছে, তাদের হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছে বেশ কয়েকজন।

ডন অনলাইনের খবরে এ তথ্য জানানো হয়েছে। পাকিস্তানের স্থানীয় সময় সকাল ১০টায় স্কুলে হামলা শুরু করে তালেবান সদস্যরা।

পাকিস্তানি কর্মকর্তারা জানান, পাঁচ থেকে ছয়জন বন্দুকধারী সেনাবাহিনীর ইউনিফর্ম পরে স্কুলের দেয়াল টপকে ভেতরে ঢুকে পড়ে। তারা অস্ত্রের মুখে প্রায় ৫০০ শিক্ষক ও শিক্ষার্থীকে জিম্মি করে। তবে ঘটনার সময় স্কুলটিতে কতজন উপস্থিত ছিলেন, তা সঠিকভাবে জানা যায়নি।

পাকিস্তানের সেনাবাহিনীর কর্মকর্তারা দাবি করেছেন, এরই মধ্যে স্কুলটির ৫০০ শিক্ষক-শিক্ষার্থীকে উদ্ধার করে নিরাপদে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। তবে এখনো কতজন শিক্ষার্থী তালেবানের হাতে জিম্মি রয়েছে, তা নিশ্চিত নয়।

জিম্মি শিক্ষার্থীদের উদ্ধারে সেনাবাহিনী প্রায় ছয় ঘণ্টা ধরে অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে। সেনাবাহিনীর আইএসপিআরের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, জঙ্গিদের দখলে থাকা স্কুলিটির সবশেষ চারটি ব্লকের তিনটিই উদ্ধার করা গেছে। বাকি একটি ব্লকে সেনা সদস্যরা অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে। শিগগির এটিও সেনারা দখলে নিতে পারবে বলে আশা প্রকাশ করা হয়েছে।

সেনা অভিযানের সময় কতজন জঙ্গি মারা গেছে, তা সঠিকভাবে জানা না গেলেও কোনো কোনো সংবাদমাধ্যমে বলা হয়েছে, চারজন তালেবান সদস্য নিহত হয়েছে।

তেহরিক-ই-তালিবান পাকিস্তান (টিটিপি) এ হামলার দায় স্বীকার করেছে। তাদের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, সেনা অভিযানের জবাব দিতেই এ হামলা চালানো হয়েছে। দেশটির উত্তর ওয়াজিরিস্তান ও খাইবারে পরিচালিত তালেবানবিরোধী সেনা অভিযানে কয়েক শ তালেবান সদস্য মারা গেছে।

জিও টিভিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে স্কুলের এক কর্মী ও একজন ছাত্র জানিয়েছে, আর্মি পাবলিক স্কুলের অডিটোরিয়ামে অতর্কিতে ঢুকে পড়ে অস্ত্রধারী তালেবান সদস্যরা। সেখানে শিক্ষার্থীদের নিয়ে প্রাথমিক সেবামূলক একটি প্রশিক্ষণ চলছিল।

ধারণা করা হচ্ছে, স্কুলের ভেতর একটি আত্মঘাতী বোমা হামলায় অধিকাংশ শিক্ষার্থী নিহত হয়েছে।

পাকিস্তানে প্রায়ই তালেবানরা হামলা চালায়। তবে মঙ্গলবারের হামলা দেশজুড়ে শোকের ছায়া ফেলেছে। এত বড় গণহত্যা দেশটির অস্তিত্বের জন্য হুমকি সৃষ্টি করেছে।

পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ পেশোয়ারে পৌঁছেছেন। সেখানে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় তিন দিনের রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা করেন তিনি। দেশটির প্রেসিডেন্ট মামনুন হোসাইন এ ঘটনায় গভীর শোক প্রকাশ করেছেন।

এদিকে পাকিস্তানে তালেবানের এই বর্বর হামলায় নিহতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়ে টুইট করেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তিনি বলেছেন, শোকসন্তপ্ত পরিবারগুলোর সঙ্গে আমিও শোকাহত। ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংও গভীর শোক প্রকাশ করে টুইট করেছেন।

তথ্যসূত্র : ডন ও বিবিসি।



মন্তব্য চালু নেই