পাইলট তাহমিদের সন্ধান অনিশ্চিত

চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙরের কাছে বঙ্গোপসাগরে বিধ্বস্ত বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর প্রশিক্ষণ বিমান এফ-৭-এর নিখোঁজ পাইলট ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট তাহমিদের সন্ধান পাওয়া অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।

গত তিন দিন একটানা অনুসন্ধান করেও বিধ্বস্ত ফ্লাইটের তিনটি ধ্বংসাবশেষ ছাড়া আর কিছুই উদ্ধার করতে পারেনি নৌবাহিনী ও কোস্টগার্ড।

বিধ্বস্ত বিমানটির সন্ধান পাওয়া যায়নি। নিখোঁজ পাইলটের ভাগ্যে কী ঘটেছে, এখনো তা নিশ্চিত করা যাচ্ছে না। এর মধ্যে সাগর উত্তাল থাকার কারণে বুধবার থেকে অনুসন্ধানে বিঘ্ন ঘটছে বলে নৌবাহিনী সূত্র জানিয়েছে।

বৃহস্পতিবার সকাল থেকে কার্যত অনুসন্ধান অনেকটা বন্ধ রয়েছে। কোস্টগার্ড যেসব শার্কবোড দিয়ে সাগরে অনুসন্ধান চালাচ্ছে, সাগর উত্তাল থাকার কারণে এসব শার্কবোর্ড সাগরে বেশি সময় অবস্থান করতে পারছে না।

ফলে অনুসন্ধান কার্যক্রম ক্ষণে ক্ষণে বন্ধ থাকছে। গত সোমবার দুর্ঘটনার পর থেকে বিমানবাহিনী, কোস্টগার্ড যৌথভাবে অভিযান পরিচালনা করলেও বৃহস্পতিবার দুপুর পর্যন্ত পাইলট তাহমিদের সন্ধান পাওয়া যায়নি।

সোমবার সকাল ১১টায় যুদ্ধবিমানটি বিধ্বস্ত হওয়ার পর থেকে পতেঙ্গা সমুদ্রসৈকত এলাকায় প্রায় ৩০ বর্গকিলোমিটার এলাকা কর্ডন করে তল্লাশি অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে।

চট্টগ্রাম কোস্টগার্ড পূর্ব জোনের কর্মকর্তা লে. কমান্ডার নুরুল হুদা জানান, সোমবার দুপুর থেকে আমরা বঙ্গোপসাগরে অনুসন্ধানে রয়েছি। নিখোঁজ পাইলটের সন্ধানে নৌবাহিনী স্লাইড স্ক্যানার সোনার নামক বিশেষ যন্ত্রের মাধ্যমে তল্লাশি চালাচ্ছে। এই স্ক্যানের মাধ্যমে সমুদ্রের তলদেশের চিত্রও স্পষ্ট দেখা যায়।

কিন্তু গত তিন দিনে সাগরের তলদেশে পলি জমে সবকিছু চাপা পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। এতে হয়তো স্ক্যানারেও কিছু দৃশ্যমান হচ্ছে না। নৌবাহিনীর জাহাজ অতন্দ্র, মধুমতি ও সুরভি পুরো এলাকা কর্ডন করে রেখে অভিযান অব্যাহত রেখেছে।

কর্ডন এলাকার ভেতরে বাইরে অবস্থান নিয়ে তল্লাশি অভিযান পরিচালনা করছে কোস্টগার্ডের জাহাজ সিজিএস তৌহিদ।

এ ছাড়া কোস্টগার্ডের তিনটি মেটাল শার্ক, হাইস্পিড বোটও অভিযানে অংশ নিচ্ছে। তবে প্রতিকূল আবহাওয়ার কারণে সাগর উত্তাল থাকায় উদ্ধার অভিযান বিঘ্ন হচ্ছে।

বৃহস্পতিবার দুপুর পর্যন্ত নিখোঁজ পাইলট তাহমিদের কোনো সন্ধান না পাওয়ায় তার ভাগ্যে কী ঘটেছে, এখনো তা নিশ্চিত করে বলতে পারছে না নৌবাহিনী ও কোস্টগার্ড। উত্তাল সাগরের কারণে উদ্ধার অভিযান বিঘ্নিত হওয়ায় তাহমিদকে খুঁজে পাওয়ার ব্যাপারেও অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে।

উল্লেখ্য, সোমবার বেলা ১১টার দিকে চট্টগ্রামের পতেঙ্গায় বিমানবাহিনীর জহুরুল হক ঘাঁটি থেকে অভ্যন্তরীণ নিয়মিত উড্ডয়নের পর বিমানবাহিনীর প্রশিক্ষণ বিমান এফ-৭-এর সঙ্গে নিয়ন্ত্রণ কক্ষের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। পরে পরে দুপুর ১২টার দিকে বিমানটি বঙ্গোপসাগরে বিধ্বস্ত হওয়ার খবর পায় বিমানবাহিনী। এরপর উদ্ধার অভিযানে বিমানের ইঞ্জিন ও কিছু ধ্বংসাবশেষের সন্ধান পাওয়া গেলেও পাইলট তাহমিদের কোনো খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না।

নিখোঁজ পাইলট তাহমিদের গ্রামের বাড়ি চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলায়। তবে তারা সপরিবারে ঢাকায় বসবাস করেন। প্রাক্তন ব্যাংকার আবদুল কাদের চৌধুরীর তিন সন্তানের মধ্যে বড় সন্তান তাহমিদ। তার ছোট ভাই সেনাবাহিনীর বিএমএ লং কোর্সের প্রশিক্ষণার্থী এবং একমাত্র ছোট বোন এবার এসএসসি উত্তীর্ণ হয়ে কলেজে ভর্তির অপেক্ষায় রয়েছে।



মন্তব্য চালু নেই