আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের পূর্বাভাস

পাঁচ বছরের মধ্যে দেউলিয়া হতে পারে সৌদি আরব

সৌদি আরবের ৯০ শতাংশ আয় আসে তেল বিক্রি থেকে। তেলের দাম আশঙ্কাজনক হারে কমতে থাকায় দেশটি আর্থিক ঝুঁকির মুখে পড়েছে। দেশটির বিদ্যমান আর্থিক সম্পদ আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে শেষ হতে পারে। ফলে এ সময়ের মধ্যে দেশটির দেউলিয়া হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে বলে সাম্প্রতিক এক প্রতিবেদনে পূর্বাভাস করেছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)।

প্রতি বছর অক্টোবর মাসে বৈশ্বিক অর্থনৈতিক ও আর্থিক সমীক্ষা প্রতিবেদন প্রকাশ করে আইএমএফ। সেখানে বলা হয়েছে, সৌদি আরব ২০১৫ সালে ‘সাধারণ সরকারি সার্বিক আর্থিক ভারসাম্য’ সূচকে ২১ দশমিক ৬ শতাংশ নেতিবাচক অবস্থানে থাকবে। আর ২০১৬ সালে দেশটির আর্থিক ভারসাম্য ১৯ দশমিক ৪ শতাংশ নেতিবাচক হতে পারে। দেশটি ২০১৪ সালের চেয়ে ৩ দশমিক ৪ শতাংশ আর্থিক ভারসাম্য হারাবে এই দুই বছরে।

ব্রিটিশ সংবাদপত্র দ্য ইনডিপেনডেন্টের অনলাইনের এক প্রতিবেদনে আজ শনিবার বলা হয়েছে, বর্তমানে সৌদি আরবের বৈদেশিক মুদ্রার মজুদ দাঁড়িয়েছে ৬৫ হাজার ৪৫০ কোটি ডলার। তবে তা দ্রুতই ফুরিয়ে যাবে বলে আশঙ্কা করছে আইএমএফ।

কাতারভিত্তিক স্যাটেলাইট চ্যানেল আল জাজিরা গত বৃহস্পতিবার তাদের অনলাইনে এক প্রতিবেদনে বলেছে, সৌদি আরবের মোট আয়ের ৯০ শতাংশ আসে তেল বিক্রি থেকে। তবে দেশটির মুদ্রা সংস্থা আন্তর্জাতিক বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে সাত হাজার কোটি ডলার ঋণ নিয়েছে। তেলের দাম কমায় এরই মধ্যে দেশটির লোকসান হয়েছে সাত হাজার ৩০০ কোটি ডলার।

বাদশাহ সালমান বিন আবদুল আজিজের রাজ্যাভিষেক উদযাপন করতে গত বছর রাষ্ট্রীয় কোষাগার থেকে খরচ হয়েছে তিন হাজার ২০০ কোটি ডলার।

২০১৫ সালে সৌদি আরব প্রতিরক্ষা খাতে আট হাজার ৮০ কোটি ডলার বাজেট ধরেছে। আর এরই মধ্যে ইয়েমেনে হামলা চালিয়েছে দেশটি। ফলে এ খাতের খরচ সীমা বাইরে চলে যাবে বলে মনে করা হচ্ছে।

চলতি বছর সৌদি আরবের মোট দেশজ উৎপাদনের ২০ শতাংশের বেশি ঘাটতি পড়বে বলে মনে করছে আইএমএফ। সংস্থাটির মধ্যপ্রাচ্যের পরিচালক মাসুদ আহমেদ ইনডিপেনডেন্টের প্রতিবেদক অ্যাডাম লিল্যান্ডকে বলেন, তেলের দাম পড়তে থাকায় শুধু ২০১৫ সালে ৩৬ হাজার কোটি ডলারের অর্থনৈতিক ক্ষতি হবে।

তেলে দামে পতনপ্রবণতা অব্যাহত থাকবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। এ কারণে অন্যান্য তেল রপ্তানিকারক দেশের মতো সৌদি আরবকেও বাজেট সংকোচনের দিকেই যেতে হবে বলে আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।

সৌদি আরব বাজেট সংকোচন করলে তেল উৎপাদন ও বিপণনের সাথে জড়িত কোম্পানিগুলোও তাদের বিনিয়োগ কমাতে পারে বলে ধরাণা করা হচ্ছে।



মন্তব্য চালু নেই