পাঁচশ দিলেই এক রাত কাটাতে পারবেন এই হাজতে!

‘যাই একটু জেলে থেকে ঘুরে আসি’! বলা হয় অনেক ছিঁচকে অপরাধীই নিজেদের মধ্যে এই কথাটা বলে থাকে। বাইরের জগতে খাওয়া-পরা যোগাড় করতে কাজ করতে হয়, খাটতে হয়। কিন্তু জেলে তো আর সেসবের ভাবনা নেই। একবার ঢুকতে পারলেই বেশ কিছুদিন খাওয়া-থাকা বিনা পয়সায়! অন্তত অনেক অপরাধী এসব কথা বলে থাকেন বলে কথিত আছে।

নিয়মিত অপরাধীদের কাছে জেলে যাওয়াটা পান্তাভাতের মতো হলেও কারাগারের ভেতরে জীবন কত কঠোর, সেটা সাধারণ মানুষকে বোঝাতে এক অভিনব পরিকল্পনা নিয়েছে ভারতের তেলেঙ্গানা রাজ্য সরকার।

একটি প্রাচীন কারাগারকে তারা পর্যটন কেন্দ্রে পরিণত করেছে। সেখানে কেউ চাইলেই ৫০০ রুপি দিয়ে ২৪ ঘন্টা কাটিয়ে আসতে পারেন।

তেলেঙ্গানায় মেডাক শহরের এই কারাগারটি ২২০ বছরের পুরনো। হায়দ্রাবাদের নিজাম তৈরি করেছিলেন এই কারাগারটি। কারাগারটি সম্প্রতি সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে নতুন জায়গায়।
পুরনো জেলের একটা অংশে যেমন তৈরি হয়েছে জাদুঘর, অন্য একটি অংশে পর্যটকদের লক আপে রাখার ব্যবস্থা হয়েছে। নাম দেয়া হয়েছে ‘ফিল দ্যা জেল’ বা ‘জেলের অনুভূতি’।

তবে অন্য পর্যটন কেন্দ্র বা হোটেলে যেমন আরামে – বিলাসে থাকা যায়, এই জেলে কিন্তু কাটাতে হবে একদম কয়েদীদের মতই।

“জেলে ঢুকলে কয়েদীদের যেমন সাদা কালো ডোরা কাটা পোশাক পরিয়ে লক আপে ঢুকিয়ে রাখা হয়, এক্ষেত্রেও একই নিয়ম। জেল কোড অনুযায়ী সকালের চা, নাস্তা আর দুপুর- রাতের খাবার দেয়া হয়। যে খাবার আমাদের নতুন জেলের কয়েদীদের জন্য রান্না হয়, সেই খাবারই পর্যটকদেরও দেয়া হয়। মেঝেতে শোয়ার জন্য কম্বল থাকে। বাড়তি শুধু সেলের ভেতরে একটা ফ্যান – যেরকম ভিআইপি সেলে থাকে,” বলছিলেন তেলেঙ্গানার সংশোধনাগার বিভাগের মহানির্দেশক ভি কে সিং।

অন্যান্য জেলে যেমন বিকেল সাড়ে পাঁচটায় মাথা গুনতির পরে লক আপে ঢুকে যেতে হয়, এখানেও ব্যবস্থা সেরকমই। আবার ভোর বেলায় লক আপের দরজা খোলা হয়।

ভি কে সিং বলছিলেন, “এক তো এটা নতুন ধরনের রোমাঞ্চকর অভিজ্ঞতা। তা ছাড়াও জেলে থাকা কতটা কষ্টসাধ্য ব্যাপার, সেটা যাতে মানুষ বুঝতে পারে, সেটা জানানোও একটা উদ্দেশ্য। যদি এটা মানুষের মাথায় থাকে, তাহলে অপরাধ করার আগেই তারা সচেতন হবে যে জেলে গেলে কী কঠিন জীবন কাটাতে হয়।”

এই জেলে নারীরাও থাকতে পারেন। তবে সাধারণ জেলে যেমন পরিবারের সঙ্গে কয়েদীরা থাকতে পারেন না, এখানেও তেমনই নিয়ম।

সংশোধনাগারের মহানির্দেশক বলছিলেন অনেক পর্যটন এজেন্সি আর সাধারণ মানুষ এই ব্যাপারে খোঁজ খবর করছেন। অনেকে আবার ২৪ ঘন্টা এই কঠোর নিয়মের মধ্যে থাকতে হবে জেনে পিছিয়েও যাচ্ছেন! কে আর সাধ করে জেলে যেতে চায় বলেন?-বিবিসি



মন্তব্য চালু নেই